নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০৬ পিএম, ২৯ জুলাই, ২০১৮
আগামীকাল রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটিতে একযোগে নির্বাচত অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় নির্বাচনে আগে এই তিন সিটি নির্বাচন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশের বিদেশি পর্যবেক্ষকরা। ইতিমধ্যে তাঁদের প্রতিনিধিরা তিন সিটিতে চলে গিয়েছে। এছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন এনজিও, প্রতিনিধিকে দায়িত্ব দিয়েছেন সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণের। তিন সিটির এই গভীর পর্যবেক্ষণ আতশী কাঁচ দিয়ে পর্যবেক্ষণের সঙ্গেই তুলনা করছেন অনেকেই।
সাধারণত দেখা যায়, বিদেশি পর্যবেক্ষকরা জাতীয় নির্বাচনে এমন গভীর পর্যবেক্ষণ করে থাকে। তবে স্থানীয় সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে এমন গভীর পর্যবেক্ষণ একটি নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিএনপি ও কিছু গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে ভোট কারচুপির অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে কারচুপির কোনো দৃশ্যমান প্রমাণ কেউ উপস্থাপন করতে পারে নাই। মার্কিন দূতাবাসও মনে করছে যে, খুলনা ও গাজীপুরের ভোটে কারচুপি হয়েছে এবং তাঁরা এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিও প্রদান করেছে। মার্কিন দূতাবাস বিবৃতি প্রদান করার পর, সরকারের পক্ষ থেকে যখন ভোট কারচুপির সুস্পষ্ট প্রমাণ চাওয়া হয় তাঁদের কাছে। তখন মার্কিন দূতাবাস এই দুই সিটিতে ভোট কারচুপির কোনো প্রমাণ দিতে পারে নাই।
সেই কারণে আগামীকালের সিটি নির্বাচনে ভোট কারচুপির প্রমাণ খুঁজছে উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্রগুলো। তাদের মতে, তিন সিটি নির্বাচন সরকারের জন্য এসিড টেস্ট, এই তিন সিটি নির্বাচনে সরকার কতটুকু নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারে, সেটার উপর নির্ভর করছে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনেক বিষয়।
মার্কিন দূতাবাস আগামীকালের সিটি নির্বাচনের জন্য মনিটরিং সেল বসিয়েছে। তিন সিটি করপোরেশনের মধ্যে দুটিতে তাঁদের নিজস্ব পর্যবেক্ষদেরকে পাঠিয়েছে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য। ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিটা সিটিতে আলাদাভাবে মনিটরিং করছে। যুক্তরাজ্য তিন সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায় প্রায়, পাঁচশর অধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষক তিন সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে এই স্থানীয় নির্বাচনে এমন নজিরবিহীন হস্তক্ষেপ ও পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে যে, ‘বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলকে সহানুভূতি দেখানোর জন্য কি এমন করা হচ্ছে? নাকি বিশেষ কোন রাজনৈতিক দলকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানোর জন্য এমনটা করা হচ্ছে?’
আগামীকাল অনুষ্ঠিত তিন সিটি নির্বাচনে উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো যদি ভোট কারচুপি বা অনিয়মের কোনো প্রমাণ না করতে পারে, তাহলে সবচেয়ে ইতিবাচক যে ঘটনা ঘটবে তা হলো, নির্বাচন কালীন সময়ে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের দাবির চির মৃত্যু ঘটবে। কারণ তখন এই দাবির আর কোনো ভিত্তি থাকবে না। পাশাপাশি সরকারও জাতীয় নির্বাচনের আগে এই তিন সিটি নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সুতারাং পর্যবেক্ষণের দিক থেকে এই তিন সিটি নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আবহ পেয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।