নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৫৭ এএম, ২১ নভেম্বর, ২০১৮
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রায় চূড়ান্ত। কিন্তু নিজেদের আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুবান্ধবের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ কেউ থাকলে তাঁদের মাধ্যমে মনোনয়ন পাওয়ার আশায় এখনো তদবির অব্যাহত রেখেছেন মনোনয়ন বঞ্চিতরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসীম ধৈর্য্য নিয়ে এই ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলছেন, তাঁদেরকে ভালোমতো বোঝাচ্ছেন। তদবির নিয়ে আসা লোকদের নানা রকম উদাহরণ দিয়েও খুশি করতে হচ্ছে তাঁকে। তদবিরের অসংখ্য অনুরোধ ঘিরে রেখেছে প্রধানমন্ত্রীকে।
শুধু আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ তদবিরই নয়, দলের বাইরে থেকে জাতীয় পার্টি এবং যুক্তফ্রন্টের তদবিরেও প্রধানমন্ত্রী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে যুক্তফ্রন্টের পক্ষ থেকে বিকল্পধারার সভাপতি ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান এবং যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গণভবনে যান। জানা গেছে, আসন ভাগাভাগি বিষয়ে তদবির করতেই গণভবনে গিয়েছিলেন তাঁরা। আগামী নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের এই তিন নেতা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১৫টি পর্যন্ত আসন চেয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের জরিপ অনুযায়ী, ৫ থেকে ৭টির বেশি আসন যুক্তফ্রন্ট পায় না। তারপরও প্রধানমন্ত্রী তাঁদেরকে আপ্যায়ন করেছেন এবং এ নির্বাচনের গুরুত্ব কতটুকু তা বুঝিয়ে বিদায় করেছেন।
সে রাতেই জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের নেতৃত্বে দলটির একাধিক নেতা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁরা নূন্যতম ৪০টি আসন দাবি করেন বলে জানা গেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগে সর্বশেষ জরিপ ও বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ অনুযায়ী জাপার ৪০টি আসনে জয়লাভ করার কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পার্টির নেতাদের তদবিরও শুনেছেন এবং তাঁদেরকে সরকার গঠন ও নির্বাচনে জয়লাভের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন।
কেবল রাজনৈতিক ব্যক্তিরাই মনোনয়ন ইস্যুতে তদবির করছে তা নয়, রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন ব্যক্তিদের তদবিরও ধৈর্য্য সহকারে শুনতে হচ্ছে আওয়ামী লীগ সভাপতিকে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা তাঁদেরকে তদবির করতে উৎসাহ যোগাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের স্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন এবং স্বামীর মনোনয়নের ব্যপারে অনুরোধ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোযোগ দিয়ে সবার তদবিরই শুনছেন। সব চাপ মাথায় নিয়ে তিনি একলা প্রত্যেকের সঙ্গে শান্তভাবে কথা বলছেন এবং অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মনোনয়ন নিয়ে মন কষাকষি ও আসন ভাগাভাগি নিয়ে অসন্তোষ সামাল দিচ্ছেন। একে প্রধানমন্ত্রীর চৌকস নেতৃত্বের আরেকটি অনন্য উদাহরণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।
সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল তাকে আদেশ করেছিল দায়িত্ব গ্রহণ না করার জন্য। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদটি গ্রহণ করেন। আর তার এই পদ গ্রহণের কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। কিন্তু এই অব্যাহতি শেষ পর্যন্ত টেকেনি। এখন তাকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তারেক জিয়ার এই সিদ্ধান্তে বিএনপির আইনজীবীদের একাংশ যারা মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলীসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, তারেক জিয়ার নির্দেশেই তারা খোকনের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার তারেক জিয়াই তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। মাঝখান থেকে তারেক জিয়া তাদেরকে অসম্মান করবেন বলেও এই সিনিয়র আইনজীবী মনে করেন।
তারেক জিয়ার পরামর্শেই তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে দায়িত্ব না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়াই এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে কথা বলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে যেমন আছেন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদেও বহাল থাকছেন।
বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে মাহবুব উদ্দিন খোকন যদি নির্বাচন করে এবং জিতে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে তাহলে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীরা কী দোষ করল? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত হল বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আর এই ধারাবাহিকতায় বিএনপির বিভিন্ন পেশাজীবীদের নির্বাচনও বর্জন করছে। এর আগে বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ড্যাব চিকিৎসকদের বিএমএ নির্বাচনও বর্জন করেছিল।
প্রকৌশলীদের নির্বাচনেও বিএনপি সরে গিয়েছিল। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন বিএনপি অংশগ্রহণ করল? সেটি যেমন একটি বড় প্রশ্ন, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল যে- একই সিদ্ধান্ত একেক জনের ব্যাপারে এক রকম হবে কেন? এ নিয়ে বিএনপির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ দলের কিছু বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদেরকে বলেছেন, এই সমস্ত কীভাবে হচ্ছে আমি জানি না। আপনাদের যদি কোনও কিছু বলার থাকে আপনারা লন্ডনে যোগাযোগ করেন। এখন বিএনপিতে কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না। কেউ জানছেও না যে কাকে কখন কীভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। যার ফলে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে দলটির মধ্যে।
উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন সে রকম ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি নির্দলীয় ধরনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তারা ব্যবহার করবে না।
অনেক বিএনপি নেতা মনে করেন যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটাই সঠিক ছিল। কিন্তু কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে সেটি তার নিজস্ব ব্যাপার। এ জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা বাঞ্ছনীয় নয় বলেই বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন। আর একারণেই বিএনপির সব নেতারাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন এবং তারা এখন তিক্ত-বিরক্তও বটে।
বিএনপি রাজনীতি মির্জা ফখরুল তারেক জিয়া ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।