ইনসাইড পলিটিক্স

গাজীপুরের ৫ আসন: নৌকা ৪, ধানের শীষ ১

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:৫৯ এএম, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮


Thumbnail

ঢাকার পার্শ্ববর্তী গাজীপুর জেলায় রয়েছে পাঁচটি আসন। এই আসনগুলোতে ঐতিহ্যগতভাবেই আওয়ামী লীগের আধিপত্য বেশি। ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনকে আওয়ামী লীগের জন্য বিপর্যয়কর হিসেবে অভিহিত করা হয়। কিন্তু ওই দুই নির্বাচনেও গাজীপুরের আসনগুলোতে ভালো করেছিল আওয়ামী লীগ। তবে এবার গাজীপুরের সবগুলো আসনেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। এই জেলার পাঁচ আসনের সামগ্রিক ঘটনা প্রবাহ এবং অতীত নির্বাচনের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বাংলা ইনসাইডার প্রেডিকশন করছে এখানে নৌকা ৪টি এবং ধানের শীষ ১টি আসন পেতে পারে।

গাজীপুর-১

গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলা এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ১ থেকে ১৮ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই আসন। এখান থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন আ ক ম মোজাম্মেল হক। অন্যদিকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী। বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে তাঁর সন্তান ইরাদ আহমেদ চৌধুরীর আপত্তিকর মন্তব্যের জের ধরে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সম্প্রতি ওই বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হয়। গাজীপুর-১ আসনের নির্বাচনী এলাকাগুলোতে তানভীর আহমেদের প্রভাব ও জনপ্রিয়তা রয়েছে। অন্যদিকে আ ক ম মোজাম্মেল হক সংসদ সদস্য হয়ে এলাকায় বদনাম কুড়িয়েছেন। দলেও তাকে নিয়ে বিভক্তি রয়েছে। একারণে বাংলা ইনসাইডারের প্রেডিকশন হলো, এবারের নির্বাচনে এই আসন থেকে ধানের শীষের তানভীর আহমেদ জয় পেতে যাচ্ছেন।

গাজীপুর-২

এই আসনটির নির্বাচনী এলাকায় রয়েছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩৫টি ওয়ার্ড এবং গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা। এই আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জাহিদ আহসান। আর বিএনপি থেকে প্রার্থী হয়েছেন সালাহউদ্দিন সরকার। জাহিদ আহসান হলেন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে। আহসান মাস্টারের প্রতি এলাকাবাসীর সম্মান এবং ভালোবাসা রয়েছে। তাছাড়া জাহিদ আহসান গত দুই মেয়াদে এই আসনের সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এলাকেই তাঁর প্রভাব রয়েছে। একারণে আমাদের প্রেডিকশন হলো ধানের শীষ এখানে হেরে যাবে এবং নৌকা জয় পাবে।

গাজীপুর-৩

এই আসনটি জেলার শ্রীপুর উপজেলা এবং গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর, ভাউয়ালগর ও পিরুজালী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এখান থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইকবাল হোসেন। অন্যদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হয়েছেন  ইকবাল সিদ্দিকী। তবে বিএনপি ইতিমধ্যেই ইকবাল সিদ্দিকীকে প্রত্যাখ্যান করেছে। একারণে বাংলা ইনসাইডার মনে করছে এই আসনটি নৌকার দখলে যাবে।

গাজীপুর-৪

গাজীপুর-৪ আসনটি কাপাসিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি তাজউদ্দীন আহমেদের এলাকা। এখান থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন শাহ রিয়াজুল হান্নান। অন্যদিকে নৌকার হয়ে লড়ছেন তাজউদ্দীন কন্যা সিমিন হোসেন রিমি। এলাকায় পারিবারিকভাবেই তাজউদ্দীন পরিবারের প্রভাব এবং জনপ্রিয়তা রয়েছে। একারণে বাংলা ইনসাইডারের প্রেডিকশন হলো, এই আসনটি এবারো নৌকার দখলেই থাকবে।

গাজীপুর-৫

এই আসনটি গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের চারটি ওয়ার্ড এবং কালীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত। এখান থেকে নৌকার প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বিএনপির ফজলুল হক মিলন। মেহের আফরোজ চুমকি এই এলাকার বর্তমান সাংসদ। দশম জাতীয় সংসদে মহিলা শিশু প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি শহীদ ময়েজউদ্দিন আহমেদের মেয়ে। এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন চুমকি। একারণে নির্বাচনী এলাকায় তাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। একারণে আমাদের প্রেডিকশন হলো, নৌকার প্রার্থীই এই আসনে জয় পেতে যাচ্ছেন।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারেক নির্দেশে ব্যারিস্টার খোকনের অব্যাহতির আদেশ প্রত্যাহার

