নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
ঐক্য প্রক্রিয়ার বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য আবার সমালোচিত হলেন বিএনপি মহাসচিব। তবে, এবারের সমালোচনা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার পক্ষ থেকে নয়। এবার মির্জা ফখরুল তোপের মুখে পড়েছেন দলের নেতাদের কাছ থেকেই। বিএনপির সিনিয়র নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, যেখানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হবে না, সেখানে বিএনপি নেতারা যাবেন না। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সামনে রেখে দলের সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘মেরুদণ্ডহীন নেতৃত্ব দিয়ে আন্দোলনের বিজয় অর্জিত হবে না।’ তিনি এটাও বলেছেন, ‘বিএনপির সঙ্গে ঐক্যের প্রধান শর্ত হবে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি।’
ঘটনার সূত্রপাত গতকাল বুধবার। ওই দিন বিকেলে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার উদ্যোগে ইভিএম এবং নির্বাচন নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান মান্না, আ স ম আবদুর রব এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য রাখেন। ওই অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব ছাড়া আর কেউই সরাসরি বেগম জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গ আনেন নি। বরং বিকল্প ধারার সভাপতি অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী পরোক্ষভাবে বিএনপির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘এক স্বেচ্ছাচার থেকে আরেক স্বেচ্ছাচারে আমরা যেতে চাই না। স্বেচ্ছা চার বন্ধে প্রয়োজন ভারসাম্য। তিনি সংসদে ভারসাম্য, মন্ত্রিসভায় ভারসাম্য এবং রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ভারসাম্যের কথা বলেন।’
ড. কামাল হোসেনও তাঁর বক্তব্যে, বিএনপির অন্যতম শরিক জামাতের তীব্র সমালোচনা করেন। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ‘ঐ বৈঠকের পরপরেই জামাতের নেতা আবদুল হালিম, ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খানকে টেলিফোন করেন। তিনি বলেন, ‘যদি আপনারা তাদের সাথেই ঐক্য করতে চান। তাহলে ২০ দল ভেঙ্গে দেন।’
এরপর জামাত নেতা জাতীয় ঐক্যের বৈঠকের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন। পরে, আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএনপির শীর্ষ নেতারা গুলশানে দলের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে বসেন। সেখানে গতকালের বৈঠক নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। বৈঠকে একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনরা বিএনপিকে মই বানিয়ে উপরে উঠতে চাইছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমরা বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিকে পাশ কাটিয়ে কোন ঐক্য কারও সঙ্গে করবো কিনা।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বৈঠকে বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘আমরা যেমন বেগম জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে যাবো না বলে ঘোষণা দিয়েছি, তেমনি ঘোষণা দিতে হবে যে, বেগম জিয়ার মুক্তির দাবি ছাড়া কারও সঙ্গে ঐক্যে যাবো না।’ বৈঠকে স্থায়ী কমিটির অনুমতি ছাড়াই, এ ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়ারও প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিএনপি মহাসচিব অবশ্য এসব সমালোচনার জবাবে বলেন, ‘দেশ বাঁচাতে ঐক্যের বিকল্প নেই। ঐক্যবদ্ধ হলে বেগম জিয়ারও মুক্তি হবে, দেশও বাঁচবে।’
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।