নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০২ এএম, ২১ অক্টোবর, ২০১৮
জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটের (ইউএনএ) মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ থেকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৩০০ আসনে জাপার প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জোটের চেয়ারম্যান লে. জে. (অব.) হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। এছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আগামী নির্বাচনে জাপাই জিতবে বলে ভাষণ প্রদাণকালে মন্তব্য করেছেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি ও স্বৈরশাসক।
দুটি দল ও দুটি রাজনৈতিক জোটের সমন্বয়ে সম্মিলিত জাতীয় জোট (ইউএনএ) নামের একটি ‘বৃহত্তর জোট’ গঠন করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। এই জোটে দুটি নিবন্ধিত দলসহ মোট ৫৮টি দল রয়েছে। দলের সংখ্যার বিচারে এটি এখন দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক জোট।
যদিও এরশাদ জাপার হয়ে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী কিন্তু অতীত ইতিহাস জাপার জয়ের পক্ষে ভবিষ্যৎবাণী করছে না। ১৯৮২ সালে সেনা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। গণঅভ্যুত্থানের মুখে ১৯৯০ সালের ডিসেম্বর মাসে এই স্বৈরশাসকের পদত্যাগের পর এ পর্যন্ত ৫টি জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে তাঁর গঠিত দল জাতীয় পার্টি।
১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ৩৫টি আসন লাভ করে জাতীয় পার্টি। এরপর ১৯৯৬ সালের ১২ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটি ৩২টি আসন লাভ করে। ওই নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করেছিল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগকে সরকার গঠনে সমর্থন দেয়।
দীর্ঘদিন জেলে থাকার পর এরশাদ ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি জামিনে মুক্ত হন। নানা ঘটনা পরিক্রমায় ২০০০ সালে এসে নেতৃত্বের কোন্দলে জাতীয় পার্টি তিন ভাগে বিভক্ত হয়। সে সময়ে বিভক্ত হওয়া দলটি এখনও এরশাদ গ্রুপ, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু গ্রুপ ও নাজিউর রহমান মঞ্জু গ্রুপে বিভক্ত। ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (এরশাদ গ্রুপ) ১৪টি আসন লাভ করে।
এরপর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে যোগ দেয়। নির্বাচনে জাতীয় পার্টি জাতীয় সংসদের ২৭ টি আসন এবং মোট ভোটের ৭% লাভ করে।
উপরের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি সবসময়ই সংসদের খান ত্রিশেক আসন দখল করে রাখে কিন্তু এ পরিমাণ আসন কাউকে বিজয়ী করতে যথেষ্ট নয়। এছাড়া দেশের রাজনীতি অঙ্গনের অন্যান্য দলের তুলনায় জাতীয় পার্টির রাজনীতিকের সংখ্যা বেশি হলেও তা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার মতো কিংবা প্রার্থী দিলেও সরকার গঠন করার মতো যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তাই মহাসমাবেশ থেকে করা এরশাদের মন্তব্যকে অবাস্তব বলে মনে করছে দেশের রাজনৈতিক মহল।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।