নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৫ অগাস্ট, ২০১৮
চলমান নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে একদফা আন্দোলনে রূপান্তরিত করার এক নীলনকশা গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। এই নীলনকশার বাস্তবায়ন করতেই শনিবার গুজব ছড়িয়ে শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আর সেখান থেকেই আওয়ামী লীগের ধানমণ্ডি কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। আর এই পুরো নীলনকশার প্রণেতা হলেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। বাংলাদেশে এই নীলনকশা বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে বিএনপি এবং জামাত যৌথ ভাবে কাজ করে।
গোয়েন্দা সূত্র প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, দেশের বাইরে থেকে পুরানা বিভিন্ন ছবি এবং ভিডিও নিখুঁত ভাবে এডিট করে তা ২৯টি বিভিন্ন ভুয়া ফেসবুকে এবং অনলাইনে ছাড়া হয়। নীলনকশা অনুযায়ী, জিগাতলায় শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে গুজব ছড়ানোর পরিকল্পনা ছিল। সে অনুযায়ী ছাত্রদলের অপরিচিত এবং প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা সিটি কলেজের কাছে অবস্থানরত শিক্ষার্থীর উপর হামলা করে। এই হামলার ১০ মিনিটের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পূর্বের বানানো ভিডিওগুলো আপলোড করা হয়।
বিএনপি এবং জামাতের কিছু কর্মী দ্রুত এগুলো ছড়িয়ে দেয়। এসবকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য কয়েকজন যেন সেলিব্রেটিকেও উস্কে দেওয়া হয় অথবা ভাড়া করা হয়।
পরিকল্পনা ছিল, এই ভিডিও দেখে সাধারণ মানুষ এবং সারাদেশের জনগণ উত্তেজিত হবে। তাৎক্ষণিক ভাবে, তাঁরা রাস্তায় নেমে আসবে। আওয়ামী লীগের কার্যালয়গুলোতে আগুন ধরিয়ে দেবে। নীল নকশা অনুযায়ী এর পরপরই শাহবাগ থেকে সরকারের পতনের লক্ষ্যে একদফা আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি সংক্রান্ত ঘোষণাপত্রও প্রস্তুত করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণার কথা ছিল। আর এই নীল নকশা বাস্তবায়নের জন্য অর্থের যোগান দিয়েছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। নীল নকশার আংশিক বাস্তবায়নের পর সরকারের ত্বরিৎ পদক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতায় দেশ একটি বড় বিপর্যয় থেকে রক্ষা পায়। গুজব শুনে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় টেলিফোনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ধৈর্য্য ধরার এবং শান্ত থাকার পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রীকে বলা হয়, আমাদের লোকজন আহত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী তারপরও ধৈর্য্য ধরার নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনার নির্দেশেই ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দ শাহবাগে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে। ২৫ জন শিক্ষার্থীর একটি দলকে ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের ডেকে নিয়ে ঘুরিয়ে দেখানো হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়।
গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, পুরাতন, বিদেশি নানা ছবি এবং ভিডিও এখনও ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে। জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টিই এর মূল উদ্দেশ্য। গোয়েন্দা সূত্রে বলা হচ্ছে, সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র আপাতত: ভেস্তে গেলেও এখনও তাঁরা তাদের তৎপরতা অব্যাহত রাখছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।