নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে কি বিএনপি নিষিদ্ধ হবে? রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং আদালত পাড়ায় এই প্রশ্ন এখন আলোচনার শীর্ষে। দীর্ঘ শুনানির পর এই মামলা এখন শেষ পর্যায়ে। মামলার আসামী পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি তর্ক শেষ হয়েছে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তাদের সমাপনী বক্তব্য রাখবেন। এর মধ্যে দিয়ে শেষ হবে, এই চাঞ্চল্যকর মামলার বিচার পর্ব। আদালত তার রায় ঘোষণার তারিখ ঘোষণা করবে। আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক ইতিমধ্যেই বলেছেন যে, ‘সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ২১ আগস্ট মামলার রায় হতে পারে।’ ঐ মামলার প্রধান আসামী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। এছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ তৎকালীন বিএনপি জামাত জোটের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা এ মামলার আসামী।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌশলী সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেছে, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিলো একটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ক্ষমতাসীন বিএনপি জামাতের প্রত্যক্ষ মদদে এই হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে।’ প্রবীণ এই আইনজীবী বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, দল হিসেবে বিএনপি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। বিএনপি এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটাতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে।’ তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই আদালতের কাছে বিএনপি সম্পর্কে একটি অবজারভেশন চাইবো। কারণ গণতান্ত্রিক চিন্তাচেতনায় বিশ্বাসী কোনো রাজনৈতিক দল এ ধরনের ঘৃণ্য ঘটনা ঘটাতে পারে না।’ সৈয়দ রেজাউর রহমান মনে করেন, ‘বিএনপির শীর্ষ নেতারা এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তাই এই ঘটনায় প্রমাণ হয়েছে বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।’ তিনি জানান, ‘ আমাদের সংবিধানের ৩৮(গ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে সন্ত্রাসী বা জঙ্গি সংগঠন থাকতে পারবে না। তাই যদি আদালতের কাছে আমরা তথ্য প্রমাণ দিয়ে প্রমাণ করতে পারি বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন তাহলে সংবিধানের ওই ধারা অনুযায়ী বিএনপি তার সাংগঠনিক অস্তিত্ব হারাবে।‘ নির্বাচন কমিশন তখন রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল করে দেবে।‘
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে প্রবীণ আইনজীবী এবং সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যরিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে সংগঠনের স্বাধীনতা কিছু শর্ত সাপেক্ষে দেওয়া হয়েছে। তাতে (গ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ‘উহা রাষ্ট্র বা নাগরিকের বিরুদ্ধে কিংবা অন্য কোন দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বা জঙ্গী কার্য পরিচালনার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়।’ তিনি বলেন, ‘আদালতে যদি প্রমাণ করা যায় যে, বিএনপি ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত তাহলে তা সংবিধানের ঐ ধারার আওতায় আসবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, ‘বিএনপি যদি আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ বা সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত হয় সেক্ষেত্রে তারা তাদের ধানের শীষ প্রতীকও হারাবে। সম্ভবত এ কারণেই কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ’২১ আগস্ট গেনেড হামলা মামলার রায়ের পর বিএনপির অস্তিত্ব সংকটে পরবে।‘ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছে, সেটা হলে তা হবে নির্বাচনের আগে রাজনীতিতে সব থেকে বড় টুইস্ট।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।