ইনসাইড পলিটিক্স

উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিরোধী কেন পরিবেশ অধিদপ্তর?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০১ এএম, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮


Thumbnail

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে। বিজয়ের পর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশ ও দেশের জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে মনোযোগ দেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রমে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে যাত্রা করছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় সরকার প্রতিনিয়ত উন্নয়ন কাজ করে চলেছে। কিন্তু কিছু ঘটনায় মনে হয়, সরকারের ভেতরেই যেন আরেক সরকার ঘাপটি মেরে আছে যাদের উদ্দেশ্য বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করা। বর্তমানে প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় অনেক স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-শিবির এবং বিএনপির লোকজন রয়েছে। এই দলটি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নস্যাৎ করার জন্য সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজে সরকারের দপ্তরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আগ্রাসী ভূমিকা পালন করছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভূক্ত পরিবেশ অধিদপ্তর। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে সরকার পরিচালিত সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ এই পরিবেশ অধিদপ্তর।

বাংলাদেশ সরকার দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, আবাসন সমস্যার সমাধান, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, রেল, সড়ক ও নৌপথ উন্নয়নে বিগত বছরগুলোতে বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে পদ্মা সেতু প্রকল্প, ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন সড়ক প্রকল্প, রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প রয়েছে। সব প্রকল্পে আপত্তি না করলেও রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, জলসিড়ি আবাসন প্রকল্প, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বেশ কিছু বড় বড় প্রকল্পে পরিবেশগত ঝুঁকির অজুহাত দেখিয়ে বাগড়া দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তাদের এই অনীহার কারণ হিসেবে অধিপ্তরে কর্মরত জামাত-শিবির, বিএনপি কর্মকর্তাদের দায়ী বলে মনে করা হয়।

বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে বিতর্কের সূচণা হয়েছিল পরিবেশ অধিদপ্তরের কারণেই। ২০১৪ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বলা হয় এই প্রকল্পের জন্য পরিবেশগত ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। অথচ পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ১৯৯৭ অনুযায়ী, এই ধরনের প্রকল্পের জন্য প্রথমে অবস্থানগত ছাড়পত্র এবং পরবর্তীতে পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদানের বিধান রয়েছে। এই আলোকে পরিবেশ অধিদপ্তর ২০১১ সালের ২৩ মে অবস্থানগত ছাড়পত্র জারি করে এবং পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণে (ইআইএ) টিওআর অনুমোদন করে। ২০১৪ সালে প্রকল্পটি যে পর্যায়ে ছিল ওই পর্যায়ে প্রকল্পের জন্য পরিবেশগত ছাড়পত্রের বিষয়টি আসে না। সে সময় অবস্থানগত ছাড়পত্রের বিষয়টি প্রযোজ্য ছিল। পরিবেশগত ছাড়পত্র জারির লক্ষ্যে প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ করে অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার পর যন্ত্রপাতি আমদানি এবং সেগুলো স্থাপন করে পরিবেশগত ছাড়পত্রের আবেদন করতে হয়। আবেদন প্রাপ্তির পর অধিদপ্তর পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান করে। কিন্তু ওই সময় এমন বক্তব্যের মাধ্যমে রামপালকে ঘিরে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ায় পরিবেশ অধিদপ্তর। পরিবেশের ক্ষতিসাধন না হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মানের নির্মাণ ব্যবস্থা গ্রহণের পরও এমন অভিযোগ ছিল হতাশাজনক। পরবর্তীতে জানা যায়, তৎকালীন পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি জামাত-বিএনপি ঘরানার লোক বলে পরিচিত। স্বাধীনতা বিরোধী মনোভাব নিয়ে তিনি যে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম ভালো চোখে দেখবেন না এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করবেন সে কথা বলাই বাহুল্য।

