নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২২ অক্টোবর, ২০১৮
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছে ঢাকাস্থ বিদেশি দূতাবাসগুলো। সম্প্রতি দূতাবাসগুলোর পক্ষ থেকে নেওয়া কয়েকটি পদক্ষেপে আশঙ্কার ব্যাপারটি জানা গেছে। আর এমন আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতেই সাম্প্রতিক সময়ে জামাতসহ বিএনপির বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই জামাত এবং বিএনপির একটি অংশ আবার ২০১৪ বা ২০১৫’র মতো সহিংস তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। এ নিয়ে জামাত এবং বিএনপির একাধিক বৈঠকের খবর গোয়েন্দা সংস্থাদের হাতে আছে। তাঁদের মূল লক্ষ্য হলো, ঢাকার রাজপথে নেমে আসা এবং রাজধানী দখল করে নেওয়া। সহিংসতার মাত্রা এই পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যেন সরকারের পক্ষে নির্বাচন করা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। জামাত এবং বিএনপির একটা অংশের মূল লক্ষ্য হলো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার বদল নয় বরং দেশে এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যেন নির্বাচন না হয় এবং নির্বাচন না হওয়ার কারণে দেশে সাংবিধানিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়।
আরেকটি মহল বলছে, রাজপথ দখল করে এমন একটা পরিস্থিতি তাঁরা সৃষ্টি করতে চাইছে যেন সরকার দাবি মানতে বাধ্য হয়।
মার্কিন দূতাবাস গত রোববার ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে। আগামী নভেম্বরে মার্কিন নাগরিকদের বাংলাদেশে আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই মার্কিন দূতাবাস থেকে তাদের দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাংলাদেশ ভ্রমণে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
শুধু মার্কিন দূতাবাসই নয়, যুক্তরাজ্য থেকেও বাংলাদেশে নির্বাচনে রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কা করা হয়েছে এবং সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জার্মান দূতাবাস থেকেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
যদিও মনে করা হচ্ছিল, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপি নির্বাচনমুখী। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে যখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছিল তখন তাঁরা অঙ্গীকার করেছিল নির্বাচনে যাওয়ার জন্য তাঁরা কোনো সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করবে না। তাঁরা জনগণকে সচেতন করার কর্মসূচির মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সভা সমাবেশের মধ্যেই তাঁদের কর্মসূচি সীমিত রাখবে। কিন্তু বিএনপির একটি বড় অংশ মনে করছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরেই সরকার দুর্বল হয়ে পড়বে। প্রশাসনের ওপর সরকারের কর্তৃত্ব শিথিল হয়ে পড়বে এবং সেই সুযোগটি তাঁরা কাজে লাগাতে চায়। সেই সুযোগে তাঁরা রাজনৈতিক মাঠ গরম করতে চায়।
বিএনপি এবং জামাত মনে করছে, রাজনৈতিক মাঠ গরম করতে হলে ঢাকা দখল করতে হবে। ঢাকা দখলের পরিকল্পনা নিয়েই তাঁরা এগুচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থাদের কাছে এরকম একাধিক তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, বিএনপি নেতাদের একটি বড় অংশ একাধিক বৈঠক করেছে যে, ঢাকার রাজপথগুলো তাঁরা কীভাবে দখল করে নেবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকাকে তাঁরা কীভাবে অচল করে দেবে সে পরিকল্পনা করেছে।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ২০১৪ বা ২০১৫’র মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। সহিংসতার আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতেই বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে কোন সংশয় নেই এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর যথাসময়েই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডআই/জেডএ
মন্তব্য করুন
এবার উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা তাদের আত্মীয় স্বজন এবং নিজস্ব
পছন্দের ব্যক্তিদেরকে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করেছেন এবং তারা এলাকায় প্রভাব বিস্তার
করে তাদের মাই ম্যানদেরকে জয়ী করার জন্য চেষ্টাও চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়
নেতৃত্বের নজর এড়ায়নি প্রসঙ্গটি। আর এ কারণে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে
এ ব্যাপারে একাধিকবার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসব সতর্কবার্তা সত্ত্বেও মন্ত্রী-এমপিরা
