নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২২ নভেম্বর, ২০১৮
আপাতদৃষ্টিতে মহাজোটের ঐক্য এখনো অটুট আছে বলেই মনে হচ্ছে। আসন ভাগাভাগি নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির যে সংকট সৃষ্টি হয়েছিল তা মিটে গেছে বলেও গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এরশাদ এখনো স্থির সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি যে, তিনি শেষ পর্যন্ত মহাজোটে থাকবেন নাকি আলাদাভাবে নির্বাচন করবেন।
বিএনপির যে সমস্ত নেতারা এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তারা একটা বিষয় নিশ্চিত করেছেন যে, এরশাদ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা ২০ দলীয় ঐক্যজোটে যাচ্ছেন না। তাই বিএনপি যে কৌশল নিয়েছে তা হলো, এরশাদকে আলাদাভাবে নির্বাচন করানো। তারা মনে করছে যে, এটা হলে মহাজোট ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংকের ওপর প্রভাব পড়বে এবং আওয়ামী লীগের ভোট নষ্ট হবে। অন্যদিকে লাভবান হবে ঐক্যফ্রন্ট, বিএনপি এবং ২০ দল। সেজন্য জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে ইসলামী কয়েকটি দলকে আলাদাভাবে নির্বাচন করানোর কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি। এই কৌশল বাস্তবায়ন করতে এরশাদকে অনেক লোভনীয় টোপ দেওয়া হয়েছে বলেও একাধিক বিএনপি নেতা নিশ্চিত করেছেন।
এরশাদের মূল সমস্যাটা হচ্ছে, তাঁর বিরুদ্ধে মঞ্জুর হত্যা মামলা রয়েছে। এ কারণে বরাবরই তিনি নির্বাচনে কোন পক্ষ নেবেন সেটা নিশ্চিত করার আগে দেখেছেন কাদের ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যাদের ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাদের দিকেই ঝুঁকে পড়েন এরশাদ। বিএনপি মঞ্জুর হত্যা মামলাটা ঝুলিয়ে রেখে এরশাদকে দিয়ে তাদের পক্ষে কাজ করিয়েছে। আওয়ামী লীগও এই মামলাকে এরশাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। এই মামলার কারণেই এরশাদ কখনো স্বাধীন মতামত দিতে পারেননি। এবারের নির্বাচনেও এরশাদ সজাগ ভাবে দেখছেন যে, কোন পক্ষের অবস্থান ভালো এবং কাদের দিকে জনস্রোত বেশি। যে পক্ষের অবস্থান ভালো হবে তিনি সেদিকেই ঝুঁকবেন, সেটা নিয়ে কোনো সন্দেহই নেই। এজন্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির যে দেনদরবার তিনি করছেন সেটা নিছকই কালক্ষেপণ বলে অনেকেই মনে করছেন। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন বোর্ডের সভাতেও স্পষ্টভাবে মহাজোটে যাওয়ার কথা এরশাদ বলেননি। বরং তিনি বলেছেন, ‘এবার সিদ্ধান্ত নেব আমি। এবং আমি যে সিদ্ধান্ত নেব, সেটাই সবাইকে মানতে হবে।’
বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে যেমন এরশাদের যোগাযোগ হচ্ছে তেমনি আমাদের সঙ্গেও তাঁর কথাবার্তা চলছে। আমরা আশাবাদী যে এরশাদ শেষ পর্যন্ত এমন একটি সিদ্ধান্ত নেবেন যেটা বিএনপির জন্য লাভজনক হবে এবং মহাজোটের জন্য হবে বিব্রতকর।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।