নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৩০ পিএম, ২০ নভেম্বর, ২০১৮
বিএনপি’র দলীয় গঠনতন্ত্রের ৭ ধারার সংশোধন নিয়ে আদালতের যে আদেশ আছে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সেটা বাস্তবায়ন না করে তারেক জিয়ার অবৈধ প্রচার বন্ধ করতে কেন বিএনপি’র চেয়ারপারসনের অফিসের স্কাইপ বন্ধ আর ইন্টারনেট লাইন কাটা হয়েছে তা পরিষ্কার না। এটা করে কি পলাতক ফেরারি সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক জিয়াকে আটকানো যাবে! কার পরামর্শে বিটিআরসি এটা করেছে তা বোঝা যাচ্ছে না। এটা কি সঠিক সিদ্ধান্ত হয়েছে? দেশে এটা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হচ্ছে। এটা ঠিক যে, তারেক জিয়ার প্রচার বন্ধ করা দরকার কারণ আদালত মনে করেন দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক যে কেউ দেশের শান্তি বিনষ্ট করতে পারে। কিন্তু তা কীভাবে তা নিয়ে কি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ৭ই জানুয়ারি ২০১৫ সালে দেওয়া আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে জন্য কি কোনো হোমওয়ার্ক করেনি? এতদিন পরে এসে বিটিআরসি যা করেছে সেটাকে অনেকেই ছেলেমানুষী না বলে, বলছেন ‘বাচ্চামী’।
দুনিয়া বদলে গেছে। এখন সারা দুনিয়া জুড়ে চলছে অর্থনৈতিক রাজনীতি। টাকা বা অর্থ যার মূল। টাকা দিয়ে অনেক কিছুই হয় এখন। তাই অবৈধ টাকার কুমির তারেক জিয়া কেন নিজেকে বাঁচাতে তার কাছে থাকা অবৈধ টাকার ব্যবহার করবে না!
কোনো দেশের উন্নতি হতে থাকলে ব্যবসার ধরণ বদলায়। প্রাইমারি, সেকেন্ডারি, টারশিয়ারি বিজনেসের পরে এখন উন্নত দেশে কুয়াটেনারি ব্যবসার রমরমা অবস্থা। কুয়াটেনারি আসলে কম্পিউটিং ও আইসিটি, কনসালটেন্সি, রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্যবসা। ব্যবসার এই খাতের অধীন ‘কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা লিমিটেড (সিএ)’ নামের বড় মাপের একটা ব্রিটিশ পলিটিক্যাল কনসাল্টিং ফার্ম আছে। ‘কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা লিমিটেড (সিএ)’ সারা দুনিয়ায় রাজনীতি আর ভোটের প্রোপ্যাগান্ডা নিয়ে কাজ করে। বিটিআরসি কি মনে করে যে, তারেক জিয়া ব্রিটিশ এই কোম্পানির নাম জানে না!
বিবিসির গবেষণায় ইতিমধ্যেই উঠে এসেছে যে, ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজেপির অভূতপূর্ব জয়ের পেছনে দলের তথ্যপ্রযুক্তি বা সোশ্যাল মিডিয়া সেল ও ধর্মকে ব্যবহার করা হয়েছে। তাদের সহায়তা করেছে ‘কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা লিমিটেড (সিএ)’ নামের ঐ প্রতিষ্ঠান। যেটি আমেরিকার নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ব্যবহার করেছেন বলে বাজারে কথা চালু আছে। এছাড়া রোমিং করা একটা ভারতীয় মোবাইল কোম্পানির সিম বা চাইনিজ কোনো টেলিফোন কোম্পানির সিম কার্ড দিয়ে অনেক বড় ব্যান্ড উইথের নেট নিয়ে তারেক জিয়া কি কথা বলতে পারে না? এটা কি উল্টো হলো না!
গত ৩১ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে হাইকোর্ট এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনকে বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করার নির্দেশ দিয়েছেন সেটা বাস্তবায়ন করলে তারেক জিয়া বা খালেদা জিয়া কেউ আর বিএনপি’র হয়ে নির্বাচনে আসতে পারে না বৈধ ভাবে। বিএনপি’র গঠনতন্ত্রের ধারা আঘাতেই বিএনপি’র সব কূল হারাবে, তা বিএনপি’র ঐ গঠনতন্ত্রেই উল্লেখ আছে, বুঝে নিতে হবে আইনের লোকের কাছে। তাহলে বিটিআরসি’র এই ‘বাচ্চামী’ কেন? তারেক জিয়াকে কি বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না!
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন