নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮
চ্যানেল আইয়ের পরিচালক শাইখ সিরাজকে ধন্যবাদ জানালেন তারেক জিয়া। আর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বললেন, আপনার ঋণ কোন দিন শোধ করতে পারবো না। নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের দুটি ভিডিও বার্তা সাড়া ফেলেছে। এই ভিডিও বার্তা দুটির মধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবারের নির্বাচনকে ৭১`র মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছেন। বলেছেন, আমরা যখন ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তখন কেউ কেউ আমাদের বলেছিল পাঞ্জাবীদের সঙ্গে আমরা কোনক্রমে পারবো না।
প্রায় হুবহু একটা কথা শাইখ সিরাজ তার হৃদয়ে মাটি ও মানুষ` অনুষ্ঠানের ২০১৭`র ‘কৃষকের ঈদ’ পর্বে বলেছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পুরো পাণ্ডুলিপি তৈরি করে দেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক বার্তা এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত শাইখ সিরাজ। মির্জা ফখরুলের এই ভিডিও বার্তায় দুটি বিষয়ে শাইখ সিরাজের অনুষ্ঠানের পাণ্ডুলিপি থেকে নেয়া হয়েছে। হৃদয়ে মাটি ও মানুষে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের কৃষি জ্ঞান হাতে কলমে দেওয়ার জন্য কয়েকটি পর্ব করেছিলেন। এই পর্বগুলোতে শাইখ সিরাজ বলেছিলেন, আমাদের বড়রা অনেক কিছুই বলেছিলেন। বলেছিলেন এসব পারবো না। কিন্তু আমরা কারো কথা শুনিনি। আমরা শুধু আমাদের মনের কথা শুনেছিলাম। শাইখ সিরাজের এ বক্তব্যটি এখানে একটু অদলবদল করে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, মির্জা ফখরুল প্রথমে তার ভিডিও বার্তায় সব শব্দচয়ন বাংলায় করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শাইখ সিরাজই এটাকে সাবলীল করার জন্য ইংরেজি শব্দচয়ন রাখেন। জানা গেছে, খসড়া পাণ্ডুলিপি চূড়ান্ত হবার পর দুইদিন এর রিহার্সেল হয়। দুটি রিহার্সালেই শাইখ সিরাজ ছিলেন।
অন্যদিকে ড. কামাল হোসেনের ভিডিও বার্তাটি চূড়ান্ত হওয়ার পর শাইখ সিরাজের পরামর্শেই ড. কামাল হোসেনের হেঁটে আসা যুক্ত করা হয়। শাইখ সিরাজ, তারেক জিয়া এবং হাওয়া ভবন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবেই পরিচিত। বিএনপি ৯১ সালে ক্ষমতায় এলে তাকে অন্যায্যভাবে ২১ পদক দেওয়া হয়। যদিও যে ক্যাটাগরিতে তাকে ২১ পদক দেওয়া হয়েছিল, তেমন ক্যাটাগরি ২১ পদক তালিকাতে ছিল না। বর্তমান সরকার গত বছর বিতর্কিত এই ব্যক্তিকে স্বাধীনতা পদক প্রদান করে। যদিও প্রথমে তাঁর নাম কমিটি সুপারিশ করলেও পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী তা অনুমোদন দেননি। পরে রহস্যময়ভাবে তাকে এবং সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে আলাদাভাবে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়। পদক পেয়ে শাইখ সিরাজের ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্য সমালোচনার ঝড় তুলেছিল।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন