নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৩ জুলাই, ২০১৮
আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণে সবচেয়ে শক্তিশালী ফোরাম হলো প্রেসিডিয়াম। দলের সভাপতির পরই এর স্থান। প্রেসিডিয়ামের পরই হলো কার্যনির্বাহী সংসদ ও সম্পাদকমণ্ডলী। অবস্থান যে পর্যায়ের হোক সম্পাকদমণ্ডলী এখন আওয়ামী লীগের এক সান্ত্বনা ক্লাবে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগে গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই, সম্পাদকমণ্ডলীর তেমন কোনো কাজ নেই। সাংগঠনিক কোনো কাজও নেই।
দলের সভাপতিকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা, পরামর্শ দেওয়া এই ধারণা থেকেই আওয়ামী লীগে উপদেষ্টামণ্ডলীর আবির্ভাব। প্রথমদিকে এর যাত্রাও শুরু হয় এই ধারণার বাস্তবায়নেই। আওয়ামী লীগে গুণীজন বলে পরিচিত কিন্তু রাজনীতির মাঠে কিছুটা নীরব এমন নেতাদের নিয়েই গঠিত হয় উপদেষ্টামণ্ডলী। কিন্তু সংখ্যাটি এখন বাড়তে বাড়তে এখন ৩৯ এ দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী উপদেষ্টামণ্ডলীর তালিকায় আছেন: (প্রকাশিত তালিকার ক্রম অনুযায়ী)
১. ড. এস এ মালেক
২. আবুল মাল আব্দুল মুহিত
৩. আমীর হোসেন আমু
৪. তোফায়েল আহমেদ
৫. অ্যাডভোকেট রহমত আলী
৬. এইচ. টি. ইমাম
৭. ড. মশিউর রহমান
৮. প্রফেসর ড. আলাউদ্দিন আহমেদ
৯. অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন
১০. রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু
১১. ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর
১২. ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ
১৩. অ্যাডভোকেট সৈয়দ আবু নাসের
১৪. সতীশ চন্দ্র রায়
১৫. ড. আবদুল খালেক
১৬. ড. রুহুল হক
১৭. কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ
১৮. অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান
১৯. ড. অনুপম সেন
২০. ড. হামিদা বানু
২১. ড. মো. হোসাইন মনসুর
২২. প্রফেসর সুলতান শাফি
২৩. এএফএম ফখরুল ইসলাম মুন্সি
২৪. রাষ্ট্রদূত জমির
২৫. গোলাম মাওলা নকশাবাদি
২৬. মির্জা এমএ জলিল
২৭. ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া
২৮. মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ মালিক
২৯. ড. সাইদুর রহমান খান
৩০. ড. গওহর রিজভী
৩১. প্রফেসর খন্দকার বজলুল হক
৩২. মো. রাশিদুল আলম
৩৩. স্থপতি ইয়াফেস ওসমান
৩৪. কাজী সিরাজুল ইসলাম
৩৫. আলহাজ মকবুল হোসেন
৩৬. চৌধুরী খালেকুজ্জামান
৩৭. অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার
৩৮. মোজাফ্ফরার হোসেন পল্টু
৩৯. মুকুল বোস
(উল্লেখ্য, তালিকায় সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত ও আলহাজ মো. ইসহাক মিয়ার নামও আছে। তাদের দুজনেরই গত বছর মৃত্যু হয়েছে)
তালিকাটি একবার দেখলেই বোঝা যায় সমস্যা কোথায়। এখানে ড. গওহর রিজভী, এইচ. টি. ইমামের মতো গুণীজন যেমন আছেন, তেমনি আলহাজ মকবুল থেকে শুরু করে মুকুল বোস, মোজাফ্ফর হোসেন পল্টুর মতো আওয়ামী লীগের প্রায় নিষ্ক্রিয় অনেক নেতাও আছেন। আবার আমীর হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদের মতো জাঁদরেল নেতাদেরও ঠাঁই হয়েছে উপদেষ্টামণ্ডলীতে। উপদেষ্টামণ্ডলীতে নেওয়ার ক্ষেত্রে যে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য দেখা হবে তার কোনো ব্যাপারই নেই।
আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, বিষয়টি এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে যাঁকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাখা হচ্ছে না বা রাখা যাচ্ছে না তাঁকেই সান্ত্বনা হিসেবেই নেওয়া হচ্ছে উপদেষ্টামণ্ডলীতে। কিন্তু এর ফলে উপদেষ্টামণ্ডলী এর তাৎপর্য হারাতে বসেছে। যেই উদ্দেশ্য ও গাম্ভীর্যতা নিয়ে উপদেষ্টামণ্ডলী গঠিত হয়েছে সেটিই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, আলহাজ মকবুল, মুকুল বোসের মতো নেতাদের সঙ্গে তোফায়েল আহমেদ, আমুর মতো নেতাদের এক কাতারে রাখা যায় না। একইভাবে গওহর রিজভীর মতো গুণীজনের সঙ্গে রাখা যায় না মোজাফ্ফর হোসেন পল্টুর মতো নেতাদের। আর এই কারণেই গাম্ভীর্যতা নষ্ট হচ্ছে উপদেষ্টামণ্ডলীর। উপদেষ্টামণ্ডলী অনেকের সঙ্গে কেউ কেউ বসতেও ইতস্তত বোধ করেন বলে জানা গেছে।
একসময় মনে করা হতো উপদেষ্টামণ্ডলীর কাজই হলো সভাপতি ও দলকে পরামর্শ দেওয়া। তাই এখানে স্থানই হবে উচ্চশিক্ষিত, নিজ ক্ষেত্রে উজ্জ্বল ও সফল ব্যক্তিদের নিয়ে। কিন্তু এই ধারা অব্যাহত রাখা হয়নি। অনেকের মতে, উপদেষ্টামণ্ডলীর তালিকা দেখে ড. মশিউর রহমান ও ড. গওহর রিজভীর মতো ব্যক্তিরা নিশ্চয়ই উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন।
বর্তমানে উপদেষ্টামণ্ডলী বলতে আওয়ামী লীগের স্থানটি একটি সান্ত্বনা পুরস্কারের জায়গা বানিয়ে ফেলা হয়েছে। যাঁরা রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন তাঁদের পুনর্বাসনের স্থান এখন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলী। রাজনীতিতে গুরুত্বহীনদের অব্যাহত আবাসনের কারণে অনেকে আড়ালে আবডালে উপদেষ্টামণ্ডলীকে রাজনৈতিক পুনর্বাসন কেন্দ্রই বলে ফেলেন।
আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক পর্যায়ের অনেকে মনে করেন, উপদেষ্টামণ্ডলী চমৎকার ভাবেই কাজ করতে পারতো যদি, সেখানে প্রকৃতভাবেই উপদেষ্টার যোগ্যতাসম্পন্নদেরই শুধু স্থান দেওয়া হতো। কিন্তু তা না হওয়ায় উপদেষ্টামণ্ডলীকে রাজনৈতিক তামাশায় পরিণত করা হয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।