এলাকায় তাদের আধিপত্য বজায় রাখা এবং নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য মাই ম্যানদের
প্রার্থী করেছেন। কেউ আত্মীয় স্বজনকে, কেউ নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী
করেছেন। আর এই প্রার্থী করার ফলে এলাকার মধ্যে বিরাজ করছে এক ধরনের অসন্তোষ, ক্ষোভ
এবং বিরূপ প্রতিক্রিয়া।
আর আওয়ামী লীগ দলগতভাবে যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা দলীয় প্রতীক
ব্যবহার করবে না এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন নির্দেশনা দিয়েছেন যে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা
প্রার্থী হতে পারবেন না, তখন মন্ত্রী-এমপিদের মাই ম্যানদের বিরুদ্ধে একটি গণ প্রতিরোধ
গড়ে উঠেছে উপজেলার নির্বাচনগুলোতে।
একাধিক উপজেলায় দেখা গেছে, মন্ত্রী-এমপিদের পছন্দের প্রার্থীর
বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগ একাট্টা হয়েছে এবং স্থানীয় তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থীর
পক্ষে তারা কাজ শুরু করেছেন। যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিরা এলাকায় তাদের নিজেদের প্রার্থী
দিয়েছেন তারা এখন নিজস্ব বলয়ের বাইরে মূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাচ্ছেন না।
অবশ্য কোন কোন উপজেলায় আগেই প্রভাব বিস্তার শেষ করে ফেলেছেন মন্ত্রী-এমপিদের
প্রার্থীরা। তারা কোথাও কোথাও একক প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। কোথাও কোথাও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়
উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত করার জন্য চেষ্টা করছেন। কিন্তু যে সমস্ত
এলাকায় এটা সম্ভব হয়নি, যে সমস্ত এলাকায় তৃণমূল শক্তিশালী সেই সমস্ত এলাকাগুলোতে আওয়ামী
লীগের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে পড়ছেন উপজেলার প্রার্থীরা। ফলে শেষ পর্যন্ত যদি উপজেলা
নির্বাচনে প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরপেক্ষ থাকে তাহলে বেশিরভাগ
উপজেলায় মন্ত্রী-এমপিদের মাই ম্যানদের ভরাডুবি ঘটবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
বিভিন্ন উপজেলায় যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন,
যেহেতু আওয়ামী লীগ সভাপতি মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদেরকে নির্বাচনে না দাঁড়ানোর জন্য
নির্দেশনা দিয়েছেন, কাজেই মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়াটা হল একেবারেই
দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন এবং এই সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ
করাটা নেতাকর্মীদের দায়িত্ব।
আর এ কারণেই নেতাকর্মীরা এখন মন্ত্রী-এমপিদের পছন্দের প্রার্থীর
বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন এবং তারা তাদের বিকল্প প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন। এর ফলে
উপজেলা নির্বাচন একটি নতুন মাত্রা এবং প্রতিযোগিতার আবহ সৃষ্টি করেছে।
উপজেলা নির্বাচন গণ প্রতিরোধ মন্ত্রী-এমপি মাই ম্যান
মন্তব্য করুন
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এবার বেকায়দায়
পড়েছেন। ডিবিসি চ্যানেলের রাজকাহন অনুষ্ঠানে একটি বক্তব্য দিয়ে বিএনপির নেতাদের তোপের
মুখে পড়েছেন তিনি। আর তোপের মুখে পড়ে যথারীতি ইউটার্ন নিয়েছেন এবং বলেছেন যে তিনি এটি
বলেননি।
কিন্তু সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ভুলে গেছেন যে, ডিবিসির রাজকাহনে
প্রচারিত তার বক্তব্য এখন ইউটিউবে ভাসছে। সেখানে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যা বলেছেন
সেটি প্রচারিত হচ্ছে। সেটি বিকৃত করার কোন সুযোগ নেই। তিনি কোন সাক্ষাৎকার দেননি বা
তিনি কোন পত্রিকার সাংবাদিকের কাছে মৌখিকভাবে এ বক্তব্য দেননি। তিনি দিয়েছেন সরাসরি
টেলিভিশনে এবং এটি লাইভ প্রচারিত হয়েছে। শুধুমাত্র লাইভ প্রচারিতই নয়, বরং এই বক্তব্য
এখন ইউটিউবে ভাসছে।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল রাজকাহনে কী বলেছেন তা একটু দেখে নেওয়া যাক।
তিনি বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বাদ দিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি
কি না সে বিকল্প চিন্তা আমাদের মধ্যে আছে। তিনি জানান, প্রয়োজনে বেগম জিয়া এবং তারেক
রহমানের পক্ষ থেকে কমিটি বা বডি বাছাই করা হবে। যারা তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত নেবে।
আলালের এই বক্তব্য বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
বিএনপির লন্ডনে পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এই বক্তব্য সম্পর্কে আলালের
কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন বলেও জানা যায়। এছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও
জানতে চান যে, কেন আলাল এই ধরনের কথা বললেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন যে, বিএনপিতে
বেগম খালেদা জিয়া বা তারেক জিয়ার বিকল্পের কোন ভাবনা নেই এবং এ ধরনের কোন আলোচনাও হয়নি।
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে
তারেক জিয়া যথেষ্ট যোগ্যতা এবং পরিপক্কতার সাথে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের বাইরে বিএনপিতে
সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন না গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
এই বক্তব্য যখন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং গণমাধ্যমে
প্রকাশিত হয়েছে তখন আলাল তোপের মুখে পড়েছেন। আলালকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে
কিনা সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলেও দলের ভিতর তিনি ব্যাপক তিরস্কার
এবং ভর্ৎসনার মুখোমুখি পড়ছেন।
এরকম পরিস্থিতিতে অন্যান্য রাজনীতিবিদরা যা করেন, আলাল সেই একই
কাণ্ড করেছেন। তিনি তার অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে এরকম বক্তব্য
তিনি দেননি। তার বক্তব্য, মিথ্যা এবং ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলেও মোয়াজ্জেম হোসেন
আলাল তার এক প্রতিবাদ বার্তায় বলেছেন। অথচ বক্তব্যটি এখনও ডিবিসিতে রাজকাহন অনুষ্ঠানে
পাওয়া যাচ্ছে।
তাছাড়া বিএনপির নেতারাও এই বক্তব্যগুলো দেখেছেন। যে কারণে আলালের
এই প্রতিবাদ বা তিনি এ ধরনের কথা বলেননি বলে যে মন্তব্য করছেন তা তারেক জিয়া বা অন্য
নেতাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না। এই বিশ্বাসযোগ্য না হওয়ার কারণে বেকায়দায় পড়েছেন
বিএনপির নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। সামনের দিনগুলোতে এখন বিএনপি আলালের ব্যাপারে কী
সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার বিষয়।
উল্লেখ্য, এর আগে বিতর্কিত বক্তব্য রেখে বিএনপির অনেক গুরুত্বপূর্ণ
নেতাই দল থেকে ছিটকে পড়েছেন। যাদের মধ্যে শওকত মাহমুদ অন্যতম। আলালকেও সেই পরিণতি
বরণ করতে হবে কী না সে নিয়ে অনেকের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে।
বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর দলের তৃণমূলের
নেতাদের মতামত উপেক্ষা করে কেন নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির
(জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সামনে তিনি বলেছেনে, ‘বিএনপির
আন্দোলন সফল হবে না তা আগেই বুঝেছিলাম। তাই দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনে
অংশ নিয়েছিলাম। তবে ভোট ভালো হয়নি।’
শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জাপার
কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
গত বছরের ১২ নভেম্বর বর্ধিত সভায় জাপার নেতারা নির্বাচন বর্জনের
পক্ষে মতামত দেন। তবে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ২৬ আসনে ছাড় পেয়ে নির্বাচনে অংশ
নেন জি এম কাদের।
নির্বাচনের আগের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে কেন্দ্রীয় কমিটির
সভায় বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের বলেন, ‘৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বিদেশি বন্ধুদের
সঙ্গে বৈঠকে করে পরিষ্কার বুঝেছি, তিনটি বিদেশি বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে
এবং নির্বাচন সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তারা নয়, আরও বেশ কয়েকটি বিদেশি শক্তি
আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত ছিল।
নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রশ্নে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি
সৃষ্টি হয়েছিল জানিয়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্বাচন বন্ধ করে কোনো দেশে সরকার
পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই জাতীয় পার্টি নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করছে। নির্বাচনের আগে
বর্ধিত সভায় নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মতামত দেওয়া হয়েছিল। ভোটে না গেলে ভবিষ্যতে
জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রাখা যাবে কি না সন্দেহ ছিল, তাই নির্বাচনে গিয়েছি। আপনারা আমার
ওপর আস্থা রেখেছেন। ভোটের আগ মুহূর্তে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তখন সুষ্ঠুভাবে পরিবেশ পর্যবেক্ষণ
করেছি।
মনে হয়েছে, বিভিন্ন বিদেশি শক্তি বিভিন্নভাবে নানা দিকে নিচ্ছিলেন।
আর বিএনপির আন্দোলন নিয়ে পরিষ্কার ধারণা ছিল, তারা সফল হবে না। আন্দোলন চলাকালে তৃতীয়
শক্তি এসে সরকার পরিবর্তন করে, এমন ইতিহাস বাংলাদেশে নেই। ফলে, বিএনপির ১ কিংবা ১০
লাখ বা ১ কোটি লোক নিয়ে রাস্তায় নামলেও বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না, তা বুঝতে পেরেছিলাম’।
বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, বিএনপি ও জামায়াত আন্দোলনে পরাস্ত হয়ে
জাতীয় পার্টিকে দোষ দিচ্ছে। তবে এটা ঠিক নির্বাচন ভালো হয়নি। সরকার জাতীয় পার্টিকে
গৃহপালিত দল হিসেবে দেখতে চায়, যা কখনও সম্ভব নয়। জাতীয় পার্টি কখনোই অনুগত বিরোধী
দল ছিল না। এবং জাতীয় পার্টি গৃহপালিত বিরোধী দল হতে রাজি না।
জাতীয় পার্টি জাপা জি এম কাদের বিএনপি
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস (মে দিবস) উপলক্ষ্যে রাজধানীতে শ্রমিক
সমাবেশ করবে বিএনপি। আগামী ১ মে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী
শ্রমিকদলের উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান
এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আগামী ১ মে শ্রমিক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল
ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। এছাড়া দলের অন্যান্য নেতারাও এই
সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে, গতকাল খালেদা জিয়াসহ দলের নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
সমাবেশ ঘোষণা করেছিল বিএনপি। কিন্তু তীব্র গরমের কারণে পরে সেই সমাবেশে স্থগিত করা
হয়।
মে দিবস নয়াপল্টন সমাবেশ বিএনপি
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্টু ও নিরপেক্ষ করার জন্য কঠোর অবস্থান গ্রহণ
করবেন। এ ব্যপারে তিনি প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশনা দিতে যাচ্ছেন বলে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল
সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরই মন্ত্রী পরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন
সচিব এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে কথা বলবেন। উপজেলা
নির্বাচন নিয়ে যেন কোন অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা না হয়, প্রশাসনের বিরুদ্ধে যেন কোনরকম পক্ষপাতের
অভিযোগ না আসে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট অনুশাসন জারি করবেন বলেও প্রধানমন্ত্রী
কার্যালয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখ্য,
আগামী ৮ মে প্রথম পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারের উপজেলা
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছে না। উপজেলা নির্বাচন যেন প্রভাবমুক্ত
থাকে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদেরকে প্রার্থী না করার
নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও নির্বাচনের মাঠে মন্ত্রী-এমপিরা প্রভাব বিস্তার
করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ বৈঠকে আশঙ্কা
করা হয়েছে যে, উপজেলা নির্বাচনকে মন্ত্রী-এমপিরা প্রশাসনকে ব্যবহার করতে পারেন, তাদের
পক্ষের প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য। আর এটি যেন না হয়, সেজন্যই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা কিছু কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একদিকে
তিনি যেমন দলের নেতা-কর্মীদের বলেছেন যে, দলের নেতা-কর্মীরা দলীয় পরিচয় ব্যবহার করতে
পারবে না। দলীয় প্রতীক দেয়া হচ্ছে না উপজেলা নির্বাচনে। মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনদেরকে
না দাড়ানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এবং মন্ত্রী এমপিরা যেন নির্বাচনে প্রত্যক্ষ
পরোক্ষভাবে কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে সেজন্য সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু
তারপরও আওয়ামী লীগের কিছু মন্ত্রী-এমপি তাদের নিজস্ব ব্যক্তিদের নির্বাচনে প্রার্থী
করানোর জন্য মাঠে নেমেছেন এবং নির্বাচনে তারা যেন জয়ী হয় এজন্য নানা রকমের প্রভাব বিস্তারের
চেষ্টা করছে। এ বিষয়টি আওয়ামী লীগ সভাপতির নজরে এসেছে বলেই জানা গেছে। আর একারনেই তিনি
প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পৃথক পৃথকভাবে কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা
দিবেন।
বিভিন্ন
সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী যেসমস্ত নির্দেশনা মাঠ প্রশাসনের জন্য দিতে যাচ্ছেন
তার মধ্যে রয়েছে..