প্রকাশ: ১২:০৬ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনককে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামালের কাছে ব্যারিস্টার খোকন ক্ষমা চাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জিয়াউর রহমান। 

২০ এপ্রিল দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতির পদ নেয়ায় ব্যারিস্টার খোকনকে বহিষ্কার করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটি।

উল্লেখ্য, ৬ ও ৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। এরপর ৯ মার্চ রাত দেড়টায় নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটির আহ্বায়ক আবুল খায়ের নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন।

নির্বাচনে সভাপতি পদে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হন। অন্যদিকে সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ সমর্থক বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ (সাদা প্যানেল) থেকে নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক।

নির্বাচনে সম্পাদক, দুই সহ-সভাপতি, দুই সহ-সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ ও সদস্য পদে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ১০ জন বিজয়ী হন। অন্যদিকে সভাপতিসহ ও তিনটি সদস্যসহ চার পদে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য (নীল) প্যানেলের প্রার্থীরা বিজয়ী হন।

ফলাফল ঘোষণার পর অ্যাডভোকেট এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনকে সভাপতির দায়িত্ব না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেয় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। ২৭ মার্চ ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে  মোহাম্মদ আলী ও মহাসচিব অ্যাডভোকেট কায়সার কামাল স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

কিন্তু ফোরামের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ৪ এপ্রিল খোকন দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে এই প্যানেল থেকে জয়ী নির্বাচিত অন্য তিন সদস্য দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। পরে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।


তারেক জিয়া   ব্যারিস্টার খোকন   অব্যাহতি   প্রত্যাহার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

প্রকাশ: ০৮:৫২ এএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে। উপজেলা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন থামছে না। আচরণবিধি অনুযায়ী মন্ত্রী-এমপিরা প্রচারসহ কোনো ধরনের নির্বাচনি কাজে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে অনেক মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তার ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আসছে নির্বাচন কমিশনে। মন্ত্রী-এমপিরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনি মাঠ রয়েছেন। নির্বাচনি প্রচারে অনেকেই সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন। প্রার্থীদের অভিযোগ-নির্বাচন কমিশনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হয় না। কমিশন তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।

নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও অবনতি, খুনোখুনি, কেন্দ্র দখলের আশঙ্কা প্রকাশ করছেন প্রার্থীরা। এ নির্বাচনের প্রচারের শুরু থেকেই বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এবার চার ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে। প্রথম ধাপের নির্বাচন ৮ মে। এ ধাপে ভোট হবে ১৪৮ উপজেলায়। আজ দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ২১ মে এ ধাপে ১৫৯ উপজেলায় ভোট। তৃতীয় ধাপে ২৯ মে ১১২ উপজেলায় ভোট। সর্বশেষ চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট হবে ৫ জুন।

অনেকের অভিযোগ, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নানা ধরনের চাপ আসছে। আজ প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে বিনা ভোটে নির্বাচিত হতে অনেকেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য হুমকিধমকি ও চাপ দিচ্ছেন।

উপজেলা নির্বাচনে কিছু জায়গায় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে এ শঙ্কার কথা জানান তাঁরা। নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাঠ প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা ইসিকে বলেছেন, দলীয় কোন্দল ও মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব বিস্তার ঠেকানোই এ নির্বাচনে বড় চ্যালেঞ্জ হবে। এ ছাড়া নির্বাচনে কোথাও কোথাও সংঘাতের আশঙ্কার কথাও বলছেন তাঁরা।

তবে এ বিষয়ে অন্যতম নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, ভোটারদের বাধাগ্রস্ত করলে সর্বোচ্চ সাত বছরের জেল হবে। এবারের নির্বাচন প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ হবে।

এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। নির্বাচনে বিরোধী দল নেই। বিকল্প বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই। আসলে এটা নির্বাচন নির্বাচন খেলা। তবে নির্বাচনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো জনগণের অনুপস্থিতি। নির্বাচন হচ্ছে প্রভাবমুক্ত হয়ে বেছে নেওয়া। কিন্তু এ নির্বাচনে প্রভাবমুক্ত হয়ে বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই। আসলে এটা নির্বাচন নয়, মূলত প্রতিযোগিতা।’ এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) ইমামুল হক সাগর বলেন, ‘জাতীয় কিংবা স্থানীয় সব নির্বাচনেই পুলিশের বিশেষ কিছু দিকনির্দেশনা থাকে। এবারও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত হয় এবং স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার জন্য যা যা প্রয়োজন সবই করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো এবং অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর যারাই নির্বাচন ঘিরে অপরাধমূলক কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

