নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
জাতীয় ঐক্যের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে প্রথমেই রয়েছে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরাম থেকে একটি বড় অংশকে বের করে আনা। সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা এবং বর্তমানে গণফোরামের অন্যতম নেতা মোস্তফা মহসীন মন্টু আওয়ামী লীগে যোগ দিতে পারেন। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা মোস্তফা মহসীন মন্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাঁকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। মন্টু এই প্রস্তাবের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন বলে জানা গেছে। মোস্তফা মহসীন মন্টু দীর্ঘদিন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের অন্যতম স্তম্ভ বলে পরিচিত ছিলেন। তাঁর হাতে ৭৫ এর পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ গড়ে উঠেছিল। একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, ঢাকা (দক্ষিণ) মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা শাহ আলম মুরাদ ছিলেন মোস্তফা মন্টুর শিষ্য। এখন তিনিই নতুন করে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাঁকে ঢাকার একটি আসনে প্রার্থী করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে ঐ সূত্র নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, শুধু মোস্তফা মোহসীন মন্টু নন, গণফোরামে আওয়ামী লীগ থেকে যোগ দেওয়া অনেককেই আবার দলে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ জাতীয় ঐক্যের পাল্টা হিসেবে ১৪ দলের পরিধি বাড়ানোরও উদ্যোগ নিয়েছে। অবশ্য এই উদ্যোগ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আগেও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেসময় শরিকরা ১৪ দলের পরিধি বৃদ্ধির বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ১৪ দলের শরিকরাই এর আকার বড় করতে চাইছেন। ১৪ দলের সূত্রে জানা গেছে, আগামী শনিবার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে এ ব্যাপারে আলোচনা হতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী যে দলগুলো ১৪ দলের বাইরে আছে তাদের জোটের ছাতায় আনার চেষ্টা করা হতে পারে।
তৃতীয় পদক্ষেপ হিসেবে আওয়ামী লীগ, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে। পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদকে সক্রিয় করার জন্য বৈঠক করা হয়েছে। এছাড়াও নির্বাচনকে সামনে রেখে নাগরিক কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, প্রকৌশলী, কৃষিবিদদের নিয়ে অক্টোবরেই আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি মহাসমাবেশ করার কাজ চলছে। এ ধরনের সমাবেশের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হতে পারে।
এছাড়াও জাতীয় ঐক্যকে নির্বাচনমুখী করার লক্ষ্যে, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় থাকা একাধিক নেতার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। জাতীয় ঐক্য যেন নির্বাচন বিমুখ হয়ে আন্দোলনের পথে না যায়, সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সতর্ক।
আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বলছেন, জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে আমাদের সতর্ক নজর রয়েছে। জাতীয় ঐক্য যেন নির্বাচনমুখী হয় সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।
সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল তাকে আদেশ করেছিল দায়িত্ব গ্রহণ না করার জন্য। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদটি গ্রহণ করেন। আর তার এই পদ গ্রহণের কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। কিন্তু এই অব্যাহতি শেষ পর্যন্ত টেকেনি। এখন তাকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তারেক জিয়ার এই সিদ্ধান্তে বিএনপির আইনজীবীদের একাংশ যারা মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলীসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, তারেক জিয়ার নির্দেশেই তারা খোকনের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার তারেক জিয়াই তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। মাঝখান থেকে তারেক জিয়া তাদেরকে অসম্মান করবেন বলেও এই সিনিয়র আইনজীবী মনে করেন।
তারেক জিয়ার পরামর্শেই তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে দায়িত্ব না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়াই এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে কথা বলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে যেমন আছেন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদেও বহাল থাকছেন।
বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে মাহবুব উদ্দিন খোকন যদি নির্বাচন করে এবং জিতে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে তাহলে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীরা কী দোষ করল? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত হল বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আর এই ধারাবাহিকতায় বিএনপির বিভিন্ন পেশাজীবীদের নির্বাচনও বর্জন করছে। এর আগে বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ড্যাব চিকিৎসকদের বিএমএ নির্বাচনও বর্জন করেছিল।
প্রকৌশলীদের নির্বাচনেও বিএনপি সরে গিয়েছিল। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন বিএনপি অংশগ্রহণ করল? সেটি যেমন একটি বড় প্রশ্ন, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল যে- একই সিদ্ধান্ত একেক জনের ব্যাপারে এক রকম হবে কেন? এ নিয়ে বিএনপির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ দলের কিছু বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদেরকে বলেছেন, এই সমস্ত কীভাবে হচ্ছে আমি জানি না। আপনাদের যদি কোনও কিছু বলার থাকে আপনারা লন্ডনে যোগাযোগ করেন। এখন বিএনপিতে কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না। কেউ জানছেও না যে কাকে কখন কীভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। যার ফলে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে দলটির মধ্যে।
উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন সে রকম ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি নির্দলীয় ধরনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তারা ব্যবহার করবে না।
অনেক বিএনপি নেতা মনে করেন যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটাই সঠিক ছিল। কিন্তু কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে সেটি তার নিজস্ব ব্যাপার। এ জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা বাঞ্ছনীয় নয় বলেই বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন। আর একারণেই বিএনপির সব নেতারাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন এবং তারা এখন তিক্ত-বিরক্তও বটে।
বিএনপি রাজনীতি মির্জা ফখরুল তারেক জিয়া ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।