ইনসাইড পলিটিক্স

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক দশক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০১ এএম, ২৪ অক্টোবর, ২০১৮


Thumbnail

দশম জাতীয় সংসদের সর্বশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে গত রোববার। এই সংসদ অধিবেশন শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে দশম সংসদের পাঁচ বছর পূর্তি হবে এবং সমাপ্তি হবে আওয়ামী লীগ সরকারের ১০ বছরের শাসনকালের। আর এই সংসদ অধিবেশনের সমাপ্তির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা ১০ বছর পূর্ণ করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

এর আগেও শেখ হাসিনা ১৯৯৬–২০০১ সাল মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। অর্থ্যাৎ সব মিলিয়ে মোট ১৫ বছর রাষ্ট্র প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বাধিক সময়ের জন্য শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার শাসনামলের ১০ বছর পূর্তিতে তাঁর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া ও রাষ্ট্র পরিচালনার সময়টা ফিরে দেখা যাক।

আজ থেকে ১০ বছর আগের কথা। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের অপশাসন আর ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের অনির্বাচিত সরকারের শাসনের অধীনে জীবনযাপন করে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের জনগণ। এমন সময় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের পক্ষে এক ঐতিহাসিক গণরায় প্রদাণ করে জনতা। জনগণের ভোট নিয়ে বিপুল ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিকে পরাজিত করে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ আর দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই দেশের উন্নয়ন ও জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে নিরলসভাবে পরিশ্রম করতে শুরু করেন। ১০ বছরের শাসনকালে নিজের দূরদৃষ্টি, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দক্ষ রাষ্ট্র চালনায় ইতিমধ্যেই বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছেন তিনি। । শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্জনের সংখ্যা এতটাই বেশি যে তার সব কটি উল্লেখ করা গণমাধ্যমের সীমিত পরিসরে মোটামুটি অসম্ভব। গত ১০ বছরে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে, দেশে বেকারত্বের হার কমেছে, নাম লিখিয়েছে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায়। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের মধ্য দিয়ে মহাকাশে পৌঁছে যাওয়া, নৌবাহিনীর সাবমেরিন যুগে প্রবেশ কিংবা সমুদ্রসীমা বিজয়ের মতো ঘটনাগুলো ঘটেছে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কিংবা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারও সম্পন্ন হয়েছে শেখ হাসিনার শাসনামলে। দেশকে দক্ষ হাতে পরিচালনা করে দেশী-বিদেশী অজস্র স্বীকৃতিও পেয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০০৯ সালের ৩ জানুয়ারি শেখ হাসিনা সংসদনেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শেখ হাসিনার দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ২১ জানুয়ারি দীর্ঘ ১৯ বছর পর দেশে উপজেলা নির্বাচন হয়। এর মাত্র এক সপ্তাহ পরই প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ২৯ জানুয়ারি কণ্ঠভোটে প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় সংসদে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবটির পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় সাফল্যের একটি এই একাত্তরের মানবতাবিরোধী কার্যক্রম ও গণহত্যা সংগঠনকারী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং প্রধান অপরাধীদের শাস্তি কার্যকর করা। ইতিমধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামাতের শীর্ষনেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মতো যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

মানবতাবিরোধী অপরাধ ছাড়াও অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় প্রদান ও দণ্ড কার্যকর হয়েছে শেখ হাসিনার শাসনামলে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে সে বছরের ১৯ নভেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি ঘোষণা করে আদালত। এরপর ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সাজা কার্যকর করা হয়।

২০০৪ সালে সংঘটিত বাংলাদেশের ইতিহাসের ভয়াবহতম ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ও হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই। চলতি বছরের ১০ অক্টোবর এই মামলার রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত হন, মৃত্যুদণ্ড হয় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের। এছাড়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রভাবশালী ব্যক্তি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির দায়ে বিচারের সম্মুখীন করাকেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্য হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে।

