নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান ও কৌশল মূল্যায়নে প্রতিবেশী দেশ ভারত দু’টি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। দু’টি প্রতিবেদনের একটি হচ্ছে বিএনপি, ২০ দল ও যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী কৌশল এবং নির্বাচনের পর তাদের ভূমিকা কি হবে তা নিয়ে। প্রতিবেদনটি ভারতীয় দূতাবাস তৈরি করেছে এবং ইতিমধ্যেই তা দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গেছে। গত ৯ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ঐ দিনেই এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয় এবং তার পরদিনই ১০ ডিসেম্বর প্রতিবেদনটি দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে বলে একাধিক কূটনৈতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ঐ প্রতিবেদনে বিএনপি, ২০ দল ও যুক্তফ্রন্ট সম্পর্কে ভারত যে মন্তব্য করেছে তাতে বলা হয়েছে, নির্বাচনে জয়ী হতে বিএনপি আগ্রাসী, অনৈতিক ও অগ্রহণযোগ্য পন্থা নিয়েছে। যে কোনো ভাবেই জয়ী হওয়ার জন্য বিএনপি নৈতিক-অনৈতিক সব পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। সবচেয়ে বড় কথা দলটি চরম দক্ষিণপন্থী এবং মধ্যপন্থী দলগুলোর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এটি একটি আদর্শহীন ঐক্য বলে ভারতীয় দূতাবাসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিএনপি সব পক্ষকে খুশি করতে চাইছে, যা বাস্তবে একটি অসম্ভব ব্যাপার। নির্বাচনী প্রচারণায় তারা জনগণের উদ্দেশ্যে যেসব প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচনে জয়লাভ করতে সবকিছুই যেন বিলিয়ে দিচ্ছে তারা। কিন্তু প্রতিশ্রুতিগুলো কতটুকু বাস্তবসম্মত তা বিবেচনাতেই নিচ্ছে না দলটি।
আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট সব ঘাঁটেই পানি খাচ্ছে। তারা একাধারে যেমন ভারতের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছে পাশাপাশি আশ্বাস দিচ্ছে নির্বাচনে জয়লাভ করলে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবে তারা। একইভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে গোপন বৈঠক করছে তারা। সেইসঙ্গে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পাকিস্তানের সহযোগিতাও চাইছে দলটি। এমনকি চীনের সঙ্গে বৈঠক করে ক্ষমতায় আসলে নতুন বাণিজ্য সম্পর্ক উন্মোচনের অঙ্গীকারও করেছে দলটি। কাজেই এমন সর্বগ্রাসী অঙ্গীকার শেষপর্যন্ত কী ফল দেবে তা নিয়ে ভারতীয় দূতাবাস তাদের সংশয় প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে এটাও বলা হয়েছে, বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এখনো পর্যন্ত আস্থাশীল মিত্র হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেনি। কেননা আসন্ন নির্বাচনে দল থেকে চূড়ান্ত মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে পাকিস্তানপন্থীরা অনেক শক্তিশালী। বিশেষ করে জামাতকে ২২ টি আসন দেওয়া নিয়ে ভারতীয় দূতাবাস বিস্ময়ের পাশাপাশি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কেননা আসন্ন নির্বাচনে যদি বিএনপি জয়লাভও করে তবে তারা এখন যেসব অঙ্গীকার করছে তা কতটুকু পূরণ করতে পারবে তা নিয়ে গভীর সংশয় ও সন্দেহ রয়েছে তাদের মধ্যে। তারা মনে করছে, কোনো সুনির্দিষ্ট কর্মপন্থা কিংবা লক্ষ্য নিয়ে নয় বরং দল বাঁচাতে, দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে এবং দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনায় নির্বাচনের মূল লক্ষ্য বিএনপির। এবারের নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ যেন জিয়া পরিবারকে রক্ষার জন্যই। কাজেই এ নির্বাচনের ফলে দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন তো দূরের বিষয়, বর্তমানে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সুসম্পর্ক রয়েছে তা কতটুকু ভবিষ্যতে বজায় থাকবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ভারতীয় দূতাবাস।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাদের অঙ্গীকার করেছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হলে নির্বাচনের আগে জামাতকে কৌশলে আলাদা করে দেওয়া হবে। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায়, এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি যে দলটি লাভবান হয়েছে, তা হচ্ছে জামাত। যা বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় সম্ভব হয়েছে। বিএনপি ইতিমধ্যেই তার অঙ্গীকার রাখেনি তা পরিষ্কার। কেননা তাঁদের আকাঙ্ক্ষাই যেন এখন যে যাতে সন্তুষ্ট তা দিয়ে যে কোনো মূল্যে ক্ষমতায় আসা। কিন্তু বিএনপি এভাবে ক্ষমতায় আসলে সত্যিকারের মিত্র হিসেবে যেমন আবির্ভূত হবে না তেমনি এ অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যও নিরাপদ হবেনা দলটি তা স্পষ্ট।
বাংলা ইনসাইডার/বিকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।