নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৪৬ এএম, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভোটের মাঠ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগই একমাত্র দল সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যাদের ভোটের পাল্লা ভারী হয়েছে। বিগত নির্বাচনগুলোর জরিপ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের ভোটের বাক্সে ভোট পড়েছে ৩০.০৮%, ১৯৯৬ এর নির্বাচনে সে ফলাফল বেড়ে হয় ৩৭.৪৪%। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের বিপর্যয় হলেও, ভোট কিন্তু ঠিকই বেড়েছিল দলটির। তখন দলটির ভোট বেড়ে দাঁড়ায় ৪০.১৩% তে। আবার ২০০৮ সালে ভোটের পাল্লা আরও ভারী হয় আওয়ামী লীগের। ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট আরও বেড়ে ৪৮.০৪% এ গিয়ে ঠেকে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভোট পায় ৭২.১৫%। যদিও ২০১৪ এর নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে অনেকরই মতবিরোধ রয়েছে।
এদিকে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান দল বিএনপির নির্বাচনী ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে দলটি ভোট পায় ৩০.৮১%, ১৯৯৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩.৬% এ। আরার ২০০১ সালে ফলাফল আরও বেড়ে ৪০.৯৭% হয়। এই ৫ বছরে তাদের জনগণের কাছে তাদের জনপ্রিয়তা ৭% এরও বেশি পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু ২০০৮ এর নির্বাচনে ভয়াবহ বিপর্যয় হয় দলটির। কেননা, ২০০৮ এর নির্বাচনে ভোটের বাক্সে তাদের পক্ষে ভোট পড়ে ৩২.৫%। এক্ষেত্রে তাদের নির্বাচনী ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ৮% এরও বেশি মানুষ দলটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এদিকে, ২০১৪ এর নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় জনসাধারণের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু, তা জানা যায়নি।
এবার যদি আমরা জাতীয় পার্টির বিগত সময়ের নির্বাচনী ফলাফল পর্যালোচনা করি, তবে দেখতে পাই, ১৯৯১ সালে দলটির দখলে ছিল ১১.৯২% ভোট। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে এ ফলাফল বেড়ে দাঁড়ায় ১৬.৪% এ। কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচনে অস্বাভাবিকভাবে জনপ্রিয়তা হারায় দলটি। ২০০১ এর নির্বাচনে দলটি মাত্র ১.১২% ভোট পায়। যদিও ২০০৮ এ নির্বাচনী ফলাফল কিছুটা পক্ষে আসে তাদের। ১.১২% থেকে ফলাফল ৭.০৪% এ গিয়ে ঠেকে। শেষমেশ ২০১৪ এর নির্বাচনে ৭% ভোট তাদের বাক্সে পড়ে। ঐ নির্বাচন বিএনপি বর্জন করায় সংসদে তারাই হয় প্রধান বিরোধী দল।
এদিকে বিগত সময়ে জামাতের ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১৯৯১ সালে দলটি ভোট পায় ১২.১৩%। ১৯৯৬ এর নির্বাচনে এ ফলাফল কমে ৮.১৬ তে ঠেকে। ২০০১ এ আরও জনপ্রিয়তা হারায় দলটি। কেননা ২০০১ এর নির্বাচনে দলটি পায় ১৯৯৬ সালের প্রায় অর্ধেক ভোট। ঐ নির্বাচনে তারা পায় মাত্র ৪.২৮% ভোট। ২০০৮ এর নির্বাচনে দলটি ৪.৭% ভোট পায়।
উপরোক্ত ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মোট ভোটারের ৪০% থেকে প্রায় ৪৮% ভোট আছে আওয়ামী লীগের পাল্লায়। ৩৫% থেকে ৪০% ভোট আছে বিএনপির দখলে। জাতীয় পার্টি প্রায় ৫% থেকে ৭% এবং জামাতের পক্ষে আছে প্রায় ৫% ভোট। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর দখলে আছে ৭% থেকে ১০% ভোট।
সেই ’৯১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, দেশের প্রধান রাজনৈতিক দগুলোর একমাত্র আওয়ামী লীগের ভোটই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে। এমনকি দল হারলেও ভোটার বেড়েছে দলটির।
বাংলা ইনসাইডার/বিকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।