নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
কোনো অগণতান্ত্রিক বা অনির্বাচিত ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যেন ক্ষমতা দখল করতে না পারে সেজন্য সংসদ রেখে নির্বাচন চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ স্থানীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন, নির্বাচনে বাড়তি সুবিধা পাওয়ার জন্য নয় বরং অসাংবিধানিক শক্তির উত্থান ঠেকাতেই সংসদ রেখে নির্বাচনের ব্যবস্থা সংবিধানে রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, সংসদ রেখে নির্বাচন করলে আওয়ামী লীগকেও অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। তারপরও গণতন্ত্রের স্বার্থে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ কি ধরনের সমস্যা জানতে চাওয়া হলে, ঐ নেতা বলেন, ‘এবার নির্বাচনে বহু এমপিই মনোনয়ন পাবেন না। নতুন যিনি প্রার্থী হবেন তাঁকে ঐ এমপি তাঁর ক্ষমতা প্রয়োগ করে ডিস্টার্ব করবেই।’ তিনি বলেন, ‘এছাড়াও এমপি থাকা অবস্থায় প্রার্থী হলে তিনি তাঁর এলাকার বাইরে প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। তবুও আমরা সংসদ রেখে নির্বাচন চাই।’
সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছেন, ‘বর্তমান সংবিধানের ৭২ (৪) এবং ৭২ (৫) অনুচ্ছেদে যুদ্ধাবস্থা বা প্রয়োজন মনে করলে প্রধানমন্ত্রী সংসদ অধিবেশন ডাকার জন্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানাতে পারবেন।’ ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘শুধু সংবিধান বহাল রেখে নির্বাচন নয়, অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতা দখল বন্ধে সংবিধানের অনেকগুলো রক্ষাকবচ নেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ৭ (ক) অনুচ্ছেদের মাধ্যমে অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর ৭ (খ) অনুযায়ী ঐ অনুচ্ছেদকে সংশোধন অযোগ্য করা হয়েছে।’
জিয়া এবং এরশাদ অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা গ্রহণ করেই সংবিধান স্থগিত করেছিলেন। তারপর সব অবৈধ কার্যক্রম ৫ম এবং ৭ম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে বৈধ করিয়ে নিয়েছিলেন।
২০০৭ সালে সংসদ না থাকার কারণেই, ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের অনির্বাচিত সরকারকে ’ডকট্রিন অব নেসেসেটি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন ড. কামাল হোসেন। যেটি সর্বোচ্চ আদালত আমলেও নিয়েছিল। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের রক্ষা কবচ হলো পবিত্র সংবিধান। আগে এই সংবিধান স্থগিত করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল হতো আমরা সেটা বন্ধ করেছি।’ তিনি কারও নাম উচ্চারণ না করে বলেন, ‘এখন কেউ যদি অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র করে তা হবে অলীক কল্পনা মাত্র।’
একাধিক সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশন সংস্কারসহ যুক্তফ্রন্টের কয়েকটি দাবির প্রতি সহনশীল। কিন্তু সংসদ ভেঙ্গে নির্বাচন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি কোনো অবস্থাতেই মেনে নেবে না।
এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, ‘ভারতে সংসদ রেখে নির্বাচন হয়, ইংল্যান্ডেও তাই। কাজেই অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে সংসদ নির্বাচন হয়, সেভাবেই বাংলাদেশে নির্বাচন হবে।’
অবশ্য বিএনপিসহ কয়েকটি বিরোধী দলের প্রধান দাবিই হলো, ‘সংসদ ভেঙ্গে নির্বাচন দেওয়া।’ বিএনপি’র একজন প্রভাবশালী নেতা বলেছেন, ‘আমরা শেষ পর্যন্ত হয়তো নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে আসবো। কিন্তু সংসদ রেখে নির্বাচন অসম্ভব।’ এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমরা কোনো ভাবেই সংবিধানের বাইরে যাব না। সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টিরও সুযোগ দেব না।’
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
ভারতের জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে বাংলাদেশ
থেকে আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বুধবার (০১ মে)
আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সাতটি ধাপে জাতীয়
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি এই নির্বাচনে তাদের সার্বিক প্রস্তুতি ও
প্রচারণা দেখানোর জন্য বিদেশি কিছু রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে
একমাত্র আওয়ামী লীগকে তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, ভারতে বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায়। অন্যদিকে,
বাংলাদেশে পরপর চারটি জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে
জয়লাভ করে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এই সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে
যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন পুরো পৃথিবীকে অবাক করেছে।
ভারতের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে
শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ
গণতন্ত্র ভারত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি যে আস্থাশীল এবং
আওয়ামী লীগকে যে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রকৃত বন্ধু
মনে করে, এই আমন্ত্রণ সেই ইঙ্গিতই বহন করে।
বিজেপির নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রচারণা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি পাঠাতে
অনুরোধ করেছে।
এই আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে দলের
তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য ড. সেলিম মাহমুদকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ভারত সফরে
মনোনীত করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, এই সফরটি মূলত পাঁচ দিনের। ১
মে থেকে ৫ মে পর্যন্ত। সফরে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধির সঙ্গে বিজেপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের
বৈঠক রয়েছে। দিল্লির বাইরে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণা সরেজমিনে দেখানোর জন্য বিজেপি
আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিকে ছত্রিশগড়ে নিয়ে যাবে।
ভারতের নির্বাচন ১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছে যা ১ জুন পর্যন্ত চলবে।
৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষিত হবে।
ভারত নির্বাচন বিজেপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া বিএনপি
মন্তব্য করুন