নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০১ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮
নির্বাচনের মাঠে চরম অর্থ সংকটে পড়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীরা। ধানের শীষ প্রতীকে ঐক্যফ্রন্টের হয়ে যারা লড়ছেন তাদের অবস্থা খুব শোচনীয়। বিগত নির্বাচনে ঐসব প্রার্থীরা যেনতেন ভাবে নির্বাচন করলেও এবার পড়েছেন মহাবিপাকে। আর এই বিপাক হচ্ছে প্রতীক ধানের শীষ।
বিগত নির্বাচনগুলোতে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মাঠে যারা লড়েছেন তারা কোটি কোটি টাকা খরচ করেছেন। কিন্তু একই প্রতীক নিয়ে এবার যারা ঐক্যফ্রন্টের হয়ে মাঠে নেমেছেন তারা কোনভাবেই টাকা খরচ করে নির্বাচন করতে নারাজ। ঢাকার দুটি আসনে এমন চিত্র দেখা গেছে। ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী লড়ছেন ঢাকা-৬ আসন থেকে। আর এ আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিগত নির্বাচনে লড়াই করেছেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। তার প্রতিদিন নির্বাচনী খরচ ছিল প্রায় কোটি টাকার মত। কিন্তু সুব্রত চৌধুরীর সে টাকা নেই। তিনি যেখানেই যাচ্ছেন কর্মীরা বলছেন, কেন্দ্র খরচ-ক্যাম্প খরচ বাবদ টাকা দিন। কর্মীদের এমন চাহিদা শুনে এডভোকেট সুব্রত তাজ্জব!
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারাদেশে যারা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের হয়ে লড়ছেন তাদের সবার অবস্থা প্রায় একই রকম। মোটামুটি সব প্রার্থীই ভুগছেন অর্থ সংকটে। অর্থ সংকট যোগান দিতে বারবার শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তারা ব্যর্থ হচ্ছেন। গণফোরামের এক শীর্ষ নেতা জানান, কামাল স্যার টাকা-পয়সার কথা শুনলে বিব্রত হন। তাঁর সাফ কথা চা-বিস্কুট খাইয়ে নির্বাচন করা যায়-টাকা পয়সা লাগবে কেন?
এদিকে, ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীদের কোনভাবেই সহযোগিতা করছেনা বিএনপি নেতা-কর্মীরা। তাদেরও সাফ কথা নির্বাচন করার যদি এতোই খায়েশ তাহলে নিজেদের টাকা পয়সা খরচ করে নির্বাচন করুক। জানা গেছে, বেশ কিছু প্রার্থী টাকার যোগান চেয়ে ড. কামাল হোসেনকে চিঠি পাঠিয়েছেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন