নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ০২ অগাস্ট, ২০১৮
বেশ কয়েক বছর ধরে ছাত্রলীগ বলতেই সাধারণ মানুষের চোখে ভেসে ওঠে এমন একটি ছাত্র সংগঠন যারা সর্বক্ষণ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকে। কিন্তু এর পেছনে কারণ কী? ছাত্রলীগ কি আসলেই হানাহানি, মারামারি ছাড়া অন্য কোনো কাজ করে না? নির্দিষ্ট কিছু গণমাধ্যমের সংবাদ পরিবেশনের ধরন দেখলে এমনটাই মনে হয়। এই গণমাধ্যমগুলোর যেন ছাত্রলীগের ওপর আজন্ম আক্রোশ আছে৷ খুঁজেপেতে তাঁরা কেবল ছাত্রলীগের নেতিবাচক সংবাদগুলোই প্রকাশ করে। এই সংবাদগুলো দেখলে যে কারোরই মনে হবে, ছাত্রলীগের ছেলেমেয়েরা যেন ভয়ংকর, নৃশংস কোনো প্রাণি, যাদের দ্বারা ভালো কোনো কাজ সম্ভব না। যাদেরকে অবশ্যই এবং অবশ্যই ঘৃণা করতে হবে। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মাঝেমাঝে কিছু নিন্দনীয় কাজ করেন। কিন্তু নির্দিষ্ট গণমাধ্যমগুলোর প্রপাগান্ডার ছাত্রলীগের বাইরেও অন্য একটি ছাত্রলীগ আছে যার নেতাকর্মীরা অত্যন্ত মেধাবী, সজ্জন, দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ এবং রাজনীতি ও রাজনীতির বাইরের ক্যারিয়ারে সফল।
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যে ছেলেমেয়েরা ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয় তাঁদের অনেকে পরবর্তীতেও রাজনীতিতে থেকে যায়, অনেকে থাকে না। যারা থাকে না তাঁরা কিন্তু ব্যর্থ ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশ জীবন কাটান না, যেটা মিডিয়ার প্রচার-প্রচারণা ধরন দেখে মনে হয়। বিসিএস ক্যাডার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা চিকিৎসা, প্রকৌশল, ওকালতি পেশার মতো সম্মানজনক পেশায় জড়িত আছেন তাঁরা। এছাড়া ছাত্রলীগে আছেন সৃজনশীল সব মানুষ; যারা কবি, শিল্পী, লেখক। এই তালিকাটা এতটাই লম্বা যে, ছাত্রলীগ মাত্রই সন্ত্রাসী, মিডিয়ার এমন প্রচারণাকে তা হাস্যকর প্রমাণিত করে ছাড়ে।
উদাহরণ হিসেবে বেশ কয়েকজনের কথা বলা যায়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইমাউল হক সরকার টিটু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইমাদুল হক সোহাগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন মাহী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মো. আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান রাফি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আওয়াল কবির জয় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ সরকার মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি মশিউর রহমান বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুরের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নিউরোসার্জন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া কর্মরত আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার জন্য যে বিভাগে ভালো ফলাফল করা জরুরি একথা সর্বজন বিদিত। তাই ছাত্রলীগের ছেলেমেয়েরা পড়ালেখ না করে কেবল গুন্ডামি-মাস্তানি করে এই শিক্ষকেরাই তা ভুল প্রমাণ করেন। বলাই বাহুল্য, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে ছাত্রলীগের যেসব নেতাকর্মী কর্মরত আছেন এই তালিকাটি তার ছোট্ট একটি উদাহরণ মাত্র।
শুধু শিক্ষকতা পেশাতেই নয়, দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে কর্মরত থেকে দেশ সেবায় অবদান রেখে আসছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফএইচ হল ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কবির বিন আনোয়ার বর্তমানে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসীন হলের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল মালেক তথ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাবির স্যার.এ.এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ নুরুল ইসলাম বাংলাদেশ পুলিশের এসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অনেকে বলতে পারেন উনারা ছাত্রলীগের সোনালী সময়ের ফসল, বর্তমান সময়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বইপত্রের ধারেকাছে ঘেঁষে না। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েকটি বিসিএসের ফলাফলের দিকে তাকালে এই তথ্যটিও ভুল প্রমাণিত হয়। ছাত্রলীগের সাবেক উপবিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল রিফাত ৩৭তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে, জগন্নাথ হলের দেবজিৎ পাল পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত। শিবির ক্যাডারদের নৃশংস হামলায় হারিয়ে সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক হাবিবও ৩৭তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।
এছাড়া ঢাবির এফ এইচ হল ছাত্রলীগ সাবেক সাংগঠনিক -সম্পাদক জায়েদ ইমরুল ৩৬তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে, একই হলের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক সুমন সাইফ ৩৬ তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মামুনুল হক ৩৬ তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত।
জেনারেল ক্যাডারের পাশাপাশি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা টেকনিক্যাল ক্যাডারেও নিজ যোগ্যতায় জায়গা করে নিচ্ছেন। পাবনা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক মুহাম্মদ সায়েম শাহরিয়ার, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের উপ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আসাদ আদনান উপল এবং একই মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শুভজিৎ সরকার ৩৭ তম বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত। বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোকাম্মেল ৩৬ তম বিসিএসে আইসিটি ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত।
শুধু বিগত দুটি বিসিএসই নয়, প্রতিটি বিসিএসেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে থাকেন।
এছাড়া বিভিন্ন সরকারি, আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং স্বনামধ্যন্য বহুজাতিক সংস্থায়ও কাজ করে নিজেদের মেধার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বিপ্লব বড়ুয়া একজন সফল আইনজীবী। আরেক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ড.মঈনুল ইসলাম একজন একুশে পদক প্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ। বস্তুত,
স্বাধীনতার পর থেকে এই পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করা মেধাবী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের তালিকা যদি তৈরি করা হয় তবে তাকে একটি প্রতিবেদনের সীমিত পরিসরের জায়গা করে দেওয়া সম্ভব হবে না।
শুধু কি চাকরি-বাকরি! ছাত্রলীগ সৃজনশীলদের প্রতিভাতেও সমৃদ্ধ। প্রয়াত মাহাবুবুল হক শাকিলের কবিতার বই দারুণ বিক্রি হতো। এই কবিও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক ডাল্টন সৌভাত হীরা বর্তমান প্রজন্মের কবি হিসেবে বেশ খ্যাতিমান। সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা শেখ আসমান চিত্রশিল্পী হিসেবে সুনাম কুঁড়িয়েছেন।
কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মেধার কথা কখনো সংবাদমাধ্যমে আসে না। এত হাজার হাজার মেধাবী নেতাকর্মীর সাফল্যের ভিড়ে কেবল দুয়েকজন নেতাকর্মী যারা সংগঠনের শৃঙ্খলা ও দেশের আইন ভঙ্গ করে তাঁদের কথাই পত্রিকায় ফলাও করে ছাপা হয়। ছাত্রলীগের প্রতি অধিকাংশ গণধ্যমের এই বিমাতাসুলভ আচরণ কিন্তু কাকতালীয় নয়, এটি দেশবিরোধী পরিকল্পিত ক্যাম্পেইনের অংশ।
একটা সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে এক কাতারে এনে দেখানোর চেষ্টা করা হত। অথচ স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগের কর্ণধার শেখ হাসিনার সঙ্গে জামাত-শিবির নির্ভর বিএনপি চেয়ারপারসনের তুলনাই হতে পারে না। কিন্তু তারপরও কিছু পত্রপত্রিকা তাঁদের দুজনকে বাংলাদেশের জন্য সমান ক্ষতিকর হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করত এবং এখনো করে চলেছে। গণমাধ্যমগুলোর এধরনের কর্মকাণ্ডের পেছনে মূল কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের বিরাজনীতিকরণের স্বপ্ন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে একটি তৃতীয় শক্তির উত্থান ঘটাতে চায় তাঁরা। আর বাংলাদেশের বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে প্রমাণ করতে চায় এই গোষ্ঠীটি। জনমনে ছাত্রলীগ নিয়ে অলীক ভীতি ও সীমাহীন ঘৃণা তৈরি হোক এটাই তাঁদের চাওয়া। এমনটা করা সম্ভব হলে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রক্ষাকবচস্বরূপ ছাত্রলীগকে অসম্মানিত করা ও তাঁদের মনোবল ভেঙ্গে দেওয়া সম্ভব হবে। বৃহৎ রাজনৈতিক পরিসরে যার সুফল ভোগ করবে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ দেশের স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিগুলো।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।