নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮
নির্বাচনের রাজনীতিতে হঠাৎই আলোচনায় রাষ্ট্রপতি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আগামী ১৭ ডিসেম্বর রাষ্টপ্রতির সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি যেহেতু রাষ্ট্রের অভিভাবক তাই আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাঁর কাছে নালিশ করবো।’ কিন্তু বর্তমান সংবিধানে রাষ্ট্রপতির আদৌ কোনো ক্ষমতা আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রধান, তাঁর অন্তর্নিহিত অনেক ক্ষমতা রয়েছে।’
ঐক্যফ্রন্টের সূত্রে জানা গেছে, তাঁরা রাষ্ট্রপতির কাছে ৫টি বিষয়ে হস্তক্ষেপ চাইবেন। এগুলো হলো-
১. নির্বাচনী প্রচারণায় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর ক্ষমতাসীন দলের আক্রমণ এবং প্রচারণায় বাধা দেওয়ার ব্যাপারে তারা রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চাইবেন।
২. বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার বন্ধে ঐক্যফ্রন্ট রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা চাইবে।
৩. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিতর্কিত এবং পক্ষপাতে দুষ্ট কর্মকর্তাদের নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাবেন।
৪. স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ২৪ ডিসেম্বর থেকে যে সেনাবাহিনী নামবে তাদের যেন বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হয় সে ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।
৫. নির্বাচন কমিশন যেন নির্বাচনে পক্ষপাতপূর্ণ আচরণ না করে সেজন্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা চাইবে।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান যখন সংবিধানে ছিল, তখন নির্বাচনের সময়ে রাষ্ট্রপতির অনেকগুলো ক্ষমতা ছিল। কিন্তু বর্তমান সংবিধানে নির্বাচনের সময়ে রাষ্ট্রপতির আলাদা কোনো ভূমিকা নেই। রাষ্ট্রপতিকে পৃথক কোনো ক্ষমতাও দেওয়া হয়নি। কিন্তু ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে একদল আইনজীবী মনে করছেন, ‘রাষ্ট্রপতি’ রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে অনেকগুলো ক্ষমতা আপনাআপনিই অর্জন করেন। ড. কামাল হোসেনের ঘনিষ্ঠ একজন আইনজীবী সংবিধানের ৪৮(২) অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করে বলেছেন, এখানেই রাষ্ট্রপতিকে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যেটা ‘ক্রান্তিকালে’ তিনি প্রয়োগ করতে পারেন। ঐ আইনজীবী বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উদ্বেগের যে পাঁচটি বিষয় সেগুলো ৪৮(৫) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মন্ত্রীসভার বিবেচনার জন্য পেশ করতে পারেন।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একজন নেতা বলেছেন, ‘এখন যেহেতু সংসদ অধিবেশন নেই, কাজেই সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে যেকোনো অধ্যাদেশ জারি করতে পারেন। ঐ নেতা এটাও বলেছেন যে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনকে যেকোনো নির্দেশনা এবং পরামর্শ দিতে পারেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, হঠাৎ করে নির্বাচনের ডামাডোলে রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়ার অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের। রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ দিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট দেখাতে চায় সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সব চেষ্টাই তারা করেছে। এমনকি রাষ্ট্রপতির কাছে পর্যন্ত গিয়েছে। রাষ্ট্রপতি যদি কোনো মন্তব্যও করেন, সেটাও ঐক্যফ্রন্টের জন্য হবে বাড়তি পাওয়া। তবে আওয়ামী লীগ মনে করছে, বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য যা করা দরকার তার সবই করছে। রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়াও তার এক অংশ।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।