বাংলাদেশের উন্নয়নের রূপকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনৈতিক খাতে অভূতপুর্ব উন্নতি ঘটে বাংলাদেশের। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দেশকে দারিদ্রমুক্ত করার কৃতিত্ব শেখ হাসিনারই। শেখ হাসিনার শাসনামলেই `স্বল্পোন্নত` দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয় বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনার ১০ বছর মেয়াদে দেশের অর্থনীতির উল্লম্ফনের দিকে দৃষ্টি দেওয়া যাক। ২০০৭-০৮ অর্থবছরের জিডিপির (অর্থনীতির আকার) পরিমাণ ছিল চলতি মূল্যে ৬,২৮,৬৪২ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২২,৩৮,৪৯৮ কোটি টাকা। ২০০৭-০৮ অর্থবছর শেষে আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল ৪৩,৭১৯ টাকা। গত ১০ বছরে বেড়ে প্রায় তিনগুণ হয়েছে। ২০০৭ সালে জাতীয় দারিদ্র্যের হার যেখানে ছিল ৪০ শতাংশ, সেখানে ২০১৭ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৪.৩ শতাংশে।  ২০০৭-০৮ অর্থবছরের তুলনায় এই সময়টাতে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে রেমিটেন্স। ওই সময়ে ৫৪২ বিলিয়ন টাকা থেকে বেড়ে ১০১১ বিলিয়ন টাকায় উন্নীত হয়েছে। গত ২০০৭-০৮ অর্থবছরে বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ ছিল ১,৩৩,৬৫০ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা ৩৩ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩,৪৯,১০০ কোটি টাকা। আর রপ্তানি ওই সময়ের মধ্যে বেড়েছে পঁয়ত্রিশ গুণ।

অর্থনৈতিক উন্নয়নের দৃষ্টান্ত স্বরূপ ১০টি মেগা প্রকল্প যথা- পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প, পদ্মা রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, চট্টগ্রাম দোহাজারী থেকে রামু কক্সবাজার এবং রামু ঘুমধুম রেলপথ নির্মাণ, ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প, পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্প, মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল পাওয়ার প্রকল্প এবং মহেশখালীতে ভাসমান এলএমজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প এখন নির্মানাধীন রয়েছে। এর মধ্যে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের পরও নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্প নির্মানাধীন আছে কেবল শেখ হাসিনার সাহসিকতার ফলেই।

শুধু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, শেখ হাসিনার দক্ষ রাষ্ট্র পরিচালনায় কৃষি খাতেও অভূতপুর্ব উন্নয়ন হয়েছে গত ১০ বছরে। সরকারের কৃষি-বান্ধব কার্যক্রমের ফলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও কৃষি খাতের উন্নয়নে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে গত দশ বছরে দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন বেড়েছে ৩০ শতাংশেরও বেশি। হেক্টরপ্রতি ধানের উৎপাদন তিন গুণের বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সময়টাতেই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ধান রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। এছাড়া জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়। বিশ্বে ফল উৎপাদন বৃদ্ধির হারও এখন বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি। সব মিলিয়ে, বাংলাদেশকে বিশ্বের দশম বৃহত্তম খাদ্য উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

নারী অধিকার সুরক্ষায়ও শেখ হাসিনা স্থাপন করেছেন অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত। ক্ষমতায় আসার পরপরই ২০১০ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৭ সালের নারী উন্নয়ন নীতি অনুমোদন করে। এছাড়া জেন্ডার ইক্যুটি ইনডেক্স অনুযায়ী নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ঈর্ষণীয় অবস্থানে রয়েছে।

শেখ হাসিনার দক্ষ দেশ চালনায় বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতিও হ্রাস পেয়েছে । ২০০১ থেকে ২০০৫ সালে বাংলাদেশ যেখানে ছিল দুর্নীতিতে প্রথম, ২০১০ সালে দুনীতি ধারণাসূচকে বাংলাদেশ দুর্নীতির ক্ষেত্রে পিছিয়ে যায় দ্বাদশ স্থানে।

দরিদ্র ছিন্নমূল মানুষের ভাগ্যোন্নয়নেও কাজ করে চলেছেন শেখ হাসিনা। এই উদ্দেশ্যে ২০১২ সালে ৫০ হাজার ভূমিহীণ, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবারকে পুনর্বাসন এবং সিডর ও আইলায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার উন্নয়ন, উপজাতীয়দের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ গৃহ নির্মাণের লক্ষ্যে ১ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয়ন-২ প্রকল্প গ্রহণ করেছেন তিনি। ৪৮ হাজার দরিদ্র-অসহায় মানুষকে আইনী সহায়তাও প্রদান করা হয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে। এছাড়া “গুচ্ছগ্রাম” প্রকল্পের আওতায় ১৬৩টি গুচ্ছগ্রামে ৭ হাজার ১৭২টি ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন ও রাজধানী ঢাকার বস্তিবাসী ও নিম্নবিত্তদের পুনর্বাসনে সরকারি জমিতে ১ হাজার ৬৩২টি ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগও গ্রহণ করেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার।

