নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮
নির্বাচনের তারিখ যতোই এগিয়ে আসছে ততোই বিএনপির নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সম্ভাবনা স্পষ্ট হচ্ছে। বিএনপি মহাসিচব আজ উত্তরাঞ্চলে নির্বাচনী সফরে যাওয়ার আগে বলেছেন, ‘বিএনপির নির্বাচনে থাকা না থাকা নির্ভর করছে ইসির উপর।’ তিনি অভিযোগ করেন ইসি এখনো নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। এই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরই ক’দিন আগেও বলছিলেন যে, ‘বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন থেকে সরে যাবেনা। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, বিএনপির নির্বাচন বর্জন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। মোটামুটি ৫টি কারণ দেখিয়ে বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছে বলে বিএনপির একাধিক সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে। এসব কারণগুলো হলো-
১.নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাত পূর্ণ আচরণ: জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপির অভিযোগ নির্বাচন কমিশন পক্ষপাত মূলক আচরণ করছে। গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা তাদের চূড়ান্ত অনাস্থা জানিয়ে এসেছে। অথচ ঐ বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বার বার সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ উত্থাপন করতে বললেও, তা ঐক্যফ্রন্টের নেতারা করেননি। একাধিক সূত্র বলছে, এই বৈঠকটিকেই তাঁরা নির্বাচন বর্জনের পটভুমি হিসেবে দেখাতে চাইছে।
২. আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা: জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপি শুরু থেকেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উপর ক্ষুদ্ধ। তাঁরা বলছে, পুলিশ আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করছে। কিন্তু এব্যাপারে পুলিশ এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বক্তব্য স্পষ্ট। পুলিশ বলছে, শান্তি শৃঙ্খলা বিগ্ন হতে পারে এমন কিছুই তাঁরা বরদাস্ত করছে না। পুলিশের কাছে এমন তথ্য আছে যে, বিএনপি পরিকল্পিত ভাবে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে।
৩. সেনা মোতায়েনে হতাশা: বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেছিলেন যে, সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হলে পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। সেনা মোতায়নের পর বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে অভিনন্দনও জানিয়েছিল। কিন্তু সেনাবাহিনী বিএনপির জন্য কোন সুখবর আনতে পারেনি।
৪. নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে জনউচ্ছাস হয়নি: নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বলা হয়েছিল যে, বিএনপি শুধু নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিলেই তাদের পক্ষে গণজোয়ার তৈরী হবে। জনগন বিএনপিকে ভোট দেওয়ার জন্য পাগল হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছুই ঘটেনি। বরং জনগন আওয়ামী লীগকেই আরেকবার মেনে নেওয়ার পক্ষে। তাই ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততোই বিএনপির হতাশা বাড়ছে।
৫. তারেকের অনীহা: বিএনপির নির্বাচন বর্জনের মূল কারিগর তারেক জিয়া। তারেক জিয়া জানেন এই নির্বাচন থেকে তার এবং তার মায়ের কোন লাভ হবে না। বরং এই নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ ফলাফল চিরতরে তাদের মাইনাস করে দিতে পারে। এজন্য নির্বাচন বর্জন করে এক সহিংস রাজনীতির সূচনায় উঠেপড়ে লেগেছে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া।
এই ৫ কারণে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করবে। তবে কখন তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিবে তা এখনো চুড়ান্ত নয়। একটি সূত্র দাবী করছে, ২৭ ডিসেম্বর জনসভা থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এই ঘোষণা দিতে পারে। অন্য একটি সূত্র বলছে, ঘোষণা আসবে ভোটের দিন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।