শাজাহান খানের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ : মাদারীপুরে উপজেলা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ নানা অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বিরুদ্ধে। গতকাল দুপুরে ডিসির ব্রিজ এলাকায় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী পাভেলুর রহমান শফিক খান তাঁর নির্বাচনি অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। তিনি মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। শফিক খান অভিযোগ করেন, উপজেলা নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছেলে আসিবুর রহমান খান। শাজাহান খান তাঁর ছেলেকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করছেন। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের ওপর খবরদারি করছেন। কালো টাকা বিলির মাধ্যমে ভোট কেনার চেষ্টা, নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ শফিক খানের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।
শফিক খান বলেন, নির্বাচন কমিশনে ১৫টি অভিযোগ দিলেও সে বিষয়ে কোনো প্রকার পদক্ষেপ নেয়নি কমিশন। তিনি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যকে এলাকা থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশনা এবং ইলেকটোরাল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আবেদন জানান নির্বাচন কমিশনের কাছে।

তবে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসিবুর রহমান খান। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা শাজাহান খান এলাকায় থাকলেও তিনি নির্বাচনি কাজে অংশগ্রহন করছেন না।’ শাজাহান খান নিজেও তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি কোনোভাবেই নির্বাচনি কাজে অংশগ্রহণ করিনি। সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।’

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট পৌরসভার মেয়র আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ রিটার্নিং অফিসারের কাছে : লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকারি সুবিধা ব্যবহার করে মেয়র আবদুল মালেক একজন প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন।

সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নির্বাচনি প্রচারের অভিযোগ উঠেছে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুল আনাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থী ও দলীয় প্রার্থী পরিচয় দেওয়ায় তাঁকে কারণ দর্শনোর নোটিস দিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার। ২৪ ঘণ্টার মধ্য তাঁকে নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার ও সিনিয়ার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নওয়াবুল ইসলাম বলেন, ‘সুবর্ণচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুল আনাম চৌধুরী দলীয় প্রার্থী পরিচয় দিয়ে প্রচার করতে পারেন না। তিনি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন না। এ নির্বাচনি আচরণবিধি অঙ্ঘনের অভিযোগে কারণ দর্শানো চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।’ এর আগে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাহার ইশরাক শাবাব চৌধুরী একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

সিরাজগঞ্জে সহিংসতা : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি ও কাজিপুর উপজেলায় ৮ মে ভোট। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের মধ্যে লড়াই হচ্ছে। নির্বাচন সামনে রেখে বাগ্যুদ্ধ, হামলা এবং সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে নিজ দলের কর্মীদের রক্ত ঝরানো শুরু হয়েছে। রবিবার রাতে এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী বদিউজ্জামান বদি ফকিরের কর্মীরা অন্য প্রার্থী বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামের দৌলতপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সেকান্দার মার্কেটে নির্বাচনি প্রচার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকিধমকি দেওয়া হচ্ছে।

ভোটারদের বাধাগ্রস্ত করলে সাত বছরের জেল : নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, ভোটারদের বাধাগ্রস্ত করলে সর্বোচ্চ সাত বছরের জেল হবে। এবারের নির্বাচন প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ হবে। ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন নির্বিঘ্নে। ভোটে কোনো প্রভাব বিস্তার করতে দেওয়া হবে না। গতকাল চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচনি আচরণবিধি ও মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।

উপজেলা নির্বাচনে এবারই সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকছে : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্রধারী সদস্য থাকবে। কেন্দ্রগুলোয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্যসহ ছয়জন অস্ত্রধারী সদস্য থাকবেন। এর আগে কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এত বেশি সদস্য ভোট কেন্দ্রে ছিলেন না। একই সঙ্গে প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। সভা শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, আমাদের ভোট কেন্দ্রের জন্য আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে পরিমাণ সদস্য ছিল, সেটা যথেষ্ট পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এখন প্রতিটি স্বাভাবিক কেন্দ্রে অস্ত্রসহ তিন পুলিশ, অস্ত্রসহ আনসারের পিসি ও এপিসি থাকবেন তিনজন। অর্থাৎ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্রধারী ছয়জন সদস্য থাকবেন। প্রতিটি বুথ ব্যবস্থাপনার জন্য সর্বনিম্ন ১০ জন আনসার সদস্য থাকবেন ও ছয়টির বেশি বুথ আছে এমন জায়গায় একজন করে অতিরিক্ত আনসার সদস্য থাকবেন। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোয় অস্ত্রসহ চার পুলিশ সদস্য ও আনসার থাকবেন তিনজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোট ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য থাকবেন। উপজেলা নির্বাচনে এর আগে কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এত বেশি সদস্য ভোট কেন্দ্রে ছিলেন না।

