নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:১০ এএম, ২২ নভেম্বর, ২০১৮
বাংলাদেশের দুজন জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ একই সংসদীয় আসন থেকে নিজ নিজ দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। হেভিওয়েট এই দুই নেতার আসন একই, নোয়াখালী- ৫। দুই ডাকসাইটে প্রার্থীর কারণে ফলাফল পাওয়ার আগ পর্যন্ত নোয়াখালী-৫ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কোনো দলই জয়ের ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে পারে না।
নোয়াখালী-৫ আসনটি জাতীয় সংসদের ২৭৩ নং আসন। নোয়াখালী জেলার কবিরহাট উপজেলা এবং নোয়াখালী সদর উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়ন ও অশ্বদিয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই নির্বাচনী এলাকার ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩১ হাজার ৭৩৫ জন।
এই আসন থেকে পাঁচবার এমপি নির্বাচিত হয়েছে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। কম যান না বর্তমান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও। তিনি এই আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ’৯৬, ২০০৮, ২০১৪ সালের নির্বাচনে নোয়াখালী- ৫ আসন থেকে জয়লাভ করেন ওবায়দুল কাদের। এর মধ্যে ’৯৬ ও ২০০৮ সালে দুবার মওদুদ আহমেদকে সম্মুখ সমরে পরাজিত করেন তিনি। ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো পরষ্পরের মুখোমুখি হওয়ার পর ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদও দুবারই ওবায়দুল কাদেরকে পরাজিত করেছেন। প্রথমবার জাতীয় পার্টির টিকিটে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ১৯৯১ সালে, পরেরবার বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ২০০১ সালে তিনি ওবায়দুল কাদেরকে হারান। এর আগে ১৯৭৯, ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালেও এই আসন থেকে বিজয়ী হন মওদুদ আহমেদ। দীর্ঘদিন মন্ত্রিত্ব করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর।
শুধু অতীত রেকর্ডের কারণেই নয়, নিজ নিজ এলাকায় জনপ্রিয়তা কারণেও ওবায়দুল কাদের এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অবিসংবাদিত নেতা। নোয়াখালী- ৫ আসন থেকে তাঁরা দুজনই নিজ নিজ দলের একক প্রার্থী। এছাড়া তৃণমূল নেতারাও দুই দলের দুই হেভিওয়েট প্রার্থীকে নিয়ে দারুণ উজ্জীবিত। ওবায়দুল কাদের এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ দুজনই নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকায় পুরোদমে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রচারণার অংশ হিসেবে ওবায়দুল কাদের গত এক দশকে নিজ নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন প্রচারে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এলাকার উন্নয়ন এবং জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা স্বত্বেও নিয়মিত এলাকায় এসে সভা-সমাবেশ প্রভৃতিতে অংশগ্রহণের কারণে এলাকায় তাঁর জনসমর্থন রয়েছে। এছাড়া নোয়াখালীতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঐক্য ও সংহতি ওবায়দুল কাদেরের জন্য ইতিবাচক বলে ধরা হচ্ছে।
বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের পেছনেও স্থানীয় বিএনপি ঐক্যবদ্ধ। তাছাড়া দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় এবার মওদুদকে জেতানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে মওদুদের কর্মী-সমর্থকরা। এসব কারণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর জয়ের সম্ভাবনাও কম নয়।
শেষ পর্যন্ত এই দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর লড়াইয়ে কে জেতে তা দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত। এর আগে নোয়াখালী- ৫ আসনের বিজয়ী সম্পর্কে ভবিষ্যৎ বাণী করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।