নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮
বিএনপিকে পরিবারের দখলে রাখতে তারেক জিয়া নতুন তিনজনকে স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছেন। কিন্তু দলের দলের মহাসচিব সহ সিনিয়র নেতারা তারেকের এই মনোনয়ন প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁরা বলেছেন, দলের কাউন্সিল ছাড়া একমাত্র দলের চেয়ারপারসনের এই ক্ষমতা রয়েছে। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের এই ক্ষমতা নেই। এছাড়াও বিএনপি মহাসচিব জানিয়েছেন, দলের ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান’ বলে কোনো পদও নেই।
গতকাল বিকেলে লন্ডন থেকে তারেক জিয়া স্থায়ী কমিটির নতুন তিনজনকে মনোনয়নের লিখিত মেইল পাঠান। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য পদ শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন শূন্যপদ পূরণ করা হয়নি। স্থায়ী কমিটির সদস্য বিগ্রেডিয়ার হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার, তরিকুল ইসলাম মারা গেলেও এই পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক এই কমিটি এখন কোরাম সংকটে। জানা গেছে, তারেক জিয়া তাঁর স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান, কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি এবং আবদুল আউয়াল মিন্টুকে স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেন। কিন্তু বিএনপির মহাসচিব মনে করছেন, এখনই স্থায়ী কমিটির শূন্যপদ পূরণের দরকার নেই। তাঁর মতে, দল এখন কঠিন এক সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা এখন সবচেয়ে জরুরি। মনোনয়নবঞ্চিত, নির্যাতিত অনেকেই ভবিষ্যতে সর্বোচ্চ এই কমিটির সদস্য হয়ে সান্ত্বনা খুঁজতে চান। তাই নির্বাচনের আগে এরকম মনোনয়ন দলের স্বার্থের অনুকূলে হবে না বলেই মনে করছেন বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, তারেক জিয়া মনে করছেন বিএনপিতে জিয়া পরিবার কর্তৃত্বশূন্য হয়ে পড়ছে। ১৯৯১ সালের পর এবারই প্রথম বিএনপি নির্বাচন করছে জিয়া পরিবার ছাড়া। বিএনপির একজন নেতা বলছিলেন, ‘জিয়া, বেগম জিয়া এবং তারেকের একটি অদ্ভুত মিল আছে। মিলটা হলো এরা কেউই কাউকে বিশ্বাস করতে পারে না। ঐ নেতার মতে, তারেক মনে করছে নির্বাচনের পর যদি বিএনপি মহাসচিব ‘বেইমানি’ করেন তখন কি হবে? বিএনপিতে এখন মির্জা ফখরুলের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বিশেষ করে, মনোনয়ন এবং দুই জোটকে তিনি যেভাবে সামলেছেন তাতে কর্মীরাও মুগ্ধ। বিএনপিতে এরকম আলোচনা হচ্ছে, ‘তারেক ছাড়াই ভালো চলছে বিএনপি।’ বিএনপিতে তারেক ক্রমেই বোঝা হয়ে পড়ছেন। তারেক ঘনিষ্ঠরা মনে করছেন, নির্বাচনের পর ড. কামাল, ফখরুল এবং আন্তর্জাতিক মহল মিলে জিয়া পরিবারকেই মাইনাস করতে পারে। এরকম ঘটনা ঘটলে তখন তারেক জিয়ার কিছুই করার থাকবে না। এ নিয়ে তারেক তাঁর ঘনিষ্ঠ, কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন। বিএনপির বেশ ক’জন নেতা বলেছেন, আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা ভালো না। বিএনপির যে মহাসচিবরাই ক্ষমতা পেয়েছেন তারাই ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছেন, জিয়া পরিবারের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। এখন তাই তারেক জিয়া মির্জা ফখরুলকেও বিশ্বাস করতে পারছেন না। এখন স্থায়ী কমিটির তিন সদস্য গ্রহণে ফখরুলের অস্বীকৃতি তারেকের অবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিল।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।