সিনিয়র সচিব বলেন, যেহেতু ভোটের দিন ব্যালট পেপার পৌঁছানো হবে। এটা পৌঁছানোর কাজে নিয়োজিত থাকবে মোবাইল ফোর্স, স্ট্রাইকিং ফোর্স। ব্যালট পেপার সেন্টারে পৌঁছানোর পর তাদের এলাকাভিত্তিক যে দায়িত্ব বণ্টন করা হবে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার ও রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে আলাপ করে তারা যেটা বলবেন, সেভাবে তারা দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। প্রতিটি উপজেলায়ও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। ভোটের আগের দিন ও পরের দিন পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রে এবারই এত বেশি অস্ত্রসহ পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য থাকছেন। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। কাজেই ভোটও বেশি পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় স্থানীয় নির্বাচন সব সময় প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়।

স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, গড়ে পাঁচটি সেন্টারের জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল ফোর্স থাকবে। আনসার, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে এ মোবাইল ফোর্স গঠন করা হবে। আর উপকূলীয় এলাকাগুলোয় বিজিবির বদলে কোস্টগার্ড বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। পার্বত্য এলাকার কিছু দুর্গম সেন্টারে হেলিকপ্টারে পোলিং কর্মকর্তা ও ভোটের উপকরণ পৌঁছানো হবে। উপজেলা নির্বাচন কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত কোনো সহিংসতার খবর নেই বলে জানিয়ে সচিব বলেন, আমাদের কাছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই। তার পরও প্রতিটি বাহিনী সতর্ক থাকবে। সব বাহিনীর প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটা সমন্বয় সেল হবে। নির্বাচনসংক্রান্ত অভিযোগ ৯৯৯-এর মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে।


উপজেলা   নির্বাচন   আচরণবিধি   লঙ্ঘন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

প্রকাশ: ০৭:৪৩ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। 

সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নোটিশ দেওয়া হয়।

নোটিশে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিককালে আপনার একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এটি সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং এতে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এর দায়ভার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই বহন করবে না।

‘এমতাবস্থায়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে মর্মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭ (৯) ধারা মোতাবেক উপযুক্ত ও যথার্থ যুক্তিযুক্ত কারণসহ আগামী ১৫ মে’র মধ্যে লিখিত জবাব প্রদানের নির্দেশ দেয়া হলো।’

এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রিয়াজকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সে সময় তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি এবং একটি স্কুলের তহবিল তসরুপের অভিযোগ ওঠে।

রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের (নারী শিক্ষা মন্দির) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের বিরুদ্ধে।

এবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য এবং একটি ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলরের অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে পড়লে টাকার বিনিময়ে তাকে বাঁচানো সংক্রান্ত রিয়াজের একটি বক্তব্যের অডিও প্রকাশ হয়।

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ   মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

স্থানীয় নির্বাচনে বিরোধী দলগুলোর অংশ নেওয়া উচিত ছিল: নুর

প্রকাশ: ০৬:৪৪ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলাসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সরকারবিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নাগরিক সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন নুর। স্থানীয় টাউন ক্লাব মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভিপি নুর বলেন, উপজেলা নির্বাচন উপহাসে পরিণত হয়েছে। যদিও আমি মনে করি বিরোধী দলগুলোর সম্মিলিতভাবে উপজেলাসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল। নির্বাচন বর্জন করায় বিনাযুদ্ধে রাজ্য দখল করে নিচ্ছে তারা।

নুর আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন মুহূর্তের মধ্যে হবে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে রক্ষার জন্য তরুণ-যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। এতদিন অনেক রথি-মহরথিরা জোট গঠন করেছেন, ফ্রন্ট গঠন করে জাতির সর্বনাশ করেছেন। তারা দেশ ও জনগণের মুক্তি এনে দিতে পারেননি।

গণঅধিকার পরিষদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখার আহ্বায়ক আলমগীর কবীর শিফতির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি আল আমীনসহ অন্যরা। 

