নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৪ অক্টোবর, ২০১৮
অধ্যাপক ড. বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং মাহি বি. চৌধুরীর উপর আরেক দফা প্রতিশোধ নিলেন তারেক জিয়া। ঐক্য নিয়ে যখন টানাপোড়েন, তখন তারেক জিয়া বিএনপি মহাসচিবকে বলেছিলেন, ‘ওদের (বি. চৌধুরী এবং মাহি) বোঝান ওরা যদি ঐক্যের ব্যাপারে এতো শর্ত দেয় তাহলে ওদের জোট থেকে বের করতে এক সেকেন্ড লাগবে না।’ ঠিক এভাবে না হলেও ইনিয়ে বিনিয়ে বিএনপি মহাসচিব বার্তাটা দিয়েছিলেন মাহি বি. চৌধুরীকে। এ কথা শুনে ঠাট্টাচ্ছলে মাহিও বলেছেন, ‘ফখরুল চাচা আর কত, তারেককে ছাড়ুন। এই বোঝা আর কত বইবেন।‘ মাহি এবং তারেক জিয়ার এই দ্বৈরথে আপাততঃ তারেক জিয়া জয়ী হলেন। বিকল্প ধারাকে বাদ দিয়েই গড়ে উঠলো জোট।
বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা গেছে, কোটি টাকা খরচ করে জোট থেকে বিকল্প ধারাকে হটিয়েছেন তারেক জিয়া একাই। সূত্রমতে ৬ মাস আগে যখন অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়, তখন শরীকরা শপথ নিয়েছিলেন। শপথের মূল কথা ছিল, কোনো প্রলোভনে পা দেবেন না। বড় দলের কাছে নিজেদের বিকিয়ে দেবেন না। বড়দলের স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটাবেন। যুক্তফ্রন্ট গঠিত হবার পর ড. কামাল হোসেন ছুটে যান অধ্যাপক বি. চৌধুরীর বারিধারার বাসায়। সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে বলেছিলেন, ‘আপনি যেভাবে চালাবেন সেভাবে চলবে।’ এরপর ড. কামাল গড়েন গণফোরাম। ঐক্যের একপর্যায়ে অধ্যাপক বি. চৌধুরীর পুরোনো স্মৃতি জেগে ওঠে। বিএনপির সঙ্গে ঐক্যের ব্যাপারে তিনি শর্ত দেন। এরপর বিএনপির তিন নেতা অধ্যাপক চৌধুরীর বাসায় গিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন। এতেই ক্ষেপে যান তারেক। এরপর তারেক ঢাকায় জানিয়ে দেন, বি. চৌধুরীরা যদি তাদের শর্তে অটল থাকে, তাহলে তাদের বাদ দিয়েই ঐক্য হবে। কিন্তু বিএনপি সহাসচিবকে বোঝান যুক্তফ্রন্ট বাদ দিয়ে ঐক্য সম্ভব নয়। তারেক জিয়া ফখরুলকে নিশ্চয়তা দেন, বিকল্পধারা বাদে পুরো যুক্তফ্রন্টই থাকবে জোটে। প্রথমে তিনি টোপ দেন নাগরিক ঐক্যের মান্নাকে। মোটা অংকের বিনিময়ে কিনে ফেলেন মান্নাকে। এরপর আ.স.ম. আব্দুর রবও বিক্রি হন। এরপরই পাল্টে যায় যুক্তফ্রন্টের অবস্থান।
যুক্তফ্রন্ট মুলতঃ তিন শর্তে বিএনপির সঙ্গে ঐক্যে রাজী হয়েছিল, এগুলো ছিলো- স্বাধীনতা বিরোধীদের বাদ দেওয়া, সমতার ভিত্তিতে আসন ভাগাভাগি এবং নির্বাচনের পর প্রথম দু’বছর বিএনপিকে ক্ষমতার বাইরে রাখা। কিন্তু তারেকের নজরানা পেয়েই ঘুরে যান যুক্তফ্রন্টের দুই নেতা। এদিকে, ড. কামাল হোসেনকে আগেই ম্যানেজ করে রেখেছিলেন তারেক। মাহি বি. চৌধুরী ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি তারেকের যুক্তফ্রন্টের নেতাদেরই তারেক কিনে ফেলেছে। এরপর, যখন আবার ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে ১১ অক্টোবর অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হলো, তখন তারেক সরাসরি কথা বলেন ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে। এর পরপরই বি. চৌধুরীকে এড়িয়ে যাওয়া শুরু করেন। বি. চৌধুরী আশা করেছিলেন, মান্না এবং রব তার দিকেই থাকবে। কিন্তু প্রেস কনফারেন্সে তাদের দেখে অধ্যাপক বি. চৌধুরী একটু অবাকই হন। এ নিয়ে তারেকের কাছে দ্বিতীয় দফায় ধরাশায়ী হলেন বাপ-বেটা। এর আগে তারেক চ্যালেঞ্জ দিয়ে তাদের বঙ্গভবন থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। এবারও তারেক চ্যালেঞ্জ দিয়েই তাদের ঐক্য ফ্রন্ট থেকে ছুড়ে দিলেন। কোটি টাকায় তারেক কিনলেন ঐক্য ফ্রন্ট।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।