নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৮
নির্বাচনের সমন্বয় সাধনের জন্য একীভূত হচ্ছে ২০ দলীয় জোট এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপি নিয়ন্ত্রিত এই দুই জোটের ঐক্যের নাম দেওয়া হচ্ছে ‘সম্মিলিত ঐক্যফ্রন্ট’। আর এই ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক হচ্ছেন ড. কামাল হোসেন। তিনিই হবেন সম্মিলিত ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান। এর মাধ্যমে স্বাধীনতা বিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধীদের দল জামাতের অভিভাবক এবং নেতা হিসেবেও অভিষিক্ত হলেন ড. কামাল হোসেন। দুই জোটের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে, দুই জোট নির্বাচনী ঐক্য গড়লেও তাদের মুখপাত্র থাকবেন আলাদা। ২০ দলের প্রধান সমন্বয়ক এবং মুখপাত্র হিসেবে কাজ করবেন এলডিপির নেতা কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ। অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয়ক এবং মুখপাত্র হিসেবে কাজ করবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অবশ্য বলেছেন, ‘যেহেতু ২০ দলের অধিকাংশ দল এবং ঐক্যফ্রন্ট ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছে, তাই দুটো জোটের প্রচার নীতি এবং কৌশলে সমন্বয় আনা প্রয়োজন।’ তিনি বলেন, ‘ঐক্য না করলেও দুই জোটের মধ্যে একটা সমন্বয় অবশ্যই নির্বাচনের সময় করা হবে।’ বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, ‘দুই জোটে নির্বাচন পরিচালনার জন্য এমন ব্যক্তিদের নেওয়া হচ্ছে যারা নির্বাচন করছেন না। নির্বাচন পরিচালনার জন্যই নজরুল ইসলাম খান, আবদুল আউয়াল মিন্টু নির্বাচন করছেন না।’ ঐ নেতা বলেন, ‘যেহেতু ড. কামাল হোসেন নিজে নির্বাচন করছেন না, সেহেতু তিনি একজন অভিভাবক তুল্য রাজনীতিবিদ। কাজেই ‘সম্মিলিত ঐক্যজোটে’র নেতৃত্ব তাঁকে দেওয়াই সমীচীন বলে বিএনপি মনে করে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, ‘গতকাল ২০ দলীয় জোটের বৈঠকেও বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে দুই জোটের নির্বাচনী ঐক্যের ব্যাপারে একমত হয়েছেন ২০ দলের সব দলই।
জানা গেছে, বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এরকম নির্বাচনী প্লাটফর্মের নেতৃত্ব ড. কামাল হোসেনকে দেওয়ার প্রস্তাব করেন। এতে কি কি সুবিধা হবে সে সম্পর্কেও তিনি ২০ দলের শরিকদের অবহিত করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মির্জা ফখরুলের প্রস্তাব সবাই মেনে নিয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত জামাতের প্রতিনিধি আবদুল হালিম বলেছেন, ‘আমাদের একজন অভিভাবক থাকা দরকার। একজন মুরব্বি থাকলে ভালো।’
বিএনপির একজন নেতা বলেন,‘ আজ সকালেই বিএনপি মহাসচিব প্রস্তাবটি নিয়ে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনিও এতে আপত্তি করেননি। তবে, আগামীকাল মঙ্গলবার এ নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হবে।’ ঐক্যফ্রন্টের একজন নেতা বলেছেন ড. কামাল গণফোরামের জন্য অন্তত ১০ টি আসন ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপিকে। বিএনপি যদি এতে রাজি হয়, সেক্ষেত্রে হয়তো সম্মিলিত নির্বাচনী জোটের নেতা হতে রাজি হবেন ড. কামাল। সম্মিলিত নির্বাচনী জোটের নেতা যদি ড. কামাল হোসেন হন, তাহলে তিনি জামাতের প্রধান নেতা বা মুরব্বি হিসেবে অভিষিক্ত হবেন। ড. কামাল একাধিকবার বলেছিলেন, জামাতের সঙ্গে তিনি জোট করবেন না। অথচ এখন জামাতের ২৫ জন প্রার্থীকে জেতানোর প্রধান নেতা হলেন ড. কামাল।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।