নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপির ৪০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। দলটির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়াউর রহমান একবার বলেছিলেন, ‘আই উইল মেইক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর দ্য পলিটিশিয়ান।’ অর্থ্যাৎ ‘আমি রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতিকে কঠিন করে তুলবো।’ কিন্তু কালের কী অদ্ভুত বিচার। প্রতিষ্ঠার ৪০ তম বার্ষিকীতে এসে বিএনপি দেখতে পাচ্ছে, অন্যদের জন্য রাজনীতি কঠিন করতে গিয়ে তাঁদের নিজেদের জন্যই রাজনীতিটা এখন কঠিন হয়ে গেছে। নিজেদের রাজনৈতিক ইতিহাসে এত সঙ্কটময় কাল বিএনপির জন্য আর আসেনি। এই সঙ্কটের জন্য বিএনপির ১০টা ভুল সিদ্ধান্তকে দায়ী করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।
১। জিয়াউর রহমান যখন বিএনপি গঠন করেন তখন তিনি জামায়াতে ইসলামী, স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। বিএনপির প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শাহ আজিজুর রহমান। এই শাহ আজিজ ছিলেন একজন স্বীকৃত রাজাকার। এই থেকেই স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে জিয়ার দহরম-মহরম কেমন তা বোঝা যায়। জিয়াউর রহমান জামাতকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রচিত যে সংবিধান সে সংবিধান কাটাছেড়া করে ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র বাদ দিয়েছিলেন এবং গোলাম আযমকে দেশে ফিরিয়ে এনেছিলেন। এসব কর্মকাণ্ডের ফলে প্রথমেই স্বাধীনতা বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তির পৃষ্ঠপোষক দল হিসেবে এই দলটির একটি চরিত্র দাঁড়িয়ে যায়। স্বাধীনতা বিরোধী রাজনীতির যে ধারা বিএনপি চালু করেছিল, বিএনপিকে আজকে তার মূল্য দিতে হচ্ছে।
২। বিএনপি বাংলাদেশে টাকা দিয়ে কেনাবেচার রাজনীতি চালু করে। দল কেনাবেচা, দল ভাঙা, সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সাহায্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ভেঙে নিজেদের দল ভারী করার ধারার প্রবর্তন করে বিএনপি। আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিএনপির এই কর্মকাণ্ডের ভূক্তভোগী হয়। টাকা দিয়ে আদর্শ কেনাবেচা করে দল গঠন করার মূল্য এখন বিএনপিকে দিতে হচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
৩। বিএনপির রাজনীতির আরেকটি বড় ভুল ছিল ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে সমর্থন করা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি থেকে রক্ষা করার জন্য তৎকালীন রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ এই ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ জারি করেন। মোশতাক অধ্যাদেশ জারি করলেও জিয়াউর রহমানই ছিলেন তখন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। কিন্তু উনি এই অধ্যাদেশ বাতিল করেননি। ওই সময় যদি জিয়া ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করতেন তাহলে বিএনপি রাজনৈতিক আদর্শের একটি উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারতো। কিন্তু তা না করে জিয়া কর্নেল ফারুক, কর্নেল রশিদের মতো বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করলেন, পৃষ্ঠপোষকতা দিলেন। এর মাধ্যমে বিএনপি নিজেদের পচাত্তরের খুনিদের রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রমাণ করলো। ওই সময়টাতে রাজনৈতিক বিভাজনের যে ধারা বিএনপি সূচনা করেছিল তার প্রতিফল এখন তারা ভোগ করছে।
৪। বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি কলুষিত করার দায়টিও নিতে হবে বিএনপিকে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হিজবুল বাহার নামক একটি জাহাজে শিক্ষার্থীদের নিয়ে নিয়ে ভ্রমণে যেতেন। সেই ভ্রমণগুলোতেই শিক্ষার্থীদের ব্রেইন ওয়াশ করে বিএনপির ভ্রষ্ট আদর্শে তাদের দীক্ষা দেওয়া হতো। গোলাম ফারুক অভি, নীরুর মতো অনেক মেধাবী ছাত্র এই হিজবুল বাহারের বলি। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, আদর্শের বদলে অর্থ দিয়ে রাজনীতি করার ধারা শুরু করেছিল বিএনপি। রাজনীতিতে অস্ত্র, পেশীশক্তি, কালো টাকার ব্যবহারের মাধ্যমে রাজনীতিকে কলুষিত করার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছিল বিএনপি আজকে তার মূল্যই বিএনপিকে দিতে হচ্ছে। দলের ক্রান্তিকালীন সময়ে যে বিএনপি আন্দোলন করতে পারছে না তার কারণ তাদের কোনো ত্যাগী, আদর্শিক কর্মী নেই। একটি রাজনৈতিক দলের যদি কোনো আদর্শ না থাকে তবে শুধু টাকা পয়সা দিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনা করা যায় না। নিজেদের আদর্শহীন রাজনীতির কারণেই এখন ভুগছে বিএনপি।
৫। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিএনপির নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন খালেদা জিয়া। তখনো তাদের সামনে সুযোগ ছিল জিয়ার অপকর্ম, রাজনৈতিক ভ্রষ্টাচারের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে নতুন বিএনপি গড়ার। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রাখার মাধ্যমে বিএনপির সামনে এমন একটি পথ সৃষ্টিও হয়েছিল। এর ফলেই একটি দিনবদলের প্রত্যাশা থেকে ’৯১ এর নির্বাচনে বিএনপিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসে জনগণ। কিন্তু ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়ার বিএনপিও জিয়াউর রহমানের বিএনপির ধারাবাহিকতাই রক্ষা করলো। যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে থাকা, স্বাধীনতাবিরোধীদের মদদ দেওয়া, পচাত্তরের খুনিদের সঙ্গে মিত্রতা করার কাজগুলো নব উদ্যমে শুরু করলো বিএনপি। ফলে স্বাধীনতা বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির বদনাম আর ঘুচলো না। গণতান্ত্রিক পথে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেও গণতান্ত্রিক দল হিসেবে নিজেদের পুনর্গঠন করার সুযোগটি না নিয়ে বিএনপি আরও একটি ভুল করলো।
৬। ২০০১ সালে বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপির রাজনীতিতে অভ্যুদয় ঘটলো জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক জিয়ার। তারেক জিয়ার রাজনীতিতে অংশগ্রহণ বিএনপির রাজনীতিকে আরও কলুষিত করলো। বিএনপি হয়ে গেল দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন ও কালো টাকার আখড়া। সেবার বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ পরপর তিনবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। তারেকের বাসভবন হাওয়া ভবন থেকে আসতে থাকলো সরকারি গুরুত্বপুর্ন অনেক সিদ্ধান্ত, দুর্নীতির মচ্ছব বসলো সেখানে। দুর্নীতিবাজ হিসেবে ব্র্যান্ডিং হয়ে গেল তারেক জিয়ার। তাঁকে মানুষ চিনতে লাগলো দুর্নীতির বরপুত্র হিসেবে। তারেক জিয়ার কর্মকাণ্ডে তাঁর পিতা জিয়াউর রহমানের সময় বিএনপির অর্থনৈতিক সততার যে একটা প্রলেপ ছিল সেটিও ধ্বংস হয়ে গেল। বিএনপির যে সকল নেতাকর্মী-সমর্থক আদর্শ ছাড়াই শুধু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সততা দেখে বিএনপিকে পছন্দ করতেন তাদের কাছেও দলটি আস্থা হারিয়ে ফেললো।
৭। জামাত নির্ভরতা বিএনপির আরেকটি বড় ভুল। জিয়াউর রহমান জামাতকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করেছিলেন আর খালেদা জিয়া শুরু করেছিলেন পুরোপুরি জামাত নির্ভর রাজনীতি। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে একাত্তরের রাজাকার-আলবদরদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিলেন বেগম জিয়া। এসব ঘটনায় জামাত থেকে বিএনপিকে আর আলাদা করার সুযোগ রইলো না, জামাত-বিএনপি মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল। এর ফলে দেশের তরুণ সমাজ, সেক্যুলার সমাজ, মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী সমাজের আস্থাও হারিয়ে ফেললো বিএনপি।
৮। বাংলাদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতিও শুরু হয় বিএনপির হাত ধরে। বিএনপির কর্মকাণ্ডে মনে হতে থাকলো, ক্ষমতায় থাকা মানেই তাঁরা সবরকম আইন ও বিচারের উর্ধ্বে। বিএনপি দলের দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসীদের কোনো বিচার করলো না। এমনকি বঙ্গবন্ধু হত্যার মামলা হাইকোর্ট পর্যন্ত আসার পর তাও তাঁরা আপিল বিভাগে আটকে দিল। বিনা বিচারে গ্রেপ্তার করার নজির গড়লো বিএনপি। জিয়ার আমলে কর্নেল তাহের থেকে শুরু করে খালেদা জিয়ার সময় সাবের হোসেন চৌধুরী, মুনতাসীর মামুন, শাহরিয়ার কবীরদের সবাইকেই বিনা বিচারে আটক করেছে বিএনপি। যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি বিএনপি চালু করেছিল তার ফলই এখন ভোগ করছে দলটি। এ যেন অন্যের জন্য পাতা ফাঁদে নিজেই পড়ে যাওয়া।
৯। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি সবচেয়ে বড় বিভাজন রেখাটি তৈরি করেছিল ২০০৪ সালে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে। ওই হামলার মাধ্যমে যে সন্ত্রাস ও প্রতিপক্ষকে নির্মূলের রাজনীতি চালু করেছিল বিএনপি তাই দলটিকে সবচেয়ে বড় সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
১০। বিএনপির সর্বশেষ ভুল হচ্ছে ২০১৩-১৪ তে রাজনৈতিক সহিংসতা ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহন না করা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, বিএনপি যদি ওই নির্বাচনে যেত তাহলে আজকে তাঁদের ৪০ বছর পূর্তির দিনটি এতটা বিবর্ণ, এতটা সংকটময় হতো না।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।