নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ৩১ অক্টোবর, ২০১৮
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দণ্ডিত হওয়ার কিছুদিন আগে বিএনপির গঠনতন্ত্রে দলের নির্বাহী কমিটির পদে থাকা ও দল থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া সংক্রান্ত ৭ নং ধারা সংশোধন করা হয়। এই ৭ নং ধারা নিয়ে সংশোধিত অংশ গ্রহণ না করতে আজ বুধবার ইসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্ট বলেছে, বিএনপির গঠনতন্ত্রের যে ৭ ধারা বিলোপ করেছিল, সেটি গ্রহণ না করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ের পর রায়ের সার্টিফাইড কপি নির্বাচন কমিশনের কাছে যাবে। গঠনতন্ত্রে যে সংশোধন এনেছিল বিএনপি, নির্বাচন কমিশন সেটি বাতিল করে দেবে। হাইকোর্টের আদেশ পালন করা তাদের বাধ্যতামূলক। কাজেই, এর বিকল্প নেই।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, ‘কোর্টের আদেশের কথা আমরা শুনেছি। আমরা যথাসময়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, হাইকোর্টের যে আদেশ রয়েছে, সেটি আমি এখন পর্যন্ত জানি না। হাইকোর্ট যদি এ রকম আদেশ দিয়ে থাকে, তাহলে আমরা এটাকে চ্যালেঞ্জ করবো। চ্যালেঞ্জ করে আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাবো।
তিনি বলেন, ‘দলের আভ্যন্তরীণ গঠনতন্ত্র হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ হতে পারে না। এটা একটা হাস্যকর ব্যাপার। রায় দেখে আমি বিস্তারিত জানাবো।
খালেদা জিয়ার সাজা নিয়ে বিএনপিতে এমনিতেই সংকট চলছে। আবার আগামীকালের সংলাপ নিয়ে দলের মধ্যে বিভক্তি চলছে। এর মধ্যে নতুন করে ৭ ধারা বাতিল করার ফলে এটা স্পষ্টত, খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়া বিএনপির কোন পদে থাকতে পারবেন না। এখন প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে বিএনপির নেতৃত্ব কে নেবে?
হাইকোর্টের আদেশ পালিত হলে, দলের চেয়ারপার্সনের পদ থেকে বেগম জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদ থেকে তারেক জিয়াকে সরে যেতে হবে। তখন বিএনপি হয়ে যাবে একটি নেতৃত্বশূন্য রাজনৈতিক দল। তাহলে এখন বিএনপির নেতৃত্ব কে পাবে?
সেই প্রেক্ষিতে এখন বিএনপির মধ্যেও চিন্তা-ভাবনা চলছে, যদিও হাইকোর্টের এই আদেশ কার্যকর হয়, সেক্ষেত্রে তাদের কি হবে। এমনিতেই হাইকোর্টের আদেশ নিয়ে দলের মধ্যে তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। হাইকোর্ট তাদের পক্ষে কোন রায় দিতে পারে নি। জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় খালেদা জিয়ার দন্ড, তারেক জিয়ার মামলাসহ কোন মামলায়ই হাইকোর্ট বা উচ্চ আদালতে তাদের পক্ষে কোন রায় হয়নি। কাজেই, এ রায় যে তাদের পক্ষে আসবে, তা নিয়ে বিএনপির নিজের মধ্যেই এখন সংশয় রয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির মধ্যে এখন নতুন আলোচনা চলছে। কার হাতে যাবে বিএনপির নেতৃত্ব? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদ- দলের মধ্যে পূর্ণ কর্তৃত্ব এদের কারোরই নেই। এদেরকে কেউ পছন্দ করে, কেউ অপছন্দ করে। এদের পক্ষে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা সম্ভব নয়।
দলের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর । তবে বিএনপির কেউই মনে করে না যে তিনি দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম।
প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান আসতে পারেন। খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক জিয়ার স্ত্রী জোবায়দা রহমান তাঁর পাসপোর্ট স্যারেন্ডার করেছেন। যে কারণে তাঁর এখন বাংলাদেশে আসার কোন সম্ভাবনা নেই। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দারও নেতৃত্ব দিতে পারেন। তবে তিনি তেমন একটা পরিচিত মুখ নন। এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির নেতৃত্ব একটা নতুন সংকটের মুখে পড়েছে। কে হচ্ছে বিএনপির নেতা?
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।