১) মাঠ প্রশাসন উপজেলা নির্বাচনে নির্মোহ এবং
নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে
২) কোন প্রার্থীর পক্ষে মাঠ প্রশাসন কাজ করবে
না এবং কোন চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না
৩) কোন মন্ত্রী-এমপিরা তাদের অন্যায় অনুরোধ করলে
তারা শুনবে না এবং সে ব্যাপারে তারা শুনবে না। এজন্য ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে তারা তাৎক্ষণিকভাবে
অবহিত করবেন
৪) আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন সুষ্টু
করার জন্য কাজ করবেন এবং কোন ভাবেই যেন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা না হয়, সেজন্য
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে।
৫) যাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ উঠবে তাদের
ব্যাপারে আইনগত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও নির্দেশনায় দেওয়া হবে।
আওয়ামী
লীগ সভাপতি চাচ্ছেন উপজেলা নির্বাচনকে একটি অবাধ সুষ্টু নিরপেক্ষ করতে। একটি ভোটের
পরিবেশ সৃষ্টি করাতে। যেন সাধারণ মানুষ ভোট কেন্দ্রে যায় এবং উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট
হয়।
উপজেলা নির্বাচন প্রশাসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
এবার উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা তাদের আত্মীয় স্বজন এবং নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিদেরকে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করেছেন এবং তারা এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে তাদের মাই ম্যানদেরকে জয়ী করার জন্য চেষ্টাও চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজর এড়ায়নি প্রসঙ্গটি। আর এ কারণে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে এ ব্যাপারে একাধিকবার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসব সতর্কবার্তা সত্ত্বেও মন্ত্রী-এমপিরা এলাকায় তাদের আধিপত্য বজায় রাখা এবং নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য মাই ম্যানদের প্রার্থী করেছেন। কেউ আত্মীয় স্বজনকে, কেউ নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন। আর এই প্রার্থী করার ফলে এলাকার মধ্যে বিরাজ করছে এক ধরনের অসন্তোষ, ক্ষোভ এবং বিরূপ প্রতিক্রিয়া।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এবার বেকায়দায় পড়েছেন। ডিবিসি চ্যানেলের রাজকাহন অনুষ্ঠানে একটি বক্তব্য দিয়ে বিএনপির নেতাদের তোপের মুখে পড়েছেন তিনি। আর তোপের মুখে পড়ে যথারীতি ইউটার্ন নিয়েছেন এবং বলেছেন যে তিনি এটি বলেননি। কিন্তু সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ভুলে গেছেন যে, ডিবিসির রাজকাহনে প্রচারিত তার বক্তব্য এখন ইউটিউবে ভাসছে। সেখানে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যা বলেছেন সেটি প্রচারিত হচ্ছে। সেটি বিকৃত করার কোন সুযোগ নেই। তিনি কোন সাক্ষাৎকার দেননি বা তিনি কোন পত্রিকার সাংবাদিকের কাছে মৌখিকভাবে এ বক্তব্য দেননি। তিনি দিয়েছেন সরাসরি টেলিভিশনে এবং এটি লাইভ প্রচারিত হয়েছে। শুধুমাত্র লাইভ প্রচারিতই নয়, বরং এই বক্তব্য এখন ইউটিউবে ভাসছে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর দলের তৃণমূলের নেতাদের মতামত উপেক্ষা করে কেন নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সামনে তিনি বলেছেনে, ‘বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না তা আগেই বুঝেছিলাম। তাই দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। তবে ভোট ভালো হয়নি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্টু ও নিরপেক্ষ করার জন্য কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবেন। এ ব্যপারে তিনি প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশনা দিতে যাচ্ছেন বলে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরই মন্ত্রী পরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে কথা বলবেন। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে যেন কোন অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা না হয়, প্রশাসনের বিরুদ্ধে যেন কোনরকম পক্ষপাতের অভিযোগ না আসে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট অনুশাসন জারি করবেন বলেও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।