নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৬ অগাস্ট, ২০১৮
নীলনকশা বাস্তবায়িত হলে ১৫ আগস্টের মধ্যে সরকারের পতন ঘটতো। আর ঐ দিনই লন্ডন থেকে দেশে ফিরতেন তারেক জিয়া। নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের মোড়কে সরকার পতনের ষড়যন্ত্র এমনই ছক আঁকা হয়েছিল। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কথা বলে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ৪ আগস্ট শনিবার ছিল আন্দোলনের টার্নিং পয়েন্ট। আন্দোলনকে সশস্ত্র রূপ দিতে ঐ দিন অন্তত তিন হাজার সশস্ত্র ক্যাডার ঢাকায় নামানো হয়েছিল। ধানমণ্ডি দুই নম্বর সড়কে সংঘাত সৃষ্টিও করা হয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গুজব ছড়িয়ে লোকজনকে বিক্ষুব্ধ করে তোলার কথা ছিল। বিক্ষুব্ধ মানুষজনকে ধানমণ্ডি ৩ নম্বর সড়কে আওয়ামী লীগ কার্যালয় আক্রমণে প্ররোচিত করা হয়েছিল। ধারণা করা হয়েছিল, ভেতর শিক্ষার্থীদের ধরে আটকে রাখা হয়েছে, মেয়েদের নির্যাতন করা হয়েছে এমন গুজব ছড়িয়ে আওয়ামী লীগ অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। এরপরই সারা ঢাকায় পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। এ সময় আরও ১০ হাজার বিএনপি জামাতের ক্যাডার রাস্তায় নামবে এবং তাণ্ডব সৃষ্টি করবে। ৪ আগস্ট থেকে রাজপথ দখলে রেখে সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার অবস্থানের কর্মসূচি তৈরিই করে রেখেছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। লন্ডনে পলাতক দণ্ডিত তারেক জিয়ার একটি বক্তৃতাও প্রস্তুত করা হয়েছিল। তারেক বিএনপি নেতাদের জানিয়েছিলেন যে, ১০ দিনের মধ্যেই সরকারের পতন ঘটানো হবে। পরিকল্পনা ছিল, রাজপথে জ্বালাও পোড়াও এবং গণ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দাতা দেশ একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের জন্য চাপ দেবে। আর এরকম একটি সরকারের প্রধান হবেন ড. কামাল হোসেন। সে লক্ষ্যেই মোহাম্মদপুরে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বাড়িতে বৈঠকও হয়েছিল। একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তির শর্তে ড. কামালের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দিতে রাজি ছিল বিএনপি। ৬ আগস্ট নাগরিক সমাজের প্রেসক্লাবের সভায় ‘চলমান পরিস্থিতিতে’ একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দাবি উত্থাপনের কথা ছিল। কিন্তু, এই নীল নকশা বেশিদূর এগুতে পারল না । গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, কিছু মানুষ বিশ্বাস করলেও অধিকাংশ মানুষই সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড করা পুরোনো, বিদেশি এবং সম্পাদিত ছবি ও ভিডিও গুলো বিশ্বাস করেনি। অনেকে উত্তেজিত হলেও খোঁজখবর নিয়ে আশ্বস্ত হন।
গোয়েন্দা সংস্থা গুলোর মতে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সবচেয়ে ধৈর্য্যের পরিচয় দেয়। তাদের ওপর হামলা হলেও তাঁরা তার পাল্টা জবাব দেয়নি। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ৪ আগস্ট অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করে। ফলে, নীল নকশার বাস্তবায়ন হয়নি। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ৫ আগস্ট রোববারও আবার আওয়ামী লীগ কার্যালয় আক্রমণ করার পরিকল্পনা ছিল। ঐ দিন শাহবাগে জড়ো হওয়া অধিকাংশই ছিল ছাত্রদল এবং শিবিরের ক্যাডার। গোয়েন্দারা বলছে, পুরো ব্লু প্রিন্ট তাঁরা তদন্ত করছে, শিগগিরই উন্মোচন করবে। এই নীল নকশা যে তারেক জিয়া এবং বিএনপির, তাঁর পক্ষে বেশ কিছু প্রমাণও তাদের হাতে এসেছে। সংস্থা গুলোর মতে, এজন্যই তাঁরা ঈদের পর গণ বিস্ফোরণের কথা বারবার বলছিলেন।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।