নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০৭ পিএম, ১৭ নভেম্বর, ২০১৮
দীর্ঘ ১২ বছর ক্ষমতার বাইরে আছে একটি দল। অনেক অনেক দিন বিজয়ের স্বাদ পাওয়া হয় না তাদের। স্থানীয় পর্যায়ে কিছু ইলেকশনে যে তারা জেতে না তা নয়, কিন্তু ক্ষমতার জন্যই যারা রাজনীতি করে তাদের কাছে এই জয় যথেষ্ট নয়। তাই জাতীয় পর্যায়ে একটি জয়ের জন্য বুভুক্ষু হয়ে আছে দলটির। বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে যারা একটু খোঁজখবর রাখেন তারা এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কার কথা বলছি। ঠিকই ধরেছেন, বলছি বিএনপির কথা। দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসতে উদগ্রীব হয়ে থাকা দলটি অবশেষে বিজয়ের স্বাদ পেল । তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জিতে নয়, মনোনয়ন পত্র বিক্রির সংখ্যায় আওয়ামী লীগকে হারিয়ে!
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য গত ৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পত্র বিক্রি শুরু হয়, যা শেষ হয় ১২ নভেম্বর। হিসাব অনুযায়ী, এই চারদিনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পত্র বিক্রি হয়েছে সর্বমোট ৪ হাজার ২৩টি। এমনকি কোনো কোনো আসনে ৩০টি বা ৪০টি মনোনয়ন পত্র বিক্রির ঘটনাও ঘটেছে। প্রতি আসনে গড়ে মনোনয়ন পত্র বিক্রি হয়েছে ১৩টিরও বেশি। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পত্র বিক্রির এমন মহোৎসব দেখে সবাই ধারণা করেছিলেন, অন্তত এই বছর মনোনয়ন পত্র বিক্রির এই রেকর্ড কোনো দল ভাঙ্গতে পারবে না। কিন্তু তাদের ধারণা ভুল প্রমাণ করে দিয়ে আওয়ামী লীগকে হারিয়ে দিয়েছে বিএনপি।
আওয়ামী লীগের তিনদিন পর গত ১২ নভেম্বর থেকে মনোনয়ন পত্র বিক্রি শুরু করে বিএনপি। মনোনয়ন পত্র বিক্রি চলে গতকাল শুক্রবার অর্থ্যাৎ ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত। বিএনপির কয়টি মনোনয়ন পত্র বিক্রি হয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ হিসাব এখনো জানা যায়নি। তবে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী জানিয়েছেন, গত পাঁচ দিনে সাড়ে চার হাজারের বেশি মনোনয়ন পত্র বিক্রি হয়েছে যার সংখ্যায় নিঃসন্দেহে আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়-পরাজয় পরের কথা, কিন্তু নির্বাচনের অন্যতম ধাপ মনোনয়ন পত্র বিক্রিতে আওয়ামী লীগকে হারিয়ে দিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে দেখলে বিএনপির নেতাকর্মীদের কেউ দোষ দিতে পারবেন না। কারণ কে না জানে, বিএনপির জন্য যেকোনো ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের চেয়ে বড় কোনো আনন্দের উপলক্ষ আর নেই।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।
সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল তাকে আদেশ করেছিল দায়িত্ব গ্রহণ না করার জন্য। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদটি গ্রহণ করেন। আর তার এই পদ গ্রহণের কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। কিন্তু এই অব্যাহতি শেষ পর্যন্ত টেকেনি। এখন তাকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তারেক জিয়ার এই সিদ্ধান্তে বিএনপির আইনজীবীদের একাংশ যারা মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলীসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, তারেক জিয়ার নির্দেশেই তারা খোকনের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার তারেক জিয়াই তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। মাঝখান থেকে তারেক জিয়া তাদেরকে অসম্মান করবেন বলেও এই সিনিয়র আইনজীবী মনে করেন।
তারেক জিয়ার পরামর্শেই তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে দায়িত্ব না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়াই এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে কথা বলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে যেমন আছেন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদেও বহাল থাকছেন।
বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে মাহবুব উদ্দিন খোকন যদি নির্বাচন করে এবং জিতে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে তাহলে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীরা কী দোষ করল? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত হল বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আর এই ধারাবাহিকতায় বিএনপির বিভিন্ন পেশাজীবীদের নির্বাচনও বর্জন করছে। এর আগে বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ড্যাব চিকিৎসকদের বিএমএ নির্বাচনও বর্জন করেছিল।
প্রকৌশলীদের নির্বাচনেও বিএনপি সরে গিয়েছিল। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন বিএনপি অংশগ্রহণ করল? সেটি যেমন একটি বড় প্রশ্ন, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল যে- একই সিদ্ধান্ত একেক জনের ব্যাপারে এক রকম হবে কেন? এ নিয়ে বিএনপির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ দলের কিছু বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদেরকে বলেছেন, এই সমস্ত কীভাবে হচ্ছে আমি জানি না। আপনাদের যদি কোনও কিছু বলার থাকে আপনারা লন্ডনে যোগাযোগ করেন। এখন বিএনপিতে কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না। কেউ জানছেও না যে কাকে কখন কীভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। যার ফলে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে দলটির মধ্যে।
উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন সে রকম ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি নির্দলীয় ধরনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তারা ব্যবহার করবে না।
অনেক বিএনপি নেতা মনে করেন যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটাই সঠিক ছিল। কিন্তু কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে সেটি তার নিজস্ব ব্যাপার। এ জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা বাঞ্ছনীয় নয় বলেই বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন। আর একারণেই বিএনপির সব নেতারাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন এবং তারা এখন তিক্ত-বিরক্তও বটে।
বিএনপি রাজনীতি মির্জা ফখরুল তারেক জিয়া ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।