উপজেলা নির্বাচন   নুরুল হক নুর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারেকের পাঁচ ‘না’

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপিতে তারেক জিয়ার নাম হয়েছে ‘মি. না’। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এখন সব কিছুতেই ‘না’ বলছেন। কোন আলোচনা ‘না’ কোন সমঝোতা ‘না’। নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তাও ‘না’। তার কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের বিষয়েও তিনি ‘না’ সূচক বক্তব্য দিচ্ছেন। আর এই ‘না’ এর অত্যাচারে বিএনপি এখন অতিষ্ঠ। 

বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা বলছেন, সাম্প্রতিক সময় একাধিক স্পর্শকাতর বিষয়ে তারেক জিয়ার মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। আর তারেক জিয়ার এই নেতিবাচক মনোভাবের কারণেই বিএনপি এখন আরও স্থবির হয়ে পড়েছে। 

যে সমস্ত বিষয়ে তারেক জিয়া সাম্প্রতিক সময়ে ‘না’ বলেছেন, তার মধ্যে রয়েছে;

১. নেতৃত্ব ছাড়া: গত কিছুদিন ধরে তারেক জিয়ার নেতৃত্ব ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছিল বিভিন্ন মহলে। যেহেতু তিনি লন্ডনে থাকেন সেজন্য নির্বাহী দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে তিনি যদি কোন আলঙ্কারিক দায়িত্ব যেমন প্রধান পৃষ্ঠপোষক বা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে দলে যারা নেতৃত্বে থাকবেন তারা দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই বিবেচনা থেকে আন্তর্জাতিক মহল এবং দেশেও তারেকের নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ছিল। কিন্তু তারেক জিয়া এটিকে নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, কোন অবস্থাতেই তিনি নেতৃত্ব ছাড়বেন না। অর্থাৎ আপাতত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। 

২. ফখরুলের পরিবর্তনে ‘না’: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার এবং তার স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। তার স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত। তিনি নানা রোগে আক্রান্ত। এর জন্য তিনি বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলে মহাসচিবের পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য মনস্থির করেছিলাম। কিন্তু তারেক জিয়া তাকেও ‘না’ করে দিয়েছেন। তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন করা যাবে না। 

৩. কাউন্সিল ‘না’: বিএনপির অনেকে দলকে চাঙ্গা করার জন্য, সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য দ্রুত একটি কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠানের জন্য তাগাদ দিচ্ছিলেন। বিশেষ করে তৃণমূল থেকে বলা হচ্ছিল যে, অনেক নেতাই এখন অসুস্থ, অনেক পদ শূন্য। এই কারণে দলের নতুন নেতৃত্বের সামনে আনা দরকার, আনা দরকার দলের গতিশীলতা। আর এ কারণেই দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠান করা জরুরি। কিন্তু তারেক জিয়া আপাতত কাউন্সিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। 

৪. স্থায়ী কমিটির শূন্যপদ পূরণ: বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে পাঁচটি শূন্যপদ রয়েছে। স্থায়ী কমিটি এমনিতেই কার্যকর, যারা অকার্যকর, যারা স্থায়ী কমিটিতে আছেন তাদের অনেকে অসুস্থ, বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছেন। সে কারণে স্থায়ী কমিটির পুনর্গঠন ছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের সময়ের দাবি। কিন্তু আপাতত স্থায়ী কমিটির শূণ্যপদ পূরণ করার ব্যাপারে তারেক জিয়ার আগ্রহ নেই। কারণ তিনি ব্যাখ্যা করেননি বটে, তবে আপাতত বিএনপির স্থায়ী কমিটির শুন্যপদ গুলো পূরণ হচ্ছে না।

৫. জোটে ‘না’: বিএনপি চেয়েছিল ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে। বিশেষ করে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করতে। আর এ কারণে বিএনপি অনেক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছিল, তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে তারা একটি অভিন্ন বা যৌথ কর্মসূচি ঘোষণার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু নির্বাচনের আগে সে জোট হয়নি। এখন আবার বিএনপি শরিক রাজনৈতিক দলগুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এটি তারেক জিয়ার নির্দেশে করা হচ্ছে। তারেক জিয়া অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিশ্বাস করতে পারছেন না। আর এ কারণে তিনি জোটগত ভাবে আন্দোলনের ব্যাপারেও ‘না’ সূচক বার্তা দিয়েছেন। 

আর এ সব ‘না’ এর কারণে বিএনপি এখন নেতিয়ে পড়েছে।


তারেক জিয়া   বিএনপি   আন্দোলন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন