নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪৮ এএম, ১৫ নভেম্বর, ২০১৮
নির্বাচন পেছানো নিয়ে বাংলাদেশের দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়েছে। তাদের দাবির মুখে নির্বাচনের তফসিল পেছানো নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে নির্বাচন কমিশন।
গতকাল বুধবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে। সাক্ষাতে ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন কমিশনের কছে তিন সপ্তাহ নির্বাচন পেছানোর দাবি জানায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ বলছে, নির্বাচনের সময় এক ঘণ্টাও পেছানো যাবে না।
নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা এবং নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এক সপ্তাহ পেছানোর পক্ষে। পূর্ব নির্ধারিত ৩০ ডিসেম্বরের সময়সূচি বদলে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষপাতী তাঁরা। এক সপ্তাহ নির্বাচন পেছালে সাংবিধানিক কোনো সমস্যা সৃষ্টি হবে না বলেই মনে করছেন নুরুল হুদা ও মাহবুব তালুকদার। কারণ সহিংসতা বা ভোট জালিয়াতির মতো কারণে যদি কোনো ভোটকেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত হয়ে যায় তাহলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ১০ দিন পর সেসব কেন্দ্রে পুনরায় ভোটগ্রহণ করা হবে। তারপরই নির্বাচনের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। আর সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ পূর্তির পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচন এক সপ্তাহ পিছিয়ে দিলে সংবিধানের এই বিধানের কোনো লঙ্ঘন হবে না।
কিন্তু অন্য তিন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, কবিতা খানম এবং রফিকুল ইসলাম তিনজনই নির্বাচনের তফসিল পেছানোর বিরুদ্ধে। তাঁরা মনে করছেন, বারবার ঐক্যফ্রন্টের চাপের মুখে নতি স্বীকার করে নির্বাচন পেছাতে থাকলে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনই ঝুঁকির মুখে পড়বে। এছাড়া জানুয়ারি মাসে নির্বাচন আয়োজন করলে তাঁরা তিনটি বাস্তব সমস্যা হবে বলে চিহ্নিত করেছেন। জানুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রথম সমস্যা হচ্ছে, তখন স্কুলগুলো সব খুলে যাবে। ফলে কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য স্কুলগুলো পাওয়া যাবে না। দ্বিতীয়ত, যাদের বয়স ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারিতে ১৮ বছর হয়ে যাবে তারা নির্বাচনী আইন অনুযায়ী ভোট দেওয়ার যোগ্য হয়ে যাবেন। কিন্তু বর্তমান ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার কারণে তারা একাদশ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবে না। কাজেই তা নিয়ে একটি আইনি জটিলতা সৃষ্টি হবে। তৃতীয়ত, এবারের নির্বাচনে সবগুলো দল স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী নিয়োগ করার ব্যাপারে একমত হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে যদি জানুয়ারিতে চলে যায় তাহলে সেনাবাহিনীর শীতকালীন মহড়া শুরু হয়ে যাবে। শীতকালীন মহড়া চলাকালে সেনাবাহিনীর পক্ষে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হবে না। এই তিন আপত্তির কারণে তিন নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন পেছানোর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন পেছাবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকের পর।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।