নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮
আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উভয়ের সঙ্গেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাবেক একনায়ক হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ। বর্তমানে চিকিৎসার অজুহাতে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন এরশাদ। সেখান থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতির খবর রাখছেন। আওয়ামী লীগ পন্থীদের বলছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে নির্বাচনের প্রচারণা করতে আবার বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট পন্থীদের বলছেন, গোপনে বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য। পরিস্থিতি বুঝে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। নির্বাচন পর্যন্ত এভাবেই দুই নৌকায় পা রেখে চলতে চান এরশাদ। জাতীয় পার্টির ঘনিষ্ঠ সূত্র গুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এরশাদের নির্দেশেই জাতীয় পার্টি প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ এবং মহাজোটের সঙ্গে থাকার ঘোষণা দিচ্ছে আর গোপনে তারা বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করছে।
জানা গেছে, এরশাদ নতুন মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা এবং ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এদের একজন বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন,‘এরশাদ সাহেব আমাদের বলেছেন, মহাজোটে থাকতে, প্রধানমন্ত্রী যা বলে তা শুনতে। মহাজোটের আসন গুলোতে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করতে।’ আবার এরশাদ তাঁর ছোট ভাই জাতীয় পার্টির কো-চেয়ার জি এম কাদেরকে বলেছেন, ‘বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে।’ যে ১৩২টি আসনে জাতীয় পার্টি আলাদাভাবে প্রার্থী দিয়েছে। সেই আসনগুলোর ক’টিতে বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করা যায় তা দেখতেও এরশাদ জি এম কাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জাতীয় পার্টির নিজস্ব ১৩২টি আসনের অন্তত ৩৮টি তারা বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জন্য ছেড়ে দিয়েছে। এই আসনগুলোতে লাঙ্গলের প্রার্থী থাকলেও, তারা ঐক্যজোটের প্রার্থীদেরই সমর্থন দেবে বলে জানা গেছে। বিএনপির সঙ্গে জাতীয় পার্টির এ রকম সমঝোতার খবর পাওয়া গেছে। এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের কোনো ঐক্য নেই এবং নির্বাচনের আগে এরকম কোন ঐক্যের সম্ভাবনাও নেই।’ কিন্তু বিভিন্ন আসনে জাপার প্রার্থীরা যে বিএনপির জন্য নিজেরা ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে, এটা কি জানতে চাওয়া হলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এরকম তথ্য আমার কাছে নেই।’ তবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাঠে গিয়ে হয়তো জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা দেখছেন, ধানের শীষের পক্ষে জোয়ার, এজন্য তারা বিএনপির প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন।’
জাতীয় পার্টির ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, জাতীয় পার্টি কৌশলগত কারণে এবার দ্বৈত ভূমিকা নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে ভালো করে তাহলেও যেন এরশাদের কোন সমস্যা না হয়। সে কারণেই এরশাদ এই অবস্থান নিয়েছেন। দেশে থাকলে তিনি সংবাদকর্মীদের সামনে উল্টাপাল্টা অনেক কথা বলে ফেলবেন এজন্যই তিনি সিঙ্গাপুরে নিরাপদ অবস্থানে রয়েছেন। এরশাদের একজন ঘনিষ্ট জাপা নেতা বলেছেন, ‘এরশাদের ভয় মঞ্জুর হত্যা মামলা নিয়ে। এই মামলা দিয়েই যারাই ক্ষমতায় থাকে তারাই এরশাদকে ভয় দেখায়। এ জন্য নির্বাচন এলেই এরশাদ অস্থির হয়ে যান। একের পর এক সিদ্ধান্ত পাল্টাতে থাকেন।’
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।