স্বাস্থ্য খাতেও শেখ হাসিনা সরকারের অবদান চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। শিশু মৃত্যুর হারের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সফলতা দেখিয়েছে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। ২০০৭ সালে দেশে যেখানে শিশু মৃত্যুর হার ছিল প্রতি হাজার জীবিত জন্মে ৬৫ জন সেখানে এই হার ২০১৩ সালে ৩৬ জনে হ্রাস পায়। এছাড়া বাংলাদেশে সার্ক দেশসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯১ শতাংশ স্যানিটেশন কভারেজ অর্জিত হয়েছে। দেশের প্রান্তিক-দরিদ্র রোগীদের সেবাদানের জন্য গৃহীত কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পও গত ১০ বছরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।

গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সহনশীলতা প্রদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর শাসনামলে ত্রিশের অধিক টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচারের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। এছাড়া অবাধ তথ্য প্রবাহ এবং  জনগণের তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন এবং দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে তথ্য ও সেবাকেন্দ্র চালুর মতো উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে শেখ হাসিনার শাসনামলেই।

এছাড়া মানবাধিকার সংক্রান্ত জাতিসংঘ স্বীকৃত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড `প্যারিস পিন্সিপল` এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা এবং জাতিসংঘে বিশ্বশান্তির মডেল উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রমাণ করে দিয়েছেন মানবাধিকারে বিশ্বাসী অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় একজন রাজনীতিবিদ তিনি।

শিক্ষা ও গবেষণা খাতকেও অসম্ভব গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ২৩ জন শিক্ষকের চাকুরী জাতীয়করণ করেছিলেন। ৪০ বছর পর বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত ১ লক্ষ ৩ হাজার ৮৪৫ জন শিক্ষকের চাকুরী জাতীয়করণ করেন। বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলমের নেতৃত্বে একদল গবেষকের পাটের জীবন-রহস্য উন্মোচন করেন ২০১০ সালেও। এছাড়া দেশীয় ব্র্যান্ডের দোয়েল ল্যাপটপ বাজারজাতকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা সরকারের সাফল্য নিন্দুকও স্বীকার করবে। এরই মধ্যে স্থাপিত সব কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে হয়েছে ১৬ হাজার ৪৬ মেগাওয়াট। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৯০ শতাংশই এখন বসবাস করে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায়। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকারের তাৎক্ষণিক, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন কার্যক্রমের ফলে বিদ্যুৎ খাতে এ সাফল্য এসেছে।

ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের অমীমাংসীত সমস্যা ছিটমহল বিনিময় ও ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে সমুদ্র সীমার বিরোধের নিষ্পত্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনৈতিক দক্ষতার আরেকটি উদাহরণ।

এছাড়া ২০১৮ সালের ১১ মে মহাকাশে উৎক্ষেপণ বহুল প্রতিক্ষীত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইন- ১ উৎক্ষেপনের মাধ্যমে বিশ্বের স্যাটেলাইটের মালিক দেশের এলিট ক্লাবে প্রবেশ করে বাংলাদেশ।  যুক্তরাষ্ট্রের  ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেস এক্সের ফ্যালকন রকেটে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানো হয়।

কৃষি থেকে মহাকাশ, শিক্ষা থেকে সমুদ্রতল সবকিছুতেই এখন বাংলাদেশের জয়জয়কার। বাংলাদেশের এই ইতিবাচক রূপান্তরের পেছনে মূল কৃতিত্বটা বর্তায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ওপরই। কিন্তু উন্নয়নের পথে এই অগ্রযাত্রা সহজ ছিল না। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে তুলে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জঙ্গিবাদ, দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র, শরনার্থী সমস্যার মতো বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেল আকরতে হয়েছে।

এর মধ্যে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া ছিল শেখ হাসিনার অন্যতম সাহসী সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশ জনবহুল দেশ। তারপরও ২০১৭ সালেকয়েক মাসের ব্যবধানে ১০ লাখের বেশি  রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গ জনগোষ্ঠীকে আশ্রয়ের পাশাপাশি ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়ে বিশ্বে নজির সৃষ্টি করেন। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে আশ্রয় দিয়ে মানবতার পরিচয় দিয় শেখ হাসিনা ‘মাদার অব ইউম্যানিটি’ হিসেবেও স্বীকৃতি পান বিশ্বব্যাপী।