শুধু রামপালই নয়, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাদের জন্য সরকারের নির্দেশে নির্মিত জলসিড়ি আবাসিক প্রকল্পের কাজেও বাধা দিয়েছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। ২০১০ সালে সরকার কর্তৃক জলসিড়ি প্রকল্পের উদ্যোগ গৃহীত হওয়া পর একটি মহল বলা শুরু করলো এই প্রকল্পে পরিবেশের ক্ষতি হবে, ফসলের ক্ষতি হবে। অথচ পরবর্তীতে এসব অভিযোগের কিছুই প্রমাণ করা যায়নি। অনুসন্ধানে জানা যায়, পরিবেশ অধিদপ্তরের তৎকালীন পরিচালক ছাত্রজীবনে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বুয়েটে অধ্যয়নরত অবস্থায় শিবিরের হল শাখার নেতা ছিলেন তিনি। এখন ওই পরিচালক পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন, বর্তমানে পরিবেশ অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সবাই ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৬ সালে বিএনপি সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত।

রামপাল ও জলসিড়ি প্রকল্পের মতো যখনই যেখানে উন্নয়নের সম্ভাবনা দেখেছে পরিবেশ অধিদপ্তর, সেখানেই তারা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কিছু প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। পরিবেশ অধিদপ্তর প্রত্যেকটি বিদ্যুৎ প্রকল্পেরই পরিবেশ ছাড়পত্র দিতে বিলম্ব করছে অথবা অন্য কোনো ভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের বক্রদৃষ্টি থেকে রেহাই পায়নি একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পের মতো জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলোও।

এবার পরিবেশ অধিদপ্তরের নজর পড়েছে দেশের উন্নয়নে গৃহীত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিনব ইকোনমিক জোন বা অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগের ওপর। অর্থনৈতিক উন্নয়ন কেবল সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয় তাই দেশের বিভিন্ন স্থানে বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর এই সাধু উদ্যোগেও বাধার সৃষ্টি করছে।

সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা নদীর তীরঘেষে ৮৩ একর জায়গার ওপর আমান ইকোনমিক জোন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। নদী দখলের অভিযোগ এনে ঢাকা অঞ্চল কার্যালয়ে চিঠিও পাঠিয়েছে অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়।

সব ধরনের উন্নয়নমূলক কাজে পরিবেশ অধিদপ্তরের বিপক্ষ অবস্থান নেওয়া এক নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। অথচ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর এই সরকারই সারা দেশে পরিবেশ অধিদপ্তরের ২১টি জেলা অফিস স্থাপন করে এবং ৪৬৮টি নতুন পদ সৃষ্টি করে পরিবেশ অধিদপ্তরের পদের সংখ্যা ২৬৭ থেকে ৭৩৫ টিতে উন্নীত করে। পরিবেশকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়ার ফলেই সরকার এই উদ্যোগগুলো গ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও প্রতিটি কাজেই পরিবেশের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করেন। এমনকি বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপের স্বীকৃতিস্বরূপ পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক পুরষ্কার `চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ` লাভ করেছন তিনি। অথচ শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকেই পরিবেশ বিরোধী হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

দুঃখজনক হচ্ছে, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের তৎপরতা দেখা গেলেও যে কাজগুলো তাদের করা উচিত সেগুলো তারা করছে না। ধলেশ্বরী নদীর পানি ট্যানারির বর্জ্যে দূষিত হয়ে যাচ্ছে কিন্তু সেই দূষণ প্রতিরোধে অধিদপ্তরের কোনো উদ্যোগ নেই। দীর্ঘদিন যাবৎ ঢাকার চারপাশের চারটি নদী বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর পানি দূষিত, কিন্তু এই নদীগুলো নিয়েও কোনো মাথা ব্যথা নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের। নিষিদ্ধ করার ১৬ বছর পরও পলিথিনের ব্যবহার এখনো বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। যদি পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব হতো তাহলে ঢাকায় সামান্য বৃষ্টিপাতেই যে জলাবদ্ধতার সমস্যা সৃষ্টি হয় তা দূর করা কঠিন হতো না। পরিবেশ অধিদপ্তরের শব্দ দূষণ বন্ধে উদ্যোগ নেই, উদ্যোগ নেই ইটভাটার কারণে হওয়া পরিবেশ দূষণ বন্ধে। বরং ইটভাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপরি আয়ের উৎস।

