নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৮ নভেম্বর, ২০১৮
একাদশ জাতীয় সংসদের বিষয়ে বিএনপির মূল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন লন্ডনে পলাতক দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। তিনি আজ বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে টেলিফোনে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে নির্বাচনের বিষয়ে মতামত নিয়েছেন। নির্বাচন তফসিল ঘোষণা শেষে নির্বাচনের ব্যাপারে তারেক জিয়া তাঁর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বিএনপি নেতাদের জানাবেন বলে জানা গেছে।
বিএনপি ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, আজ তারেক জিয়া লন্ডন থেকে ফোন করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও মির্জা আব্বাসের সঙ্গে কথা বলেন। এদের প্রত্যেকের কাছেই নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে-বিপক্ষে কারণ জানতে চেয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে ফোনে মির্জা ফখরুল বলেছেন, সরকার চাইছে যেন বিএনপি নির্বাচনে না আসে। সেজন্যই বেগম জিয়াকে আজ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিন হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। এখন যদি বিএনপি নির্বাচনে যায়, তাহলে এমন একটা নির্বাচন করা হবে যেখানে বিএনপিকে কোনো স্পেস দেওয়া হবে না। এখন নির্বাচনে গেলে সরকার তার বৈধতার স্বীকৃতি নেওয়ার জন্যই বিএনপিকে ব্যবহার করবে। মির্জা ফখরুল আরও বলেন, নূন্যতম কোনো অর্জন ছাড়া এই নির্বাচনে যাওয়া উচিত হবে না।
নূন্যতম কী অর্জন চান জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে মির্জা ফখরুল বলেন, নূন্যতম বেগম খালেদা জিয়ার যদি জামিন হয় এবং তিনি নির্বাচন না করলেও যদি নির্বাচন পরিচালনার কাজটি তদারকি করতে পারেন, তাহলেই বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিত।
অবশ্য বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। তারেক জিয়াকে মওদুদ আহমেদ বলেছেন, যেহেতু সরকার কৌশল নিয়েছে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার, সেহেতু আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিত। নির্বাচনে যাওয়ার পর যদি দেখা যায়, সরকারের পুতুল হিসেবে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন, কোনো নিরপেক্ষতাই রাখছে না, তখন নির্বাচন বর্জনের একটি প্রক্রিয়া করা যেতে পারে।
অবশ্য নির্বাচনে না গিয়ে আন্দোলনের পক্ষে মত দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও মির্জা আব্বাস। তাঁরা দুজনই তারেক জিয়াকে বলেছেন, স্বল্পতম সময়ের জন্য আন্দোলন করতে হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে মনোনয়ন দাখিলের সময় পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। এমন ঝটিকা আন্দোলন তৈরি করতে হবে, যেন নির্বাচন বাতিল হয় এবং সরকারের পতন।
জানা গেছে, তারেক জিয়া সবগুলো মতামতই শুনেছেন। আর বিএনপি ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, তারেক জিয়া নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে কোনো কথাই বলেননি। বরং তাঁর সব কথাই নির্বাচনে যাওয়াকে কেন্দ্র করে। নির্বাচনের পক্ষেই তিনি সব কথা বলছেন। তারেক সবার কাছেই জানতে চাচ্ছেন, নির্বাচনে গেলে বিএনপির কী কী অর্জন হবে? এছাড়া, এর আগে তারেক জিয়ার সঙ্গে যাঁরা সাক্ষাৎ করেছেন বা কথা বলেছেন, তাঁদের প্রত্যেককেই নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন তারেক জিয়া। যেকোনো পরিস্থিতিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেন তাঁদের।
বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, তফসিল ঘোষণা শেষে দু-একদিনের মধ্যেই তারেক জিয়া বিএনপির আনুষ্ঠানিক অবস্থান জানাতে পারেন। আর তারেকের সিদ্ধান্তটাই বিএনপির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হবে। কারণ, খালেদা জিয়া নির্বাচনে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মতো মানসিক ও শারীরিক অবস্থায় নেই বলে মনে করেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।