এছাড়া শেখ হাসিনার শাসনামলেই হলি আর্টিজানে ও শোলাকিয়া ঈদগাহে জঙ্গি হামলা সংঘটিত হয়। কিন্তু শেখ হাসিনা সকল জঙ্গি তৎপরতা কঠোর হস্তে দমন করেন। চলতি বছরেই আবার সরকারি চাকরির কোটা সংস্কার আন্দোলন ও শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ক্যামোফ্লেজে রাষ্ট্রবিরোধী ও সরকার বিরোধী চক্র মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্বের কারণে সফল হতে পারেনি দুর্বৃত্তরা।

আর ক্ষমতায় আসার পরপরই সংঘটিত বিডিআর বিদ্রোহ তিনি যেভাবে ঠান্ডা মাথায় দমন করেছিলেন তার প্রশংসা না করে পারা যায় না। দ্রুততম সময়ে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছিলেন শেখ হাসিনা। বর্তমানে এই মামলার রায়ও হয়ে গেছে।

এই অবদানগুলোর কারণে গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন দেশী ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, শিশু মৃত্যু হ্রাসসংক্রান্ত MDG-4  অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১০ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অ্যাওয়ার্ড, বিশ্বখ্যাত ‘ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পদক ২০০৯’, তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে নারী ও শিশু মৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড ২০১১: ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট হেলথ, বাংলা অ্যাকাডেমির সম্মাননা সূচক ফেলোশিপ প্রভৃতি।

প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কারের তালিকা কিন্তু এখানেই শেষ নয়। ইউনেস্কোর কালচারাল ডাইভারসিটি পদক ও শান্তিবৃক্ষ পদক (Peace Tree Award), জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকি মোকাবিলায় সাফল্য প্রদর্শনের জন্য জাতিসংঘের চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ, প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ও ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’, গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কারের মতো পুরস্কারও আছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঝুলিতে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সমৃদ্ধ ও আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন কিন্তু অকালে ঘাতকের বুলেটে নির্মমভাবে নিহত হওয়ায় সে স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। বর্তমানে পিতার সেই অপূর্ণ স্বপ্ন পূরণেই কাজ করে চলেছেন শেখ হাসিনা। গত ১০ বছরে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের সব সেক্টরে যে অভূতপুর্ব উন্নতি হয়েছে তাতে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা বজায় রাখতে শেখ হাসিনাকে আবার তৃতীয় মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ করে দিতে হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলায় গণ প্রতিরোধের মুখে মন্ত্রী-এমপিদের মাই ম্যানরা

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

এবার উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা তাদের আত্মীয় স্বজন এবং নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিদেরকে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করেছেন এবং তারা এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে তাদের মাই ম্যানদেরকে জয়ী করার জন্য চেষ্টাও চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজর এড়ায়নি প্রসঙ্গটি। আর এ কারণে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে এ ব্যাপারে একাধিকবার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসব সতর্কবার্তা সত্ত্বেও মন্ত্রী-এমপিরা এলাকায় তাদের আধিপত্য বজায় রাখা এবং নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য মাই ম্যানদের প্রার্থী করেছেন। কেউ আত্মীয় স্বজনকে, কেউ নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন। আর এই প্রার্থী করার ফলে এলাকার মধ্যে বিরাজ করছে এক ধরনের অসন্তোষ, ক্ষোভ এবং বিরূপ প্রতিক্রিয়া।

আর আওয়ামী লীগ দলগতভাবে যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবে না এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন নির্দেশনা দিয়েছেন যে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না, তখন মন্ত্রী-এমপিদের মাই ম্যানদের বিরুদ্ধে একটি গণ প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে উপজেলার নির্বাচনগুলোতে।

একাধিক উপজেলায় দেখা গেছে, মন্ত্রী-এমপিদের পছন্দের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগ একাট্টা হয়েছে এবং স্থানীয় তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে তারা কাজ শুরু করেছেন। যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিরা এলাকায় তাদের নিজেদের প্রার্থী দিয়েছেন তারা এখন নিজস্ব বলয়ের বাইরে মূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাচ্ছেন না।

অবশ্য কোন কোন উপজেলায় আগেই প্রভাব বিস্তার শেষ করে ফেলেছেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রার্থীরা। তারা কোথাও কোথাও একক প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। কোথাও কোথাও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত করার জন্য চেষ্টা করছেন। কিন্তু যে সমস্ত এলাকায় এটা সম্ভব হয়নি, যে সমস্ত এলাকায় তৃণমূল শক্তিশালী সেই সমস্ত এলাকাগুলোতে আওয়ামী লীগের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে পড়ছেন উপজেলার প্রার্থীরা। ফলে শেষ পর্যন্ত যদি উপজেলা নির্বাচনে প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরপেক্ষ থাকে তাহলে বেশিরভাগ উপজেলায় মন্ত্রী-এমপিদের মাই ম্যানদের ভরাডুবি ঘটবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

বিভিন্ন উপজেলায় যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, যেহেতু আওয়ামী লীগ সভাপতি মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদেরকে নির্বাচনে না দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন, কাজেই মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়াটা হল একেবারেই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন এবং এই সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করাটা নেতাকর্মীদের দায়িত্ব।

আর এ কারণেই নেতাকর্মীরা এখন মন্ত্রী-এমপিদের পছন্দের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন এবং তারা তাদের বিকল্প প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন। এর ফলে উপজেলা নির্বাচন একটি নতুন মাত্রা এবং প্রতিযোগিতার আবহ সৃষ্টি করেছে।


উপজেলা নির্বাচন   গণ প্রতিরোধ   মন্ত্রী-এমপি   মাই ম্যান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এবার বেকায়দায় আলাল

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এবার বেকায়দায় পড়েছেন। ডিবিসি চ্যানেলের রাজকাহন অনুষ্ঠানে একটি বক্তব্য দিয়ে বিএনপির নেতাদের তোপের মুখে পড়েছেন তিনি। আর তোপের মুখে পড়ে যথারীতি ইউটার্ন নিয়েছেন এবং বলেছেন যে তিনি এটি বলেননি।

কিন্তু সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ভুলে গেছেন যে, ডিবিসির রাজকাহনে প্রচারিত তার বক্তব্য এখন ইউটিউবে ভাসছে। সেখানে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যা বলেছেন সেটি প্রচারিত হচ্ছে। সেটি বিকৃত করার কোন সুযোগ নেই। তিনি কোন সাক্ষাৎকার দেননি বা তিনি কোন পত্রিকার সাংবাদিকের কাছে মৌখিকভাবে এ বক্তব্য দেননি। তিনি দিয়েছেন সরাসরি টেলিভিশনে এবং এটি লাইভ প্রচারিত হয়েছে। শুধুমাত্র লাইভ প্রচারিতই নয়, বরং এই বক্তব্য এখন ইউটিউবে ভাসছে।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল রাজকাহনে কী বলেছেন তা একটু দেখে নেওয়া যাক। তিনি বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বাদ দিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি কি না সে বিকল্প চিন্তা আমাদের মধ্যে আছে। তিনি জানান, প্রয়োজনে বেগম জিয়া এবং তারেক রহমানের পক্ষ থেকে কমিটি বা বডি বাছাই করা হবে। যারা তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত নেবে।

আলালের এই বক্তব্য বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিএনপির লন্ডনে পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এই বক্তব্য সম্পর্কে আলালের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন বলেও জানা যায়। এছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও জানতে চান যে, কেন আলাল এই ধরনের কথা বললেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন যে, বিএনপিতে বেগম খালেদা জিয়া বা তারেক জিয়ার বিকল্পের কোন ভাবনা নেই এবং এ ধরনের কোন আলোচনাও হয়নি। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে তারেক জিয়া যথেষ্ট যোগ্যতা এবং পরিপক্কতার সাথে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের বাইরে বিএনপিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন না গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

এই বক্তব্য যখন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তখন আলাল তোপের মুখে পড়েছেন। আলালকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলেও দলের ভিতর তিনি ব্যাপক তিরস্কার এবং ভর্ৎসনার মুখোমুখি পড়ছেন।

এরকম পরিস্থিতিতে অন্যান্য রাজনীতিবিদরা যা করেন, আলাল সেই একই কাণ্ড করেছেন। তিনি তার অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে এরকম বক্তব্য তিনি দেননি। তার বক্তব্য, মিথ্যা এবং ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলেও মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল তার এক প্রতিবাদ বার্তায় বলেছেন। অথচ বক্তব্যটি এখনও ডিবিসিতে রাজকাহন অনুষ্ঠানে পাওয়া যাচ্ছে।