বিভিন্ন ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে মনে হয়, দেশের গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশগত সমস্যাগুলোর সমাধানে কোনো আগ্রহই নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের। এর বদলে সরকারের সকল উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা দেওয়াই যেন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের। জামাত-শিবির, বিএনপিপন্থী লোকজন অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়ে নেওয়ায় এমনটা ঘটছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা।


বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগে যারা বেশি পেয়েছে তারাই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে

প্রকাশ: ০৯:০৪ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগের যে সমস্ত নেতারা যোগ্যতার চেয়ে অতিরিক্ত পেয়েছেন তারাই দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন, দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছেন, দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। যুগে যুগে আওয়ামী লীগের জন্য একটি বাস্তবতা। 

খন্দকার মোশতাক কখনোই আওয়ামী লীগের এত বড় নেতা হওয়ার কথা ছিল না। যোগ্যতার বাইরে বঙ্গবন্ধু তাকে সামনের দিকে এনেছিলেন এবং খুনি মোশতাক তার চরম বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, অযোগ্যরা সবসময় বিশ্বাসঘাতক হয়। সবাই মোশতাকের মতো বড় মাপের বিশ্বাসঘাতক না হলেও বিভিন্ন সঙ্কট দেখা গেছে, আওয়ামী লীগে যারা অযোগ্য, আওয়ামী লীগ যারা যত বেশি পেয়েছে তারাই দলের শৃঙ্খলার প্রতি ততটা বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন। 

এক এগোরোর সময় হঠাৎ করে বড় হয়ে যাওয়া নেতারাই আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদ কারণ হয়ে গিয়েছিল। আর এবার উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না, তখন সেই সিদ্ধান্ত যারা লঙ্ঘন করেছে তাদের একটি বড় অংশই হলো অনেক বেশি পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতারা। 

আমরা যদি এবারের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যে সমস্ত মন্ত্রী এবং এমপিরা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তাদের হিসাব খতিয়ে দেখি তাহলে দেখব যে, বেশির ভাগই আছেন যারা অনেক বেশি আওয়ামী লীগ থেকে পেয়েছেন। এদের মধ্যে ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন ২০০০ সালের দিকে। যোগদান করেই তিনি মনোনয়ন পেয়েছেন, নির্বাচন করেছেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পেয়েছেন। ২০০৯ সালে তিনি মন্ত্রী ছিলেন। ২০১৮ সালেও তিনি মন্ত্রী ছিলেন এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবেও তিনি এখন দায়িত্ব পালন করছেন। এত অল্প সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগে এত কিছু পেয়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের ব্যাপার। আর এই সৌভাগ্যের প্রতিদান তিনি দিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশ অমান্য করে তার খালাতো ভাই হারুন অর রশীদ হীরাকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করে।

শাজাহান খান আরেকজন যিনি আওয়ামী লীগে এসে প্রাপ্তির ঝুড়ি পূর্ণ করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, মন্ত্রী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের দাপুটে নেতা হিসেবে তিনি পরিবহন সেক্টরে আধিপত্য  দখল করেছেন। আর এবার নির্বাচনে তিনি তার ছেলে আসিফুর রহমান খানকে প্রার্থী করেছেন। 

একরামুল করিম চৌধুরী সেই বিরল ভাগ্যবান আওয়ামী লীগের নেতা যিনি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কথা বলে এবং স্থানীয় এলাকা দলের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েও আওয়ামী লীগ সভাপতির আপাত্য স্নেহের কারণে এখনও রাজনীতিতে টিকে আছেন। আর তার প্রতিদান তিনি দিলেন দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ছেলে আতাহার ইশরাক ওরফে শাবাব চৌধুরীকে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়ে।

