নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে শোকের মাস হলো আগস্ট। এখন কি অক্টোবর মাস বাংলাদেশের জনগণের জীবনে আতঙ্কের মাস হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে? এবার অক্টোবর মাসকে ঘিরে অজানা আতঙ্কে কুঁকড়ে আছে মানুষ। আজ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের তারিখ ১০ অক্টোবর ঘোষণার পর আতঙ্কের জ্বর আরও বেড়েছে। অফিসে, চায়ের আড্ডায় সর্বত্রই প্রশ্ন কী হচ্ছে অক্টোবরে। ব্যবসায়ীরা অক্টোবর মাসে বড় কোনো ব্যবসায়িক পরিকল্পনা নিতে ভয় পাচ্ছেন। সাধারণ নাগরিকরা বিয়েসহ নানা অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণে অক্টোবর মাসটাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। অক্টোবর আতঙ্কে ভুগছে গোটা দেশ।
বাংলাদেশে অক্টোবর আতঙ্ক প্রথম শুরু হয় ২০০১ সালে। পহেলা অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন। মধ্য রাতেই বিএনপির বিপুল বিজয় নিশ্চিত হয়। এর সঙ্গে সঙ্গেই বিএনপি জামাত জোট সারাদেশে শুরু করে তাণ্ডব। আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি হামলা করা হয়। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠনের এক নারকীয় যজ্ঞ চলে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত। অক্টোবর মাস অধিকাংশ সংখ্যালঘু মানুষের কাছে এখনো আতঙ্কের মাস। শারদীয় দুর্গোৎসবের ঢাকের আনন্দের বদলে তাঁরা ২০০১ এর বিভীষিকাকে স্মরণ করে। ২০০৬ সালের অক্টোবরও- এদেশের মানুষের জন্য আতঙ্কের সময়। বিএনপি-জামাত জোট ২৮ অক্টোবর ক্ষমতায় ছাড়ার দিন ঢাকা শহরে তাণ্ডব চালায়।
আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ বছরই। অক্টোবরেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। মধ্য অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হওয়ার কথা। যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়াও ঘোষণা করেছে যে, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে তাঁরা অক্টোবর থেকে মাঠে নামবে। এই প্রক্রিয়ায় বিএনপিকেও যুক্ত করার চেষ্টা চলবে। আন্দোলনের নামে কি আবার দেশে ২০১৩ এবং ২০১৪’র মতো সন্ত্রাস, আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো হবে? এই প্রশ্ন সাধারণ মানুষের। বিএনপি নেতারা ঘোষণা দিয়েই বলছেন অক্টোবরের শুরু থেকেই তারা রাজপথ কাঁপিয়ে দেবে। বিএনপির তারেক পন্থীরা আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন যে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলার রায়ের সঙ্গে সঙ্গেই তারা বেপরোয়া এবং আক্রমণাত্মক হয়ে উঠবে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা পূর্বাভাস দিয়েছে যে, বিএনপি-জামাত অক্টোবরে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছে। কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তির ওপর আক্রমণ হতে পারে, গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে এরকম খবরও প্রকাশিত হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে জানতে চেয়েছে, বাংলাদেশে রাসায়নিক হামলা তাঁর প্রস্তুতি আমাদের আছে কিনা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, গ্রেনেড হামলা মামলা রায়ের আগে তারেক জিয়া একটা কিছু করার চেষ্টা করবে।
অক্টোবর শরৎকাল। অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হবে সার্বজনীন দুর্গোৎসব। তাই দেশের মানুষ এই আতঙ্ক থেকে মুক্তি চায়। উৎসবের রঙে রাঙাতে চায়। আতঙ্ককে হারিয়ে বাংলাদেশ কি হবে উৎসবের দেশ এই অক্টোবরে?
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।