নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৪ অক্টোবর, ২০১৮
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেতে বিএনপি সাত দফা শর্ত ঘোষণা করেছে। বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, বেগম জিয়ার মুক্তি ছাড়া তাঁরা নির্বাচনে যাবেন না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকার বিএনপির নির্বাচনে যাবার পথ বন্ধ করে দিচ্ছে।’ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির এত সব শঙ্কার পরও দলটির একটি বড় অংশ ‘যেকোনো পরিস্থিতিতে’ নির্বাচনে যাবার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। নির্বাচনপন্থীরা একটি নেটওয়ার্কও তৈরি করেছে। শতাধিক সাবেক এমপি, প্রয়োজনে আলাদা হয়ে গেলেও নির্বাচনে যাবার ব্যাপারে আলাপ আলোচনা শুরু করেছে। নির্বাচনপন্থীদের অন্তত তিনটি বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে। ঐ সব বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, বিএনপির অস্তিত্ব রক্ষায় নির্বাচনের বিকল্প নেই। বৈঠকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে যে, দলের শীর্ষ নেতারা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেবে। ২০১৪’র মতো ভুল করবে না।’এই সব বৈঠকে সাবেক সংসদ সদস্যরা এরকম অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, ‘বিএনপির শীর্ষ নেতারা যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না যাওয়ার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে এবার তাঁরা নির্বাচনে যাবে। প্রয়োজনে তলবী সভা করে, ‘তাঁদের যুক্তি তুলে ধরবে।’ এর ফলে দল ভাঙ্গবে কিনা জানতে চাওয়া হলে, বিএনপির একজন নির্বাচনপন্থী বলেন, ‘দল ভাঙ্গতে নয়, বরং দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে আমাদের কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’ ঐ নেতা বলেন, ‘সরকার বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছে। তাই বিএনপির উচিত হবে যেকোনো মূল্যে নির্বাচনে যাওয়া।’ তাঁর মতে, ‘এবার নির্বাচনে না গেলে বিএনপি নিবন্ধন হারাবে। তাঁর প্রতীক হারাবে। দল হিসেবে তার অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে আমরা এটা হতে দিতে পারি না।’
বিএনপির অনেক নেতাই নির্বাচনপন্থীদের আলাদা বৈঠকের খবর জানেন। বিএনপির নেতারা কোনো রাখঢাক না রেখেই তাদের ‘সরকারের এজেন্ট’ বলছেন। বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, ’দল ভাঙ্গতে সরকার এদের টোপ দিয়েছে।’ জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমান, বিএনপি নেতা মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বিএনপির নির্বাচনী নেটওয়ার্কের উদ্যোক্তা। তাঁরা নিয়মিত বিভিন্ন বাসায় বসছেন। এই গ্রুপটি শতাধিক সাবেক এমপিকে নির্বাচনের পক্ষে আনতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন। তাঁরা দাবি করছেন, ৩০০ আসনেই বিএনপির জনপ্রিয় প্রার্থীরা নির্বাচনে যাবার সংকেতের অপেক্ষায় আছেন। নির্বাচনের লক্ষ্যে তাঁরা কাজও করছেন। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে, এলাকায় তাঁদের এবং কর্মীদের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়বে। তবে, এই নেতারা বলছেন, এখনই দল ভাঙ্গার বিষয়টি তাঁরা ভাবছেন না। দল শেষ পর্যন্ত সঠিক সিদ্ধান্তই নেবে বলে তাঁদের বিশ্বাস। তবে, তাঁদের এই পৃথক অবস্থান বিএনপি ভাঙ্গার ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।