নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৭ নভেম্বর, ২০১৮
দ্বিতীয় দফা সংলাপের পর, নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে দ্বিধায় পড়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সংলাপ শেষ হওয়ার পর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে আসতে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা প্রায় দুই ঘণ্টা সময় নেন। এসময় ঐক্যফ্রন্টের মাহমুদুর রহমান মান্না সংলাপ সফল হয়নি মর্মে ঘোষণা দিয়ে চূড়ান্ত কর্মসূচির প্রস্তাব করেন। কিন্তু ড. কামাল হোসেন এবং বিএনপি মহাসচিব দুজন এখনই সবকিছু শেষ না করার পক্ষে মত দেন। এই দুই নেতাই নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং আন্দোলন পাশাপাশি চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনোনয়ন জমা দেওয়া পর্যন্ত অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের শেষ সম্ভাবনাটুকু দেখতে চান। ড. কামাল হোসেনও বৈঠকে বলেন, ‘আমরা দেখি তফসিল ঘোষণার পর কী হয়। যদি দেখি যে সরকার পক্ষপাতিত্ব করছে, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না, সেক্ষেত্রে তো আমাদের নির্বাচন থেকে সরে আসার সুযোগ থাকছেই।’ নাগরিক ঐক্যের নেতা মান্না জানতে চান, নির্বাচনে কি বলে যাবেন? আমাদের কোনো দাবিই তো মানল না।’ ড. কামাল হোসেন মান্নার ঐ বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, প্রথম এবং দ্বিতীয় দাবি ছাড়া সবগুলো দাবিই তো প্রধানমন্ত্রী নীতিগতভাবে মেনে নিয়েছেন।
ড. কামাল হোসেন বৈঠকে বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর আমাদের দেখতে হবে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা। এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও এখনই নির্বাচনে না যাওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পক্ষে নন। তিনি মনে করেন, এখন নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেই মনোনয়ন লাভে ইচ্ছুক অনেক বিএনপি প্রার্থী বিকল্পধারা বা নাজমুল হুদার দলে যোগ দেবে। সেক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বাদ দিয়েই সরকার নির্বাচন করতে চাইবে। বিএনপি মহাসচিব তফসিল ঘোষণার পর সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে চান। পাশাপাশি মির্জা ফখরুল এসময় সাংগঠনিক শক্তি ও জনসংযোগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। বিএনপির অবস্থান হলো শেষ পর্যন্ত যদি আন্দোলন করতেই হয়, তাহলে তা মনোনয়নপত্র দাখিলের পর করতে হবে। সে সময় প্রার্থীদের রাস্তায় নামানো সহজ হবে। জেএসডির নেতা আ. স. ম. আব্দুর রবও মনে করেন, নির্বাচন এবং আন্দোলন দুই প্রস্তুতিই এক সঙ্গে নেওয়া প্রয়োজন। তিনি মনে করছেন, সরকার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বোকা বানাতে পারে। তাঁর মতে, আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিলাম না, আন্দোলনের প্রস্তুতি নিলাম। কিন্তু তফসিল ঘোষণার পর দেখলাম কমিশন নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে। সরকার নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপ করছে না, তখন কি করবেন? আ. স. ম. রবের কথার সঙ্গে একমত পোষণ করেন গণফোরাম নেতা মোস্তফা মহসীন মন্টু। তিনি বলেন, প্রার্থী চূড়ান্ত করা শরিকদের জন্য কয়টা আসন ছাড়বে বিএনপি এগুলো এখনই ঠিক করা দরকার। এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০ দলগত ভাবে আমাদের প্রার্থী তালিকা মোটামুটি চূড়ান্ত করা আছে। ঐক্যফ্রন্টের কজন নির্বাচন করবে তা আমরা ঠিক করে ফেলতে পারবো। রাজশাহী থেকে ফিরেই এনিয়ে বসবে ঐক্যফ্রন্ট।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।