নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০১ জুলাই, ২০১৮
নির্বাচনের সময় যতই এগিয়ে আসছে ততই আওয়ামী লীগের উপর নানারকম চাপ বাড়ছে। আওয়ামী লীগের নেতারা মুখে যতই উচ্ছ্বাস আর আত্মতৃপ্তি দেখান, ভেতরে ভেতরে এক অজানা আশঙ্কা তাঁদের মধ্যে স্পষ্ট। টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার অহংকারের পাশাপাশি আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে উদ্বেগ কম না। আওয়ামী লীগ খুব ভালো করেই জানে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন সকল দেশের অংশগ্রহণে হয়, সে ব্যাপারে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। এই চাপ কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে নয়, ভারতও এখন আকারে ইঙ্গিতে ‘সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের কথা বলছে। আওয়ামী লীগের উপর সংলাপের চাপও বাড়ছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সংলাপের আহ্বান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খোলাখুলিভাবেই দিচ্ছে, আর ভারত দিচ্ছে গোপনে।
বাইরের চাপ ছাড়াও রয়েছে ভেতরের চাপ। বিএনপি যদি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তাহলে আওয়ামী লীগের সাজানো প্রশাসন কতটা আওয়ামী লীগের থাকবে, তা নিয়ে আওয়ামী লীগেরই অনেকে সন্দিহান। কারণ, দেয়ালে কান পাতলেই শোনা যায় প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জামাত শিবির এবং বিএনপি পন্থীরা ঘাপটি মেরে আছে। সুযোগ পেলেই তাঁরা মরণ ছোবল দেবে। এমনকি অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ আওয়ামী লীগের সেজে দখল করে আছে বিএনপি এবং জামাত পন্থীরা। বিএনপি নির্বাচনে গেলেই এদের মুখোশ খুলে যাবে। শুধু সিভিল প্রশাসন নয়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর ভূমিকাও কতটা নিরপেক্ষ এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে থাকবে তা নিয়েও অনেকের সংশয় রয়েছে। সংশয়, উদ্বেগ আর ফিসফাস আলোচনা এখন আওয়ামী লীগের অন্দরমহলে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সভাপতি ছাড়া সম্ভবত কেউই জানে না, এসব উত্তরণের কৌশল কি? এই চাপগুলো কীভাবে আওয়ামী লীগ মোকাবেলা করবে। আওয়ামী লীগের নেতারা যেন সব চিন্তা আর চাপ তুলে দিয়েছেন শেখ হাসিনার কাঁধে।
আওয়ামী লীগ কি শেষ পর্যন্ত বিএনপি ছাড়াই আরেকটি নির্বাচন করবে?
- ‘বুঝতে পারছি না কী হবে, নিশ্চয়ই নেত্রীর কাছে প্লান আছে।’
- বিএনপি কীভাবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে আসবে?
- ‘আসবে, আসবে, নেত্রীর কাছে ম্যাজিক আছে ‘
- বিএনপি নির্বাচনে এলে কি আওয়ামী লীগ পারবে?
- ‘নেত্রী আছে না, নিশ্চয়ই পারবে।’
এই সবই হলো বিভিন্ন পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথোপকথন। গতকাল গণভবনে বিশেষ বর্ধিত সভায় তৃণমূলের নেতাদের প্রশ্নগুলো করা হয়েছিল। তারা উত্তরগুলো এভাবেই দিয়েছেন। শুধু তৃণমূল নয় অনেক প্রেসিডিয়াম সদস্যই এভাবেই উত্তর দেন, দিচ্ছেন। আগামী নির্বাচনের কৌশল আওয়ামী লীগের কারও জানা নেই। আওয়ামী লীগের নেতারা জানেন না, কীভাবে দলটি তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসবে। তারা শুধু জানেন, তাদের একজন ‘রাষ্ট্রনায়ক’ আছেন। তিনি যেন সব পারেন। তাঁর কাছে জাদুর কাঠি আছে। কিংবা অসম্ভবকে তিনিই সম্ভব করতে পারেন। এজন্যই, আওয়ামী লীগের নেতাদের একটাই উত্তর ‘নেত্রী সব জানেন।’
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।