নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮
কর্মীদের জাগাতে পারছেন না বিএনপি নেতারা। নেতারা জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়ে বলছেন, কর্মীদের সকাল থেকে একসঙ্গে ভোটকেন্দ্রে যেতে। নেতার বলছেন ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে। কিন্তু ভোটের সময় যতই এগিয়ে আসছে, ততোই কর্মীরা গর্তে ঢুকে যাচ্ছে। বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কর্মীরা বলছেন, নেতারা তাঁদের আগুনে ঝাঁপ দিতে বলছেন, কিন্তু রক্ষার পথ বাতলে দিতে পারছেন না। এভাবে লক্ষ্যহীনভাবে তাঁরা আর আত্মঘাতী হতে রাজী না।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা গালভরা বক্তৃতা দিয়েছেন। বলেছেন, ক’দিন পরেই সব বদলে যাবে। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ডঃ কামাল হোসেন বলেছিলেন, ‘মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরেই প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন নিরপেক্ষ হয়ে যাবে।’ ড. কামালের আশ্বাসে কর্মীরা মাঠে নেমে বেকুব বনে গেছে। কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন কেউবা আহত হয়েছেন। এরপর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, সেনা মোতায়েন হলেই পরিস্থিতি অন্যরকম হয়ে যাবে। তাঁর ভাষায়, ‘আওয়ামী লীগ ভয়ে পালাবে।’ কিন্তু সেটাও হয়নি। সেনা মোতায়নের পর পরিস্থিতি বিএনপি কর্মীদের জন্য আরও খারাপ হয়েছে।
এখন বলা হচ্ছে, একটা দিন বিএনপির এবং ঐক্যফ্রন্টের হবে। সেই দিনটা হলো ৩০ ডিসেম্বর। বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্টের নেতারা কর্মীদের সকাল থেকে দল বেঁধে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কেন্দ্র পাহারা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু কর্মীরা এখন আর নেতাদের কথায় আস্থা রাখতে পারছেন না। বিএনপির অধিকাংশ কর্মীই মনে করছে, নির্বাচনে যে জোয়ার বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তুলতে চেয়েছিল, তা তুলতে পারেনি। বরং তারুণ্যকে জয় করে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে নিজেদের ফেভারিট করতে পেরেছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এরকম একটা ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে, আওয়ামী লীগই আবার ক্ষমতায় আসছে। এজন্য তাঁরা আওয়ামী লীগের ত্রুটি বিচ্যুতিগুলোর চেয়ে ধারাবাহিকতাকে প্রাধান্য দিয়েছে। ভোটের লড়াই তাই সাধারণ মানুষের উন্নয়ন, শান্তি এবং আলোকিত আগামীর বিপরীতে বিএনপির ক্লিশে আবেদনহীন আর্তনাদের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।
বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য সাধারণ মানুষ কেন ভোট দেবে? এ প্রশ্নের উত্তর সম্ভবত বিএনপির কাছেও নেই। শেখ হাসিনার বিকল্প কে? এমন প্রশ্নের উত্তরেও বিএনপি নীরব। এমনকি বিএনপি কর্মীদেরও প্রশ্ন, এই নেতারা দশ মাসে বেগম জিয়াকে জেল থেকে মুক্ত করতে পারেনি; তারা ‘জনগণকে মুক্ত’ করবে কিভাবে। সাধারণ মানুষ মনে করছে, নতুন অশান্তির দরকার কী, যেভাবে যাচ্ছি সেভাবেই চলুক। বিএনপিপন্থী একজন বুদ্ধিজীবী বলছিলেন, ‘গণজোয়ার সৃষ্টি করতে ক্যারিশম্যাটিক নেতা লাগে। বেগম জিয়াকে জেলে পুরে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে নেতৃত্বশুন্য করেছে। ফলে জনগণকে বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্ট উদ্বেলিত করতে পারেনি।’ আর এ কারণেই ভোটের আগেই আওয়ামী লীগের কাছে হারলো বিএনপি। ভোটটা হয়ে গেল স্রেফ একটা আনুষ্ঠানিকতা।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।