নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৪ অগাস্ট, ২০১৮
ঈদের পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার বেশ কর্মচঞ্চল ছিলেন জাতীয় ঐক্য নিয়ে কাজ করা গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেন এবং বিকল্প ধারা বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট বি. চৌধুরী। পৃথক পৃথক দুটি বৈঠকে ভারতীয় দূতাবাসের দুই কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন তাঁরা। ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথমে বৈঠক করেছেন বি. চৌধুরী। গতকাল সন্ধ্যায় বারিধারায় বি. চৌধুরীর বাসভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আর গতকাল রাতে গুলশানের একটি বাড়িতে দুই দূতাবাস কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে বসেন ড. কামাল। দুজনই তাঁদের ঐক্য প্রক্রিয়া ও তৃতীয় শক্তির ব্যাপারে ভারতীয় দূতাবাস কর্মকর্তাদের অবহিত করেন এবং এ ব্যাপারে ভারতের সহায়তা চান। তবে গতকাল ভারতীয় দূতাবাস কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে তাঁদের কিছুই জানানো হয়নি।
নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, ভারতের প্রথম কথা হচ্ছে, বিএনপির প্রতি তাদের কোনো সমর্থন কিংবা সহানুভূতি নেই। বিএনপি নির্বাচনে আসুক না আসুক সেটা নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যাথাও নেই। কিন্তু শক্তিশালী একটা আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকুক, এটাও ভারত চায় না। তারা চায় বাংলাদেশে দুর্বল সরকার ক্ষমতায় থাকুক। এ কারণেই তৃতীয় শক্তির উত্থানকে পুরোপুরি না করছে না ভারত। বরং তৃতীয় শক্তির ব্যাপারে দেশটির মনোভাব অনেকটাই নমনীয়। কারণ ভারত মনে করে, আওয়ামী লীগ পরপর দুই মেয়াদে ক্ষমতায় রয়েছে। এই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়েই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো হয়েছে, অনেকগুলো অমীমাংসীত বিষয় নিয়ে সমস্যার সমাধান হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয়টি হচ্ছে সীমান্ত অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তৎপরতা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে, যা ভারতের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন দুই ক্ষেত্রেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু তারপরও ভারত এ অঞ্চলে দুর্বল সরকার দেখতে চায়, যে সরকার ভারতের ওপর নির্ভরশীল থাকবে। এ জন্যই তারা তৃতীয় শক্তির বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে।
অপর একটি সূত্র বলছে, তৃতীয় শক্তির যদি উত্থান হয়, তবে বিএনপি যে বেশি মাত্রায় জঙ্গি এবং জামাত ঘেঁষা, সেখান থেকে তাদের সরিয়ে আনা যাবে বা বিরোধ সৃষ্টি হবে। বিএনপির মধ্যে যদি একটা ভাঙ্গন ধরিয়ে নতুন একটি ধর্ম নিরপেক্ষ ধারা তৈরি করা, যারা মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বাস করবে, বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বাস করবে এবং ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবে। এমন একটি শক্তির উত্থান হলে বিএনপি এমনিতেই ধীরে ধীরে হারিয়ে যাবে। একই সঙ্গে বিএনপির মধ্যে যারা সুস্থ চিন্তার লোক আছে তারা জামাত এবং জঙ্গিবাদের ধারা থেকে বের হয়ে নতুন ধারায় চলে আসবে। এই ধারণা থেকেই ভারত একটি তৃতীয় শক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে।
একটি সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগকে চাপে রাখার জন্য ভারত তৃতীয় শক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। অপর একটি সূত্র বলছে, বিএনপিকে ক্রমাগত ক্ষীণকায়, খর্বাকৃতি কিংবা নিঃশেষ করে ফেলতেই জন্য তৃতীয় শক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। তৃতীয় শক্তি যখন পরিণত হবে তখন নিঃসন্দেহেই বিএনপির একটি বড় অংশ সেখানে যোগ দেবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত খুব সুস্পষ্টভাবেই বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও জামাতবিরোধী অবস্থান দেখতে চায়। একারণে বিএনপির সঙ্গে এর আগে ভারতের যতগুলো মিটিং হয়েছে সবগুলোতেই তারা বারবারই বলেছে বিএনপি যেন জামাত থেকে বেরিয়ে আসে। কিন্তু তারা যখন জামাত ত্যাগ করছে না, তখন তৃতীয় শক্তিকে সমর্থন দিচ্ছে তারা।
এর আগেও, ওয়ান ইলেভেন আনার পক্ষে ভারতের স্পষ্ট ভূমিকা ছিল বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এ লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করেছে তারা। তখনো বাংলাদেশে একটি তৃতীয় শক্তির আকাঙ্ক্ষা ভারতের মধ্যে ছিল। তারা মনে করে, বাংলাদেশের রাজনীতির একটি পক্ষ আওয়ামী লীগ উদারপন্থী, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক এবং অপর পক্ষ দক্ষিণপন্থার বিএনপির বাইরে একটি মধ্যপন্থার বিকাশ হওয়া উচিৎ। সেই আকাঙ্ক্ষা থেকেই ভারত তৃতীয় শক্তিকে সমর্থন করছে কিনা সেটা বোঝার জন্যও আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।