নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৯ নভেম্বর, ২০১৮
জাতীয় নির্বাচনে ক্লিন ইমেজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একথা স্পষ্ট যে, যে কোনো নির্বাচনে একটি দলের যত সংখ্যক প্রার্থী ক্লিন ইমেজের থাকে, ততোই বেশি জয়ের সম্ভাবনা থাকে দলটির। কেননা একটি ক্লিন ইমেজের প্রার্থী শুধুমাত্র তাঁর আসনটিতেই নয়, অন্যান্য আসনগুলোতেও ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। দলটিতে ভালো মানুষের মর্যাদা আছে, এটা দেখে ঐ আসনের ভোটাররা ছাড়াও অন্য আসনের ভোটাররা ঐ দলটির প্রতীকের প্রতি আকৃষ্ট হয়। সেজন্যই নির্বাচনের আগ মুহূর্তে মনোনয়ন প্রাপ্তির দৌড়ে ক্লিন ইমেজের পাশাপাশি যারা সৎ, অতীতে যাদের কোনো বদনাম-দুর্নাম নেই, জনগণের বন্ধু হিসেবে পরিচিত তারাই এগিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা একটি বড় মাপকাঠি।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমন কিছু ক্লিন ইমেজের প্রার্থী আছে যারা শুধুমাত্র তাদের নিজ নিজ আসনটিতেই নয় বরং পুরো আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
আওয়ামী লীগের ক্লিন ইমেজের উল্লেখযোগ্য প্রার্থীরা হচ্ছেন:
শেখ হাসিনা : আওয়ামী লীগের ক্লিন ইমেজের প্রার্থীদের সর্বপ্রথমেই আছেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি তিনিই। সর্বশেষ একটি জরিপে উঠে আসে, দেশের ৬৭% মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যোগ্য রাষ্ট্রনায়ক মনে করেন। এছাড়াও তিনি সঠিক পথে দেশকে পরিচালনা করছেন বলে মনে করেন তারা। সেজন্য আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ট্রাম কার্ডটি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর ইমেজের উপর ভর করেই হয়তো আওয়ামী লীগকে এবার নির্বাচনের বৈতরণী পার হতে হবে।
তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকাতে এমন কিছু প্রার্থী আছেন যারা হয়তো দলে তেমন আলোচিত নন কিন্তু তাদের ব্যক্তিগত সুনাম রয়েছে সর্বস্তরের জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক ভাবে।
সাবের হোসেন চৌধুরী : বর্তমান সময়ের আর একজন জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ হচ্ছেন সাবের হোসেন চৌধুরী। চমকপ্রদ ভাবেই রাজনীতিতে উত্থান হয় তাঁর। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে থাকার পরও বড় ধরনের কোনো দুর্নাম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও ১/১১ এর পর দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি দূরত্ব তৈরি হয়েছিল কিন্তু তারপরও তিনি ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সভাপতি ছিলেন। একজন স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ হিসেবে বহুদিনের পরিচিতি আছে তাঁর, যা আগামী নির্বাচনে রাজধানীর ভোটে বড় প্রভাব ফেলবে।
আসাদুজ্জামান নূর : আসাদুজ্জামান নূর শুধুমাত্র একজন সফল অভিনেতাই নন, পাশাপাশি তিনি একজন সফল রাজনীতিবিদও। গত ২০০১ সাল থেকে টানা ৩ বার এমপি হয়েছেন তিনি। রাজনীতিতে তাঁর কোন বদনাম তো নেইই বরং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও অনেকগুলো দৃশ্যমান কাজে বাস্তবরূপ দিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। ফলশ্রুতিতে একটি সুস্থ ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে তাঁর, যার কারণে শুধুমাত্র নিজ এলাকাতেই নন, দেশব্যাপী জনপ্রিয় তিনি। তাঁর ব্যক্তিগত ইমেজ আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।
বেগম মতিয়া চৌধুরী : বেগম মতিয়া চৌধুরীকে একজন সৎ রাজনীতিবিদের প্রতিকৃতি মনে করা হয়। যদিও নিজ এলাকাতে তেমন জনপ্রিয় নন তিনি। সেইসঙ্গে দলের মধ্যেই তাঁর প্রতি রয়েছে অসন্তোষ ও ক্ষোভ। কিন্তু তারপরও তাঁর সততা, নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের জন্য দলের বাইরে সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে তিনি অত্যন্ত শ্রদ্ধাস্পদ একজন। তাঁকে একজন সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবেই সাধারণ মানুষরা ভাবতে পছন্দ করে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জনসাধারণের কাছে তাঁর এই ইমেজ ভোটের মাঠে বড় ভূমিকা রাখবে।
মাশরাফি বিন মর্তুজা : মাশরাফি বিন মর্তুজা শুধুমাত্র বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডের অধিনায়কই নন তিনি হচ্ছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের আইকন। এদেশের মানুষরা তাঁকে যতোনা একজন ক্রিকেটার হিসেবে পছন্দ করে, তারচেয়ে অনেক বেশিই পছন্দ করে একজন নেতা হিসেবে। দল-মত নির্বিশেষে সর্বস্তরে জনপ্রিয় তিনি। এমন জনপ্রিয় একজন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপত্র নেওয়ায় দলটির জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে নির্বাচনের মাঠে। মাশরাফি ভক্তদের ভোট নৌকার বাক্সেই পড়বে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
শেখ সারহান নাসের তন্ময় : বিনয়ী, সুদর্শন, তেজদীপ্ত ও তারুণ্যের প্রতীক শেখ সারহান নাসের তন্ময় এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বড় এক চমক। বজ্রকণ্ঠের অধিকারী শেখ পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের সদস্য হিসেবে তন্ময় এরইমধ্যে সুদর্শন, হাস্যোজ্জ্বল, সুবক্তা হিসেবে অল্পদিনেই সকলেরই দৃষ্টি কাড়তে সমর্থ হয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তিনিও ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।
বাংলা ইনসাইডার/বিকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।