নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০৫ পিএম, ১৩ অক্টোবর, ২০১৮
রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসায় গতকাল শুক্রবার বিকেলে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার বৈঠক বসে। পারস্পরিক অবিশ্বাস, মতবিরোধ, একে-অন্যের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠিত ওই জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি, যুক্তফ্রন্টের তিন দল ও গণফোরামের নেতারা।জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের দুই শীর্ষ নেতা অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেনরা বৈঠকে ছিলেন না। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে বৈঠকে উপস্থিত হয়েছিলেন অধ্যাপক বি. চৌধুরীর ছেলে ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী।
বৈঠকে বিএনপি থেকে উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মওদুদ আহমদ। গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুলতান মনসুর, বিকল্পধারার কেন্দ্রীয় নেতা ওমর ফারুক, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন। সাধারণত ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের বৈঠকে প্রতিনিধি হিসেবে থাকেন বিকল্প ধারার অন্যতম নেতা মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান। কিন্তু গতকাল ওই প্রতিনিধি হিসেবেই বৈঠকে উপস্থিত হয়েছিলেন মাহী বি. চৌধুরী। আর মাহীকে দেখে ভুত দেখার মতোই অনেকটা চমকে ওঠেন অন্যান্য নেতারা।
ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, বৈঠক চূড়ান্ত করা ঘোষণাপত্রে আপত্তি করেছেন মাহী। তিনি বলছেন, ‘প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে স্বাধীনতাবিরোধীরা’ ঐক্য প্রক্রিয়ায় থাকতে পারবেন না। অন্যান্য নেতারা শুধু ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ কথাটি রাখার পক্ষে। তবে মাহী নিজেরে সিদ্ধান্তেই অটল। কোনোভাবেই তিনি শুধু ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ কথাটি রাখতে রাজি নন।
গতকালের বৈঠকে সরকার গঠনের কাঠামো নিয়েও আলোচনা হয়। এক্ষেত্রে মাহী বি. চৌধুরীর বক্তব্য হচ্ছে, পুরো বিষয়টি নিয়ে একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা থাকতে হবে। এমন না করা হলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাহী বলেন, হয়তো আজ আমরা আন্দোলন করলাম। কাল আবার ২০ দল অন্যকিছু করবে। কাজের আন্দোলন ও নির্বাচন নিয়ে একসঙ্গে বিশদ পরিকল্পনা করতে হবে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। গতকালের বৈঠকে এ বিষয়ে মীমাংসা হয়নি বলেই জানাচ্ছে সূত্রগুলো।
ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ঐক্য প্রক্রিয়ায় বৈঠকে মাহীর অবস্থান ও বক্তব্য নিয়ে সেখানকার অন্য নেতাদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়। তাই বৈঠক শেষে ঐক্যের নেতাদের পক্ষ থেকে যুক্তফ্রন্টকে জানানো হয়, আগামীতে কোনো বৈঠকে যেন মাহী বি. চৌধুরী না থাকেন।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।