নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
গত কয়েকদিন ধরে বিএনপি বৃহত্তর ঐক্যে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত রোববার ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরামের সঙ্গে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার বিষয়টি আলোচিত হয়। গতকাল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানদের বৈঠকেও ঐক্যে যোগ দেওয়ার বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। দুটি বৈঠকেই বিএনপি নেতারা বলেছেন, সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেও বৃহত্তর স্বার্থে এই ঐক্যে যেতে চায় বিএনপি।’ বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে জাতীয় ঐক্যে যাচ্ছি।’
রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন বিএনপি সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার কিংবা ছাড় দেওয়া বলতে কি বোঝাতে চাইছে। বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে বিএনপি ৭ টি ছাড় বিবেচনা করছে। এই ৭ টি ছাড় দিয়েই তারা বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যে যেতে চায়। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠকে যে ছাড় নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলো হলো:
১. জাতীয় ঐক্যের একমাত্র ইস্যু হবে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের নূন্যতম দাবিতে বিএনপি ঐক্যে যাবে। যেখানে বেগম জিয়ার মুক্তি, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা ইত্যাদি বিএনপির কোনো দলীয় দাবিই থাকবে না।
২ বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের নেতৃত্ব বিএনপি নেবে না। ড. কামাল হোসেন অথবা অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী যে কারও নেতৃত্ব মেনে নিয়েই বিএনপি ঐক্যে যাবে।
৩. বৃহত্তর ঐক্য গঠিত হলে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নিষ্ক্রিয় হবে। তবে জোটের অন্তর্ভুক্ত এলডিপি, বিজেপি এবং কল্যাণ পার্টি জাতীয় ঐক্যে যাবে।
৪. আন্দোলন সফল হলে বা ঐক্যবদ্ধ ভাবে নির্বাচনে যাবার সিদ্ধান্ত হলে বিএনপি ১২৫টি আসন পর্যন্ত ঐক্যের অন্য শরিক দলগুলোকে ছেড়ে দেবে।
৫. বৃহত্তর ঐক্য ক্ষমতায় গেলে প্রথম দুই বছর বিএনপি সরকার চালাবে না। ড. কামাল হোসেন বা অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে সরকারকে বিএনপি সমর্থন দেবে।
৬. বিএনপি বৃহত্তর ঐক্যের শেষ তিন বছর দেশ পরিচালনা করবে। তবে দেশ পরিচালনায় জাতীয় ঐক্যের কর্মসূচিই শুধু পালন করবে। দলীয় নীতি সরকার পরিচালনায় চাপাবে না।
৭. বেগম খালেদা জিয়া বা তারেক জিয়া দুজনের কেউই বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের সরকারে থাকবে না। ৫ বছর পর নির্বাচনে তাঁরা থাকতে পারেন।
বিএনপির নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন,‘ আমাদের একমাত্র লক্ষ্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরানো। আমরা এখন নিজেরা ক্ষমতায় যাওয়ার চেয়ে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করাকে প্রধান কাজ মনে করি।’
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।
সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল তাকে আদেশ করেছিল দায়িত্ব গ্রহণ না করার জন্য। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদটি গ্রহণ করেন। আর তার এই পদ গ্রহণের কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। কিন্তু এই অব্যাহতি শেষ পর্যন্ত টেকেনি। এখন তাকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তারেক জিয়ার এই সিদ্ধান্তে বিএনপির আইনজীবীদের একাংশ যারা মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলীসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, তারেক জিয়ার নির্দেশেই তারা খোকনের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার তারেক জিয়াই তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। মাঝখান থেকে তারেক জিয়া তাদেরকে অসম্মান করবেন বলেও এই সিনিয়র আইনজীবী মনে করেন।
তারেক জিয়ার পরামর্শেই তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে দায়িত্ব না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়াই এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে কথা বলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে যেমন আছেন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদেও বহাল থাকছেন।
বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে মাহবুব উদ্দিন খোকন যদি নির্বাচন করে এবং জিতে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে তাহলে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীরা কী দোষ করল? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত হল বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আর এই ধারাবাহিকতায় বিএনপির বিভিন্ন পেশাজীবীদের নির্বাচনও বর্জন করছে। এর আগে বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ড্যাব চিকিৎসকদের বিএমএ নির্বাচনও বর্জন করেছিল।
প্রকৌশলীদের নির্বাচনেও বিএনপি সরে গিয়েছিল। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন বিএনপি অংশগ্রহণ করল? সেটি যেমন একটি বড় প্রশ্ন, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল যে- একই সিদ্ধান্ত একেক জনের ব্যাপারে এক রকম হবে কেন? এ নিয়ে বিএনপির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ দলের কিছু বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদেরকে বলেছেন, এই সমস্ত কীভাবে হচ্ছে আমি জানি না। আপনাদের যদি কোনও কিছু বলার থাকে আপনারা লন্ডনে যোগাযোগ করেন। এখন বিএনপিতে কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না। কেউ জানছেও না যে কাকে কখন কীভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। যার ফলে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে দলটির মধ্যে।
উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন সে রকম ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি নির্দলীয় ধরনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তারা ব্যবহার করবে না।
অনেক বিএনপি নেতা মনে করেন যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটাই সঠিক ছিল। কিন্তু কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে সেটি তার নিজস্ব ব্যাপার। এ জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা বাঞ্ছনীয় নয় বলেই বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন। আর একারণেই বিএনপির সব নেতারাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন এবং তারা এখন তিক্ত-বিরক্তও বটে।
বিএনপি রাজনীতি মির্জা ফখরুল তারেক জিয়া ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।