নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
বাম রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব দিলেন তিন কমরেড মন্ত্রীকে। এই তিন মন্ত্রী হলেন বেগম মতিয়া চৌধুরী, রাশেদ খান মেনন এবং নুরুল ইসলাম নাহিদ। সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আজ সোমবার মন্ত্রী সভার বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলেন। বলেন, ‘আপনার কমরেডরা এ রকম করছে কেন? ওদের সঙ্গে কথা বলেন। জিজ্ঞেস করেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের কি আপনারা আবার ক্ষমতায় আনতে চান নাকি?’ বেগম মতিয়া চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পালন করবেন বলে জানান। সাবেক এই ন্যাপ নেত্রী বলেন, ‘বামরা বুঝতে পারছে না যে, আওয়ামী লীগ না থাকলে, তাঁদেরও অস্তিত্ব থাকবে না।’ বেগম মতিয়া চৌধুরী শিগগীরই মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমসহ অন্যান্য বাম নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেনন ভাই আর নাহিদকেও সঙ্গে নেন।’ এসময় প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ ফরহাদকে (কমিউনিটি পার্টির প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক) স্মরণ করে বলেন, ‘ফরহাদ ভাই রাজনীতিটা বুঝতো। উনি থাকলে আমার অনেক উপকার হতো।’
সূত্র মতে, আওয়ামী লীগ সভাপতি বেগম মতিয়া চৌধুরীকে বলেন, ‘সিপিবি আমাদের সারাজীবনের মিত্র। ওরা বিগড়ালো কেন।’ উল্লেখ্য, এর আগে গতমাসে বামদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সিপিবি অফিসে গিয়ে বৈঠক করেছিলেন। কিন্তু ঐ বৈঠকে তেমন কাজ হয়নি। বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা ইতিমধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এবার এজন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রীসভার তিন বামপন্থীকে দায়িত্ব দিলেন।
বেগম মতিয়া চৌধুরী কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রিত ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি এবং ডাকসুর ভিপি ছিলেন। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে তিনি ‘অগ্নিকন্যা’ উপাধিতে ভূষিত হন। ন্যাপ থেকে তিনি জাতির পিতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগের যোগ দেন। রাশেদ খান মেনন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি। তিনি চীনপন্থী কমিউনিস্ট হিসেবেই পরিচিত। সারাজীবন আওয়ামী লীগ বিরোধিতা করলেও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করেন। শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদও ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ছিলেন তিনি। ৯২ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে বামদের বিশেষ করে সিপিবির দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে সিপিবি, ন্যাপ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। ৭২ এর জাতির পিতার ডাকে বামরা দেশ গড়ার সংগ্রমে নেমেছিল। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতার হত্যার পর প্রথম প্রতিবাদ করেছিল কমিউনিস্টরাই। ৮২ তে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সভাপতির বিশ্বস্ত সহযোদ্ধা ছিলেন মোহাম্মদ ফরহাদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও প্রাক্তন ছাত্র ইউনিয়নের প্রতি দুর্বল বলে আওয়ামী লীগের অনেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।