নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ০৫ নভেম্বর, ২০১৮
প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীকে চেয়ারম্যান করে গত অক্টোবরেই কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টের অনুমোদন দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রোববার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইনের বিধান মোতাবেক আগামী ৩ বছরের জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোদাচ্ছের আলী বাংলা ইনসাইডারের মুখোমুখি হয়েছেন। কথা বলেছেন কমিউনিটি ক্লিনিক সংক্রান্ত তাঁর স্বপ্ন ও পরিকল্পনা বিষয়ে।
বাংলা ইনসাইডার: এই দায়িত্বটা পেয়ে আপনার অনুভূতি কী?
ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী: জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আমার সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত দায়িত্বটি আমি পেয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর একটি আমানত আমাদের ওপর দিয়েছেন, যার প্রধান হচ্ছি আমি। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার একটি আমানত তিনি আমাকে বিশ্বাস করে দিয়েছেন এরপর আমার চেয়ে সৌভাগ্যবান আর কেউ হতে পারে না। এর সমমানের হয়তো আছে, কিন্তু বাংলাদেশে এর চেয়ে বড় কোনো দায়িত্ব, সম্মানিত দায়িত্ব আর নেই।
বাংলা ইনসাইডার: কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন সভাপতি হিসেবে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আপনার পরিকল্পনা কী?
ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী: কমিউনিটি ক্লিনিকের অ্যাডভাইজরি কমিটির সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি আমি। কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন, ২০১৮-এর ধারা ৯(১) এর বিধান মোতাবেক ১৫ সদস্যের সমন্বয়ে আমাকে চেয়ারম্যান করে ৩ বছরের জন্য ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ সাল থেকেই কমিউনিটি ক্লিনিক করার জন্যই একদমই ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নিয়ে কীভাবে বিল্ডিং হবে, কীভাবে কোথায় কী কাজ হবে সে বিষয়ে কাজ শুরু করেছেন আর তখন থেকেই আমি তাঁর সঙ্গে কাজ করেছি। সে সময় সচিব ছিলেন মোহাম্মদ আলী। তখন থেকে শুরু করে আমি পরবর্তীতে আমি যখন প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ছিলাম তখনও কমিউনিটি ক্লিনিকে আমি কাজ করতাম। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, আমার সম্পূর্ণ জিনিসটি জানা আছে। আমার মূল দায়িত্ব হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে চাইছেন সেভাবে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার প্রকল্প এই কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প বাস্তবায়িত করা।
আমি মনে করি, সভাপতি হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের জন্য দুটি বিষয় রয়েছে।
প্রথমত, সার্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রয়োগ করার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক করা হয়েছে এই মেসেজ সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া। অনেকে মনে করেন উপজেলায় একটি বড় হাসপাতাল থাকবে আর কমিউনিটি ক্লিনিকে একটি ছোট হাসপাতাল। কিন্তু বিষয়টি এত সহজ না। এখানে একটি ছোট ক্লিনিক থাকবে যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে ডিজাইন করেছেন। কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হবে। আমাদের কর্মীরা প্রয়োজনে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা পৌঁছে দেবে। প্রসূতি স্বাস্থ্যসেবা, পোস্ট প্রেগন্যান্সি স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা হচ্ছে যে এখানে যতদূর সম্ভব নারীদের প্রাধান্য দিতে হবে।
আমার দ্বিতীয় দায়িত্ব হচ্ছে, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিককে ঠিকমতো উপস্থাপন করা। পৃথিবীর সবাইকে জানানো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমনকি মাইক্রো লেভেলে ম্যানেজমেন্ট করে কীভাবে সবার জন্য সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে কমিউনিটি ক্লিনিক দেখেই আন্তর্জাতিক পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমার বিশ্বাস, যদি আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের বিষয়টি বিশ্ববাসীর কাছে ঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারি তাহলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্বে একজন অনন্য স্বাস্থ্য দানকারী হিসেবে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবেন। আমি মনে করি, এই মডেলকে গ্রহণ করে অন্যান্য দেশও উপকৃত হবে এবং এই মডেল দেখতে সবাই বাংলাদেশে আসবে। এক্ষেত্রে আমার রুটিন কাজ যেটা থাকবে সেগুলো আমি চেয়ারম্যান হিসেবে সকলে মিলে পালন করবো।
আমার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হবে টিম বিল্ডিং করা। কারণ আমি একক ব্যক্তি হিসেবে কিছু করতে পারবো না। আমার এই সম্পূর্ণ কমিউনিটি ক্লিনিক টিমকে যেন আমি এক রাখতে পারি আমি সেই চেষ্টা করবো এবং আমার খুব দৃঢ় বিশ্বাস সেটা আমি পারবো। এছাড়া আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবসময়ই যাওয়া যায়। তাঁর নির্দেশনা নিয়ে আমি কাজ করবো।
বাংলা ইনসাইডার: বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি কীভাবে কার্যকরী হতে পারে?
ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী: কমিউনিটি ক্লিনিকের ডিজাইন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুব সরলভাবে করেছেন। আমাদের যেহেতু ইতিমধ্যে ডিজাইন করা আছে, কেউ চাইলে সেই ডিজাইন আমরা সাপ্লাই দিতে পারবো। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়ে বাস্তবে কাজ করছি। গত ১০ বছর ধরে এ ব্যাপারে আমরা ধারাবাহিকভাবে সফল। সুতরাং যে কোনো দেশ এসে দেখে বুঝতে পারবে কীভাবে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা যায়। তাদের যা যা প্রয়োজন হবে, ট্রেনিংয়ের প্রয়োজনও যদি হয় সেটি আমরা সরবরাহ করবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহাখালীতে তিন বিঘা জমি কমিউনিটি ক্লিনিকের হেড অফিসের জন্য বরাদ্দ করেছেন। সেখানে ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হলে ট্রেনিংয়ের বন্দোবস্ত রাখবো যাতে দেশ ও বিদেশের সবাই এসে ট্রেনিং করতে পারে।
বাংলা ইনসাইডার: এর মধ্যে কোনো দেশ কি কমিউনিটি ক্লিনিকের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে?
ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী: যারাই কমিউনিটি ক্লিনিক ভিজিট করেছে তারা সকলেই আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে এ ব্যাপারে আমরা বেসিক্যালি অ্যাপ্রোচ শুরু করতে পারিনি। আমাদের ভবন করতে কিছু সময় লাগবে। তবে এর আগ পর্যন্ত সবার সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করছি, কার্যক্রম চালিয়ে নিতে কী বিকল্প ব্যবস্থা করা সম্ভব। আমার বিশ্বাস, যেভাবে উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন তাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আবার ক্ষমতায় আসবেন। তখন আমরা আবার কাজ শুরু করতে পারবো। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি-মার্চের মধ্য দেশে-বিদেশে পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারবো বলে আশা করি। টিমের সকলের মতামত নিয়ে আমরা কাজ করবো। এটা শুধু প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রজেক্টই না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরাসরি এর সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন। যেমন একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প উনি করে দিয়েছেন কিন্তু কমিউনিটি ক্লিনিকের সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরাসরি সম্পৃক্ত। আমরা যারা টিমে আছি এটা আমার বা আমাদের জন্য বড় এডভান্টেজ। যিনি ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন প্রফেসর ডা. মাখদুমা নার্গিস, তিনি আমার বড় বোনের মতো। আমাদের খুব ভালো টিম। এছাড়া যারা যারা আসছেন প্রত্যেকের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক আছে।
বাংলা ইনসাইডার: কমিউনিটি ক্লিনিক প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের জায়গা। এই স্বপ্ন সফল করতে কী বাধা আসতে পারে এবং এ থেকে উত্তরণের উপায় কী?
ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমে ইউনিয়ন পর্যায়ে ১০ বেডের হাসপাতালের স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে তাঁকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর কন্যা মনে করলেন, পিতার পরিকল্পনার হাসপাতাল থাকবেই, তবে একই সঙ্গে তিনি ছয় হাজার বা এর কাছাকাছি লোকের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক করার স্বপ্ন দেখলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীই এই স্বপ্ন দেখেছেন, স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেছেন এবং সেই স্বপ্নকে স্পর্শ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি আমাদেরকেও তাঁর স্বপ্ন স্পর্শ করানোর সুযোগ দিয়েছেন। এই স্বপ্ন সফল করার পথে আমাদের বাধা হচ্ছে আমাদের অদক্ষতা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর একটি আমানত আমাদের কাছে দিলেন, আমাদের কর্মীরা অদক্ষতা দেখালেই কেবল এটি ব্যর্থ হবে। আমরা যদি প্রধানমন্ত্রী এ আমানত রক্ষা করতে ব্যর্থ হই তা হবে আমাদের সামগ্রিক ব্যর্থতা। তবে আমি এবং আমাদের টিমে যারা আছেন তাঁদের জীবনে ব্যর্থতার চেয়ে সফলতা বেশি। তাই আমরা বিশ্বাস করি আমাদের কাজে কোনো বাধা বড় হয়ে দাঁড়াবে না। এক্ষেত্রে আমাদের বড় সুবিধা হচ্ছে আমরা একে অন্যকে চিনি।
বাংলা ইনসাইডার: কমিউনিটি ক্লিনিকের লোকবল, গঠন পদ্ধতি, পরিচালনা পদ্ধতি নিয়ে যদি সংক্ষেপে কিছু বলেন।
ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী: এখন যে নিয়ম আছে, আমি মনে করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করে পড়ে কিছুটা পরিবর্তন আনতে পারবো। এখন কমিউনিটি ক্লিনিকের সব সেন্ট্রালি পরিচালিত হয়। আমরা চেষ্টা করবো এটা ডিসেন্ট্রালাইজ করতে পারি কি না। আসল কথা হলো লোকবল নিয়োগে, জিনিসপত্র কেনাকাটায় ট্রান্সপারেন্সি কীভাবে আনা যায় সে ব্যাপারে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
বাংলা ইনসাইডার: ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৮- কমিউনিটি ক্লিনিকের সূচনা পর্ব থেকেই আপনি এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের কী অগ্রগতি দেখেছেন?
ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী: প্রথম যখন আমরা শুরু করেছিলাম, ক্লিনিকের শুধু মাত্র দুটো রুম ছিল। এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নতুন ভবনের ডিজাইন একে দিয়েছেন যেখানে রুম থাকবে ৩টি। তাছাড়া বিল্ডিংগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হচ্ছে যা উপরের দিকে সম্প্রসারণ করা যাবে। আর ক্লিনিকের সার্ভিসও আগের থেকে ইম্প্রুভ করেছে কিন্তু আরও অনেক ইম্প্রুভমেন্টের সুযোগ আছে। এছাড়া দিনে দিনে আমরা কাজের মাধ্যমে ট্রেইন্ড হওয়া হচ্ছি। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, স্থানীয় জনগণ যারা এই কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করেন তারা খুব এক্সাইটেড এই বিষয়টি নিয়ে। জনগণের এই সম্পৃক্ততা আমাদের জন্য একটি বিরাট রকমের সাফল্যের চাবিকাঠি। আমরা যদি এই জনগণকে নিজেদের সঙ্গে ধরে রাখতে পারি তাহলে আমাদের সফলতা আসবেই। তবে এই সফলতা দিন দিন বাড়ছে কারণ জনগণ বুঝতে পারছে কমিউনিটি ক্লিনিক তাদের নিজেদেরই সম্পত্তি।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পবিত্র ওমরাহ পালনের
উদ্দেশ্য সৌদি আরব যাচ্ছেন। সঙ্গে থাকছেন তার সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগম।
বৃহস্পতিবার (০২ মে) দুপুর সোয়া ৩টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক
বিমান বন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে তাদের ঢাকা ছাড়ার
কথা রয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার
গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, পবিত্র ওমরাহ পালন শেষে আগামী ৮ মে বিএনপি মহাসচিব মির্জা
ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
মন্তব্য করুন
ভারতের জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে বাংলাদেশ
থেকে আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বুধবার (০১ মে)
আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সাতটি ধাপে জাতীয়
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি এই নির্বাচনে তাদের সার্বিক প্রস্তুতি ও
প্রচারণা দেখানোর জন্য বিদেশি কিছু রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে
একমাত্র আওয়ামী লীগকে তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, ভারতে বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায়। অন্যদিকে,
বাংলাদেশে পরপর চারটি জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে
জয়লাভ করে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এই সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে
যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন পুরো পৃথিবীকে অবাক করেছে।
ভারতের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে
শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ
গণতন্ত্র ভারত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি যে আস্থাশীল এবং
আওয়ামী লীগকে যে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রকৃত বন্ধু
মনে করে, এই আমন্ত্রণ সেই ইঙ্গিতই বহন করে।
বিজেপির নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রচারণা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি পাঠাতে
অনুরোধ করেছে।
এই আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে দলের
তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য ড. সেলিম মাহমুদকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ভারত সফরে
মনোনীত করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, এই সফরটি মূলত পাঁচ দিনের। ১
মে থেকে ৫ মে পর্যন্ত। সফরে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধির সঙ্গে বিজেপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের
বৈঠক রয়েছে। দিল্লির বাইরে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণা সরেজমিনে দেখানোর জন্য বিজেপি
আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিকে ছত্রিশগড়ে নিয়ে যাবে।
ভারতের নির্বাচন ১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছে যা ১ জুন পর্যন্ত চলবে।
৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষিত হবে।
ভারত নির্বাচন বিজেপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন