নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৫ অক্টোবর, ২০১৮
দীর্ঘদিন ধরে যারা বিএনপির বুদ্ধিজীবী কিংবা থিংক ট্যাংক হিসেবে কাজ করতেন। বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। লোকে যাদের খালেদা জিয়ার চার দরবেশ বলে ডাকতেন। বিএনপির জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করার পরে তাঁরা নীরব কেন? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
বিএনপির থিংক ট্যাংক এবং ঘনিষ্ঠজনের মধ্যে যার নাম সর্বপ্রথমে আসে, তিনি শফিক রেহমান। বেগম খালেদার বক্তৃতা লেখক হিসেবেও বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন। তিনি যায় যায় দিন পত্রিকার সম্পাদক এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত। তিনি দীর্ঘদিন জেল খেটে এখন নিভৃতে সময় কাটাচ্ছেন। এখন আর বিএনপির কোন কার্যক্রম কিংবা কর্মসূচীতে তাকে দেখা যায় না। এমনকি বিএনপি এখন যে পেশাজীবিদের নিয়ে বৈঠক করার উদ্যোগ নিয়েছে সেখানেও তিনি আসছেন না বলে জানা গেছে। তিনি এই যুক্তফ্রন্টের ব্যাপারে অত্যন্ত নেতিবাচক ধারনা পোষণ করেছেন। তিনি মনে করছেন, এই ঐক্যফ্রন্টের ফলে বাংলাদেশে বিএনপি যে জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক ধারণা সুচনা করেছিল সেই ধারনার মৃত্যু ঘটছে। এটা বিএনপির নি:শোষিত হওয়ার একটি প্রক্রিয়া মাত্র।
একইভাবে আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। যিনি বিএনপির একজন অন্যতম থিংক ট্যাংক হিসেবে পরিচিত। বিএনপি জামাত ঐক্যের প্রতীকি রুপ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। সেই মাহমুদুর রহমানও বর্তমান সরকারের আমলে কারাভোগ করেন। আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হন। সর্বশেষ তিনি একটি মামলার হাজিরা দিতে গিয়ে কুষ্টিয়ায় নিগৃহীত হয়েছেন। ওই সময় তিনি চিকিৎসার জন্য মালেয়শিয়া গিয়েছেন। তিনিও এই খামতির ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেছেন। তাকেও বিএনপির কোন কর্মকান্ডে দেখা যাচ্ছে না।
২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপর্যয়ের পরে ফরহাদ মাজহারও বিএনপির অন্যতম থিংকট্যাংক হিসেবে পরিচিত পান। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার অত্যান্ত ঘনিষ্ঠ ব্যাক্তি হিসেবে আভির্ভূত হন। তার সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার একাধিক বৈঠকের খবর সে সময়ে গণমাধ্যমে আসে। ফরহাদ মাজহার বিএনপিকে ইসলামি করণ করার অন্যতম পথিকৃত। এই ফরহাদ মাজহার মাঝে একটি নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন। তখন স্বেচ্ছায় অন্তর্ধান হন, পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। তিনিও বিএনপির নতুন মেরকরণ নিয়ে অত্যান্ত নাখোশ বলে জানা গেছে।
আরেকজন হলেন ড. এমাজউদ্দীন আহমদ। সাবেক এই উপাচার্য খালেদা জিয়ার অত্যান্ত ঘনিষ্ঠ ব্যাক্তি হিসেবে পরিচিত। বিএনপির বুদ্ধিজীবীদের নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি যে ঐক্যফ্রন্ট করেছে, সে ব্যাপারে এমজাউদ্দীনও নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেছেন। তিনিও ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে সর্বাত্নক দূরে সরিয়ে রেখেছেন।
অর্থনীতিবিদ ড. মাহাবুবুল্লাহও বিএনপির থিংক ট্যাংক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিএনপির অর্থনৈতিক ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন বলে জানা যায়। বিএনপির এই মেরুকরণের ফলে সাম্প্রতিক সময় তিনি লোকচক্ষুর আড়ালেই থাকেন। প্রকাশ্যে এ নিয়ে কোন কথা বলতে আগ্রহী নন তিনি।
বিএনপি এই পরীক্ষিত ত্যাগী বুদ্ধিজীবীরা কি তাহলে এই ঐক্যফ্রন্ট গঠন হওয়ার পর সরে গেলেন?এখান থেকেই কি নতুন বিএনপির সূচনা হলো? বিএনপি যে আদর্শ নিয়ে গঠিত হয়েছিল। সে আদর্শ কি বিএনপি এই ঐক্যফ্রন্টের মাধ্যমে বিসর্জন দিল? সেটাই সর্বমহলে প্রশ্ন!
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।