তাছাড়া বিএনপির নেতারাও এই বক্তব্যগুলো দেখেছেন। যে কারণে আলালের এই প্রতিবাদ বা তিনি এ ধরনের কথা বলেননি বলে যে মন্তব্য করছেন তা তারেক জিয়া বা অন্য নেতাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না। এই বিশ্বাসযোগ্য না হওয়ার কারণে বেকায়দায় পড়েছেন বিএনপির নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। সামনের দিনগুলোতে এখন বিএনপি আলালের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার বিষয়।

উল্লেখ্য, এর আগে বিতর্কিত বক্তব্য রেখে বিএনপির অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতাই দল থেকে ছিটকে পড়েছেন। যাদের মধ্যে শওকত মাহমুদ অন্যতম। আলালকেও সেই পরিণতি বরণ করতে হবে কী না সে নিয়ে অনেকের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে।


বিএনপি   যুগ্ম মহাসচিব   সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএন‌পির আন্দোলন সফল হ‌বে না তা আগেই বুঝেছিলাম: জি এম কাদের

প্রকাশ: ০৮:৫৩ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর দ‌লের তৃণমূ‌লের নেতা‌দের মতামত উপেক্ষা করে কে‌ন নির্বাচ‌নে অংশ নি‌য়ে‌ছি‌লেন তা জানিয়েছেন জাতীয় পা‌র্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। দলটির কেন্দ্রীয় কমি‌টির সাম‌নে তিনি বলেছেনে, ‘বিএন‌পির আন্দোলন সফল হ‌বে না তা আগেই বুঝেছিলাম। তাই দলের অস্তিত্ব টি‌কি‌য়ে রাখ‌তে নির্বাচ‌নে অংশ নি‌য়ে‌ছিলাম। তবে ভোট ভালো হয়নি।’

শ‌নিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ব‌র্ধিত সভায় এসব কথা ব‌লেন তিনি।

গত বছ‌রের ১২ ন‌ভেম্বর ব‌র্ধিত সভায় জাপার নেতারা নির্বাচন বর্জনের প‌ক্ষে মতামত দেন। ত‌বে আওয়ামী লী‌গের কাছ থে‌কে ২৬ আস‌নে ছাড় পে‌য়ে নির্বাচ‌নে অংশ নেন জি এম কা‌দের।

নির্বাচ‌নের আগের প‌রি‌স্থি‌তি ব্যাখ্যা ক‌রে কেন্দ্রীয় ক‌মি‌টির সভায় বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের বলেন, ‘৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে বৈঠকে করে পরিষ্কার বুঝেছি, তিনটি বিদেশি বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে এবং নির্বাচন সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তারা নয়, আরও বেশ কয়েকটি বিদেশি শক্তি আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত ছিল।

নির্বাচনে অংশগ্রহ‌ণের প্রশ্নে নেতাকর্মীদের ম‌ধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল জা‌নি‌য়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্বাচন বন্ধ করে কোনো দেশে সরকার পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই জাতীয় পার্টি নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করছে। নির্বাচনের আগে বর্ধিত সভায় নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মতামত দেওয়া হয়েছিল। ভোটে না গেলে ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রাখা যাবে কি না সন্দেহ ছিল, তাই নির্বাচনে গিয়েছি। আপনারা আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। ভোটের আগ মুহূর্তে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তখন সুষ্ঠুভাবে পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করেছি।

মনে হয়েছে, বিভিন্ন বিদেশি শক্তি বিভিন্নভাবে নানা দিকে নিচ্ছিলেন। আর বিএনপির আন্দোলন নিয়ে পরিষ্কার ধারণা ছিল, তারা সফল হবে না। আন্দোলন চলাকালে তৃতীয় শক্তি এসে সরকার পরিবর্তন করে, এমন ইতিহাস বাংলা‌দে‌শে নেই। ফলে, বিএনপির ১ কিংবা ১০ লাখ বা ১ কোটি লোক নিয়ে রাস্তায় নামলেও বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না, তা বুঝ‌তে পে‌রে‌ছিলাম’।