সাহাদারা মান্নান আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা কৃষিবিদ মুহাম্মদ আব্দুল মান্নানের সহধর্মিণী। কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান এক এগোরার সময় সংস্কারপন্থী ছিলেন। বাংলাদেশের পচাঁত্তর পরবর্তী রাজনীতিতে শেখ হাসিনা যাদেরকে টেনে তুলে পাদপ্রদীপে এনেছেন তাদের মধ্যে ছিলেন প্রয়াত আব্দুল মান্নান অন্যতম। আর ২০০৬ সালে সংস্কারপন্থি হওয়ার পরও শেখ হাসিনা তাকে বগুড়া থেকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন এবং আওয়ামী লীগে তিনি কিছুটা কোণঠাসা থাকলেও দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়নি। বরং তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী সাহাদারা মান্নানকে মনোনয়ন দিয়ে শেখ হাসিনা তার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন। আর সেই সহানুভূতির পুরস্কার হল সাহাদারা মান্নানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। 

বাংলাদেশে যদি সৌভাগ্যবান কোন আওয়ামী লীগার থাকে তার মধ্যে অন্যতম হলেন আ হ ম মোস্তফা কামাল। তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে শুয়ে বসে দিন কাটিয়েছেন। তবু শেখ হাসিনা তার সব অত্যাচার সহ্য করেছেন। অর্থনীতির বারোটা বাজানোর পরও আ হ ম মোস্তফা কামালকে মন্ত্রিসভা থেকে বের করে দেওয়া হয়নি। আর তার পুরস্কার তিনি দিয়েছেন দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে। তার আপন ছোট ভাই এবার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। 

জাহিদ মালেক হলেন আওয়ামী লীগের ভাগ্যবান এক ব্যক্তি, যিনি রাজনীতিতে কোনো রকম ত্যাগ তিতিক্ষা না করেই অনেক কিছু পেয়ে গেছেন। বিশেষ করে তার বাবা ছিলেন স্বৈরাচারের দোসর এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কর্নেল মালিকের মতো স্বৈরাচারের দোসরদেরকে ছাত্র জনতাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল সেই কর্নেল মালেক পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান এবং তার সূত্র ধরে জাহিদ মালেক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান মানিকগঞ্জ থেকে। তিনি ২০১৪ সালে প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৮ সালে পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছেন। তিনি এখন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটিরও সদস্য। অথচ তিনি কিনা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ভাইকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন।

গাজীপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের নেতা এবং জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী আ কম মোজাম্মেল হক। তিনি এতোই ভাগ্যবান যে শেখ হাসিনা তাকে দুবার দলের জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী হিসেবে অলঙ্কৃত করেছেন। মন্ত্রী হিসেবে তিনি কতটুকু সফল হয়েছেন সেটি সাধারণ জনগণ ভালো মতোই জানেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পর একজন জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী হয়েও তিনি দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ভাতিজা মুরাদ কবীরকে কালিয়াকৈর উপজেলায় প্রার্থী করেছেন। 

এরকম তালিকা অনেকে দীর্ঘ। যারাই যত বেশি সুযোগ পেয়েছেন তারাই তত বেশি দলের শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এটাই আওয়ামী লীগের একটি বড় ট্রাজেডি।

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলায় বিএনপির বিদ্রোহীদের পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতারা

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।

কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।

প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।

উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।


বিএনপি   আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন   মির্জা ফখরুল   ড. মঈন খান   নজরুল ইসলাম খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

৩০ এপ্রিল কী হবে আওয়ামী লীগে

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ। 

উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একটা নিরপেক্ষ অবস্থান রাখতে চেয়েছিল। দলের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা যাবে না। শুধু দলীয় প্রতীক ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নয়, আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করতে পারবেন তাদেরকে মন্ত্রী-এমপিরা সমর্থন দেবে না এবং আওয়ামী লীগ দলগত ভাবে কোন প্রার্থী দেবে না। কিন্তু বাস্তবতা হলো আওয়ামী লীগের এই নির্দেশনা অধিকাংশ মন্ত্রী-এমপিরা মানেননি। তারা তাদের আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন এবং যারা আত্মীয়স্বজনকে প্রার্থী করেননি তারা নিজস্ব ব্যক্তিকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন এলাকায় আধিপত্য রক্ষার জন্য। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের একাধিকবার নির্দেশনা দিলেও সেই নির্দেশনা মানেননি আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা। এই বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের ৩০ এপ্রিলের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এ নিয়ম আওয়ামী লীগের মধ্যে নানারকম চর্চা হচ্ছে। 

ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকরা কারা কারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে উপজেলা নির্বাচন করছেন, স্বজনদেরকে উপজেলা নির্বাচনের মাঠে নামিয়েছেন সেই তালিকা তৈরি করেছেন। আগামী ৩০ এপ্রিলের বৈঠকে এই তালিকা আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে দেওয়া হবে। 

দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র গুলো বলছে, উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কঠোর অবস্থানে থাকবে। বিশেষ করে নির্বাচনকে যেন কেউ প্রভাবিত করতে না পারে, নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি কোনো ছাড় দেবেন না- এই বার্তাটি প্রধানত দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দেওয়া হবে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, যে সমস্ত মন্ত্রী এবং এমপিরা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে নিজেদের স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে পর্যায়ক্রমে। আওয়ামী লীগ আকস্মিকভাবে তাদেরকে বহিষ্কার করা বা চূড়ান্ত শাস্তি দেওয়ার মধ্যে দিয়ে যাবে না। বরং প্রথমে তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং যে সমস্ত নেতারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তাদের স্বজনদেরকে প্রার্থী দিয়েছেন তাদের কমিটিগুলোকে পুনর্গঠন করার বিষয়টিও সামনে আসতে পারে। এ ছাড়া যারা মন্ত্রী এবং এমপি তাদের জন্য এক অন্ধকারাচ্ছন্ন ভবিষ্যতের বার্তা দিবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে আছেন। তবে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো তাৎক্ষনিকভাবে সবাইকে বহিষ্কার করা বা দলে থেকে বের করে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ তিনি নেবেন না। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য হলো উপজেলা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করা। নির্বাচনে যেন ভোটার উপস্থিতি বাড়ে সেটি নিশ্চিত করা। এই বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে উপজেলা নির্বাচনে যেন মানুষ ভোট দিতে যায় সে বিষয়ে জনগণকে উদ্ধ করার পর জোর দিবেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ যেন উপজেলা নির্বাচনের যাকে ইচ্ছা মানুষ ভোট দিক সে বার্তাটি ছড়িয়ে দেওয়া হয় সেই নির্দেশনা দিবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ   কার্যনির্বাহী কমিটি   উপজেলা নির্বাচন   শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ, পুলিশের বাধায় নেতাকর্মীরা

প্রকাশ: ০১:১৬ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।

পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।

তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।

তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।


নয়াপল্টন   বিএনপি   বিক্ষোভ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন থেকে সরলেই বহিষ্কৃতদের ক্ষমা করবে বিএনপি

প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়া নেতাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সুযোগ দিতে চাচ্ছে বিএনপি। সেক্ষেত্রে ভোট থেকে সরে এসে ক্ষমা চেয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করতে হবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে ভোট থেকে তার সরে আসার খবর জানাতে হবে।

গতকাল শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর শান্তিনগরে বিএনপির উদ্যোগে পথচারীদের মধ্যে খাবার স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণকালে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী এসব কথা বলেন।

রিজভী আরও বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির নেতারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হবে। এখনো সুযোগ আছে যারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন, দল তাদের বিষয়ে বিবেচনা করবে।’

এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় গতকাল শনিবার আরো তিন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। বহিষৃ্কতরা হলেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলার হালুয়াঘাট বিএনপির সদস্য আব্দুল হামিদ, শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার ২ নম্বর পৌর ওয়ার্ডের সভাপতি গোলাম মোস্তফা (সোনাহার) এবং রাঙামাটি জেলার কাউখালী উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা মংসুইউ চৌধুরী।

একই কারণে এর আগের দিন শুক্রবার ৭৩ জনকে বহিষ্কার করেছে দলটি।

এ ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় পৌরসভায় একজন এবং ইউনিয়ন পরিষদে আটজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ নিয়ে গত ২১ এপ্রিল থেকে এই পর্যন্ত মোট ৮৫ জনকে বহিষ্কার করে বিএনপি।


বিএনপি   উপজেলা নির্বাচন   রুহুল কবীর রিজভী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন