নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৫ নভেম্বর, ২০১৮
বিএনপির নির্বাচনে যাওয়ার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বেগম জিয়াকে জামিনে মুক্তি দিলে এবং তাঁকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বেগম জিয়া প্যারোল চাইলে সরকার বিবেচনা করবে। তবে তাঁর নির্বাচন করা এবং জামিনের বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ারাধীন বিষয়। আনুষ্ঠানিক সংলাপের আড়ালে সরকার এবং বিএনপির মধ্যে যে দরকষাকষি চলছে তাতে ট্রাম্পকার্ড খালেদা জিয়াই। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, আলোচনার টেবিলে সাত দফার কথা বলা হলেও বিএনপির মূল দাবি আসলে একটাই, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। শুধু বিএনপির নয়, সরকারেরও ট্রাম্পকার্ড বেগম খালেদা জিয়া। সরকার বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে বেগম জিয়াকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করছে। সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে বেগম জিয়াকে বঙ্গবন্ধু থেকে আবার নাজিমউদ্দিন রোডে নিয়ে যাওয়া হবে। তাঁর বিরুদ্ধে ৩৪টি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হবে। বেগম জিয়ার রাজনীতি চিরতরে শেষ হয়ে যাবে। একাধিক সূত্র বলছে, আনুষ্ঠানিক আলোচনার আড়ালে সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে বিএনপির দফায় দফায় বৈঠক চলছে। সেই বৈঠকের কেন্দ্রে বেগম জিয়া।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, একজন নেতা বলেছেন, ‘আমরা জানি, তফসিল ঘোষণার পর ৭ দফার মূল দাবিগুলোর একটি ছাড়া কোনটাই অর্জন করা সম্ভব না। সরকার নির্দলীয় সরকার গঠন করবে না। এমনকি সংসদ ভেঙে দেবে না।’ তাঁর মতে, ‘একটি দাবিই অর্জন করা সম্ভব, তা হলো বেগম জিয়ার মুক্তি।’ বিএনপির অন্য একজন নেতা বলেন, ‘কিছু একটা অর্জন নিয়ে আমরা নির্বাচনে যেতে চাই। সেক্ষেত্রে বেগম জিয়ার মুক্তিটাই হতে পারে সবচেয়ে বড় পাওয়া।’ তাঁর মতে, ‘নির্বাচনের আগে বেগম জিয়ার মুক্তি দিলেই একটি গণজোয়ার সৃষ্টি হবে।’
বিএনপির নেতারা বলেছেন, ‘সংলাপ হলো একটা ফটোসেশন। ড. কামাল হোসেন একজন মধ্যস্থতাকারী। আসল কথাবার্তায় আমরা কাছাকাছি এসেছি।’
সূত্রমতে, প্যারোল এবং জামিনের বিভ্রান্তিতেই আটকে গেছে সরকার-বিএনপির আপসরফা। সরকারের নির্বাচনের আগে বেগম জিয়াকে ছেড়ে দিতে আপত্তি নেই। সরকার চাইছে, এটা হোক প্যারোলে। প্যারোলে মুক্ত হয়ে বেগম জিয়া যেন দেশের বাইরে যান, সেটাই চায় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের এই অবস্থানের সঙ্গে একমত বিএনপির একটি অংশ। বেগম খালেদা জিয়ার প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহাবুব হোসেন, চারমাস আগে থেকেই প্যারোলের পক্ষে। কিন্তু বিএনপির একটি অংশ প্যারোলের পক্ষে নয়। তাদের মতে, বেগম জিয়া জামিনে মুক্ত হয়ে যদি নির্বাচনী প্রচারের সুযোগ পান তাহলে সেটা হবে বিএনপির জন্য বিরাট প্রেরণা। বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, ‘সরকার বেগম জিয়াকে জিম্মি করে বিএনপিকে নির্বাচনে নিতে চাইছে।’ অবশ্য বিএনপি নেতার এই বক্তব্য অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে সরকার শুধু প্যারোল দিতে পারে। তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে, আদালত, নির্বাচনের অযোগ্যও করেছে আদালত। সরকারের এখানে কিছুই করার নেই।’
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।