নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮
কাল জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন কেবল আগামী ৫ বছর কারা দেশ পরিচালনা করবে সেটাই নির্ধারিত হবে না, এই নির্বাচনে বিএনপির রাজনীতির ভবিষ্যতও চূড়ান্ত হবে। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে বিভক্ত, ক্ষত-বিক্ষত এক রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে। নির্বাচনের ফলাফলের উপর নির্ভর করছে বিএনপির রাজনীতির ভবিষ্যৎ। কেমন হতে পারে বিএনপির রাজনীতির ভবিষ্যৎ পথরেখা?
যেটা বিএনপির নেতারাও এখন শুধু মুখে বলেন, কিন্তু বাস্তবে তারা বিশ্বাস করেন না। যেটা হলো ‘ভোট বিপ্লব’। বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বলছে এই নির্বাচনে জনগণের নীরব ভোট বিপ্লব হবে। ভোটের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে অপসারণ করবে। সেরকম কিছু ঘটলে তা বিএনপির রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ‘বিপ্লব’। এটা হবে বিএনপির জন্য এক ঐতিহাসিক পুনঃজন্ম।
নির্বাচন থেকে শেষ পর্যন্ত সরেও যেতে পারে বিএনপি। যেমন ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন থেকে তিন বছর আগে সরে গিয়েছিল বিএনপি। এভাবে যদি বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়। তাহলে দলটি সম্ভবত তার রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মধ্যে পরবে। ২০১৪’র নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি যে সংকটে পরেছিল, এবার যদি দলটি শেষ মুহূর্তে বা ভোটের দিন নির্বাচন থেকে সরে যায়, তাহলে তার চেয়েও বড় সংকটে পরবে। এরকম সিদ্ধান্ত তাদের জন্য আত্মঘাতি হবে। এর ফলে দলটি ভাঙ্গনের মুখেও পরতে পারে।
শেষ পর্যন্ত ভোটে থাকলে ভোট বিপ্লব না হলেও, নির্বাচনে বিএনপি সম্মানজনক আসন পাবে। বিএনপি দেশের অন্যতম বৃহৎএকটি রাজনৈতিক দল। তার নিজস্ব ভোট ব্যাংক আছে, আছে জনসমর্থনও। এই নির্বাচনে হেরে বিরোধী দলে বসলেও বিএনপি তার সাংগঠনিক পুন:বিন্যাসের সুযোগ পাবে। নতুন রাজনীতি , নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে আগামী ৫ বছর দলটি গণতান্ত্রিক রীতি নীতিতে গুছিয়ে ওটার সুযোগ পাবে। আবার এরকম পরাজয়ের ফলে বিএনপিতে ঘটতে পারে নতুন মেরুকরণ। সেই মেরুকরণে বিএনপির ভাঙ্গনও অস্বাভাবিক নয়।
তবে যেটাই হোক না কেন, এই নির্বাচন বিএনপিকে নতুন রূপ দেবে। নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি দাড় করাবে। সবচেয়ে বড় কথা, এই নির্বাচনের যে ফলাফল হোক না কেন? এই নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপিকে পরিবর্তিত হতেই হবে। তাকে জামাতসহ যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। তাকে বাস্তবতা এবং আত্মউপলব্ধি করতে হবে। বিএনপি দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর একটি। তাই এই নির্বাচনে দলটি নিজেকে সুষ্ঠভাবে গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি করবে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন।
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।