নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেকোনো পরিস্থিতির মধ্যেই আওয়ামী লীগের ৫৪ আসন নিশ্চিত। নির্বাচনে গেলে বিএনপিও অন্তত ৩৫ আসন পাওয়ার আশা করতে পারে। আর জাতীয় পার্টিও অন্তত ৯ আসনে নিশ্চিত জয় পাবে। ১৯৭৯ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলোর গতিপ্রকৃতি গবেষণা করে এ তথ্য জানতে পেরেছে বাংলা ইনসাইডার।
গবেষণায় দেখা গেছে, সংসদ নির্বাচনের ৩০০ আসনের মধ্যে প্রায় ১০০ আসনের ফলাফল আগে থেকেই নিশ্চিত। কারণ এই আসনগুলো আওয়ামী লীগ, বিএনপি অথবা জাতীয় পার্টির আসন হিসেবে পরিচিত। নির্বাচনের আসল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বাকি ২০০ আসনে।
আগামী মাসের শেষে যেকোনো সময় ঘোষিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল। আর চলতি বছরের শেষেই অনুষ্ঠিত হতে পারে নির্বাচন। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ৩০০ আসনের সীমানা পুননির্ধারণের কাজ সম্পন্ন করেছে। ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকাও প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন যখন নির্বাচনের তোড়জোড় চালাচ্ছে তখন রাজনৈতিক দলগুলো হিসেবের খাতা খুলে বসেছে। বিভিন্ন আসনে নিজেদের অবস্থান যাচাই করছে দলগুলো।
অবস্থান যাচাইয়ের শুরুতেই কিছু বিষয় প্রাধান্য পায়। প্রতিটি বড় দলেরই কিছু আসন থাকে বলা যায় স্থায়ী বা নির্দিষ্ট (রিজার্ভ) আসন। কারণ স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ওই আসনগুলোতে সিংহভাগ সময়ই তাদের দখল ছিল। বিশেষ করে বাংলাদেশের জন্য দু’টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ- ২০০১ ও ২০০৮ সালের। ২০০১ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ বিএনপিকে গণহারে ভোট দিয়েছে। আবার ২০০৮ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ একইভাবে গণহারে ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই নির্বাচন দু’টি উত্তরমেরু-দক্ষিণমেরুর নির্বাচন। তবে এই দু’টি নির্বাচনের মধ্যেও কিছু আসন ছিল, যা আওয়ামী লীগ বা বিএনপির নিদিষ্ট আসন। ওই আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ বা বিএনপি দুই নির্বাচনেই জয়ী হয়েছে। এই আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ বা বিএনপির পক্ষ থেকে যেকেউ নির্বাচনে দাঁড়ালেই জয়ী হবে বলে ধারণা করা হয়।
আওয়ামী লীগের যে আসনগুলো নিশ্চিত:
আওয়ামী লীগের বেশ কিছু স্থায়ী আসন রয়েছে, যেগুলোতে প্রায় বরাবরই দলটি জয়লাভ করে আসছে। বাংলাদেশের পূর্বের জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের এমন আসনের সংখ্যা ৫৪টি। এগুলো হলো: ঠাকুরগাঁও-২, দিনাজপুর-৫, নীলফামারী-২, লালমনিরহাট-১, গাইবান্ধা-২, নাটোর-৪, পাবনা-৪, ঝিনাইদহ-১, যশোর-৬, মাগুরা-১, বাগেরহাট-১, বাগেরহাট-৩, খুলনা-১, পটুয়াখালী-৩, পটুয়াখালী-৪, টাংগাইল-১, টাংগাইল-৭, টাংগাইল-৮, জামালপুর-৩, জামালপুর-৫, শেরপুর-১, ময়মনসিংহ-১, ময়মনসিংহ-৭, ময়মনসিংহ-৮, ময়মনসিংহ-১০, নেত্রকোনা-২, কিশোরগঞ্জ-১, কিশোরগঞ্জ-২, কিশোরগঞ্জ-৫, গাজীপুর-১, গাজীপুর-২, গাজীপুর-৪, নরসিংদী-৫, ফরিদপুর-১, ফরিদপুর-৪, গোপালগঞ্জ-১, গোপালগঞ্জ-২, গোপালগঞ্জ-৩, মাদারীপুর-১, মাদারীপুর-২, মাদারীপুর-৩, শরীয়তপুর-২, শরীয়তপুর-৩, সুনামগঞ্জ-২, সুনামগঞ্জ-৩, মৌলভীবাজার-৪, হবিগঞ্জ-১, হবিগঞ্জ-২, হবিগঞ্জ-৩, হবিগঞ্জ-৪, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১, নোয়াখালী-৪, নোয়াখালী-৫, চট্টগ্রাম-৬ ও পার্বত্য বান্দরবান।
বিএনপি যে আসনগুলো পাবেই বলে মনে করে:
বিএনপিরও কিছু নিদিষ্ট আসন রয়েছে। বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দলটির এমন আসন সংখ্যা ৩৫টি। সেগুলো হলো: জয়পুরহাট-১, জয়পুরহাট-২, বগুড়া-২, বগুড়া-৩, বগুড়া-৪, বগুড়া-৬, বগুড়া-৭, সিরাজগঞ্জ-২, মেহেরপুর-২, খুলনা-২, ভোলা-১, বরিশাল-৪, বরিশাল-৫, কুমিল্লা-২, কুমিল্লা-৩, কুমিল্লা-৪, চাঁদপুর-৪, ফেনী-১, ফেনী-২, ফেনী-৩, নোয়াখালী-১, নোয়াখালী-২, নোয়াখালী-৩, লক্ষ্মীপুর-১, লক্ষ্মীপুর-২, লক্ষ্মীপুর-৩, লক্ষ্মীপুর-৪, চট্টগ্রাম-২, চট্টগ্রাম-১৩, চট্টগ্রাম-১৫, চট্টগ্রাম-১৬, কক্সবাজার-১, কক্সবাজার-২ ও কক্সবাজার-৩।
জাতীয় পার্টিও যেখানে নিশ্চিত জয় আশা করে:
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ-বিএনপির পর জাতীয় পার্টির নির্দিষ্ট আসন সংখ্যা বেশি। বলা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গেলে এই আসনগুলোতে জাতীয় পার্টি জয়ী হবে। বিশ্লেষণ মতে, দলটির নির্দিষ্ট আসন সংখ্যা ৯টি। এগুলো হলো: লালমনিরহাট-২, রংপুর-১, রংপুর-২, রংপুর-৩, কুড়িগ্রাম-১, কুড়িগ্রাম-২, কুড়িগ্রাম-৩, গাইবান্ধা-২ ও সাতক্ষীরা-৪।
বাংলা ইনসাইডার/বিপি/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।