নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
হঠাৎ করেই মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকাটের ঢাকা অবস্থানের মেয়াদ তিন মাস বাড়লো। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় বাংলাদেশের মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে তাঁকে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। নতুন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার দায়িত্ব নেবেন জানুয়ারিতে। ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা। এবারের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটু বেশিই আগ্রহ দেখাচ্ছে। যেহেতু বার্নিকাট দীর্ঘদিন (৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫) বাংলাদেশে আছেন এবং বাংলাদেশের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এ কারণে মার্কিন প্রশাসন নির্বাচন পর্যন্ত তাঁকেই রাখতে চাইছে।
একাধিক কূটনীতিক সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, ড. মুহম্মদ ইউনূসের অনুরোধেই, ঢাকায় বার্নিকাটের মেয়াদ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ৩১ আগস্ট তাঁর ওয়াশিংটনে ফিরে যাবার কথা ছিল। এ উপলক্ষে তিনি একাধিক বিদায় নৈশভোজ এবং অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রিত হন। কিন্তু যেহেতু বার্নিকাট বাংলাদেশের রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তির উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিলেন। সে কারণেই নির্বাচনের আগে না সরানোর অনুরোধ করেন শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূস। গত ৬ মাস ধরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কোনো রাখঢাক না রেখেই প্রভাব বিস্তারে চেষ্টা করছে মার্কিন দূতাবাস। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করছে, যুক্তফ্রন্ট গঠন, ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে যুক্তফ্রন্টের ঐক্যে সরাসরি ভূমিকা রেখেছেন বার্নিকাট। আর মার্কিন দূতাবাসকে সচল করতে মূল ভূমিকা পালন করছেন ড. মুহম্মদ ইউনূস। খুলনা সিটি নির্বাচনের পর বার্নিকাট নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলেন। এর পরপরই তিনি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন। গত ৪ আগস্ট সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় যান মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট। গোপনীয়তা রক্ষা করতে গিয়ে ’ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি ম্যানুয়াল’ও অনুসরণ করেননি মার্কিন রাষ্ট্রদূত। যেখানে ড. কামাল হোসেনসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আগামী নির্বাচনে করণীয় প্রসঙ্গে কথা বলেন। তাঁর গাড়ি আক্রান্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়। এ পরপরই দ্রুতই ড. কামাল-বি. চৌধুরী বৈঠক করেন। বার্নিকাট এবং মার্কিন দূতাবাসে তাঁর সহকর্মীরা তৃতীয় শক্তি উত্থাপনের জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এ কারণেই মার্কিন প্রশাসনকে ড. ইউনূস বার্নিকাটকে নির্বাচন পর্যন্ত পরিবর্তন না করার অনুরোধ করেন। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিদায়ের আগে বার্নিকাট সর্বশেষ বিদায়ী সাক্ষাৎ করেছিলেন ড. ইউনূসের সঙ্গে। আমেরিকান ক্লাবে তাদের দু’ঘণ্টারও বেশি সময় বৈঠক হয়। এই বৈঠকের পরই দৃশ্যপট পাল্টে যায়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বার্নিকাটকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেয়।
একাধিক সূত্র বলছে, ড. কামাল হোসেন এবং অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে ঐক্য প্রক্রিয়া চলমান, তাঁর নেপথ্যে শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূস। আর এই তৎপরতায় পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে মার্কিন দূতাবাস।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।