বি‌রোধীদলীয় নেতা ব‌লেন, বিএনপি ও জামায়াত আন্দোলনে পরাস্ত হয়ে জাতীয় পার্টিকে দোষ দিচ্ছে। তবে এটা ঠিক নির্বাচন ভালো হয়নি। সরকার জাতীয় পার্টিকে গৃহপালিত দল হিসেবে দেখতে চায়, যা কখনও সম্ভব নয়। জাতীয় পার্টি কখনোই অনুগত বিরোধী দল ছিল না। এবং জাতীয় পার্টি গৃহপালিত বিরোধী দল হতে রাজি না।


জাতীয় পা‌র্টি   জাপা   জি এম কাদের   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মে দিবসে নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে বিএনপি

প্রকাশ: ০৮:১০ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস (মে দিবস) উপলক্ষ্যে রাজধানীতে শ্রমিক সমাবেশ করবে বিএনপি। আগামী ১ মে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান। 

তিনি বলেন, আগামী ১ মে শ্রমিক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। এছাড়া দলের অন্যান্য নেতারাও এই সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন।

এর আগে, গতকাল খালেদা জিয়াসহ দলের নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ ঘোষণা করেছিল বিএনপি। কিন্তু তীব্র গরমের কারণে পরে সেই সমাবেশে স্থগিত করা হয়।


মে দিবস   নয়াপল্টন   সমাবেশ   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনকে কঠোর বার্তা দিবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্টু ও নিরপেক্ষ করার জন্য কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবেন। এ ব্যপারে তিনি প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশনা দিতে যাচ্ছেন বলে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরই মন্ত্রী পরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে কথা বলবেন। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে যেন কোন অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা না হয়, প্রশাসনের বিরুদ্ধে যেন কোনরকম পক্ষপাতের অভিযোগ না আসে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট অনুশাসন জারি করবেন বলেও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

উল্লেখ্য, আগামী ৮ মে প্রথম পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছে না। উপজেলা নির্বাচন যেন প্রভাবমুক্ত থাকে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদেরকে প্রার্থী না করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও নির্বাচনের মাঠে মন্ত্রী-এমপিরা প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ বৈঠকে আশঙ্কা করা হয়েছে যে, উপজেলা নির্বাচনকে মন্ত্রী-এমপিরা প্রশাসনকে ব্যবহার করতে পারেন, তাদের পক্ষের প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য। আর এটি যেন না হয়, সেজন্যই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছু কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

একদিকে তিনি যেমন দলের নেতা-কর্মীদের বলেছেন যে, দলের নেতা-কর্মীরা দলীয় পরিচয় ব্যবহার করতে পারবে না। দলীয় প্রতীক দেয়া হচ্ছে না উপজেলা নির্বাচনে। মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনদেরকে না দাড়ানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এবং মন্ত্রী এমপিরা যেন নির্বাচনে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে সেজন্য সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও আওয়ামী লীগের কিছু মন্ত্রী-এমপি তাদের নিজস্ব ব্যক্তিদের নির্বাচনে প্রার্থী করানোর জন্য মাঠে নেমেছেন এবং নির্বাচনে তারা যেন জয়ী হয় এজন্য নানা রকমের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। এ বিষয়টি আওয়ামী লীগ সভাপতির নজরে এসেছে বলেই জানা গেছে। আর একারনেই তিনি প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পৃথক পৃথকভাবে কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিবেন।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী যেসমস্ত নির্দেশনা মাঠ প্রশাসনের জন্য দিতে যাচ্ছেন তার মধ্যে রয়েছে..

১) মাঠ প্রশাসন উপজেলা নির্বাচনে নির্মোহ এবং নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে

২) কোন প্রার্থীর পক্ষে মাঠ প্রশাসন কাজ করবে না এবং কোন চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না

৩) কোন মন্ত্রী-এমপিরা তাদের অন্যায় অনুরোধ করলে তারা শুনবে না এবং সে ব্যাপারে তারা শুনবে না। এজন্য ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে তারা তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করবেন

৪) আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন সুষ্টু করার জন্য কাজ করবেন এবং কোন ভাবেই যেন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা না হয়, সেজন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে।

৫) যাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ উঠবে তাদের ব্যাপারে আইনগত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও নির্দেশনায় দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি চাচ্ছেন উপজেলা নির্বাচনকে একটি অবাধ সুষ্টু নিরপেক্ষ করতে। একটি ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি করাতে। যেন সাধারণ মানুষ ভোট কেন্দ্রে যায় এবং উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট হয়।


উপজেলা নির্বাচন   প্রশাসন   প্রধানমন্ত্রী   শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন