নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ০৯ জানুয়ারী, ২০১৯
টানা তৃতীয়বারের মত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন শেখ হাসিনা। নিজের দলে তাঁর কর্তৃত্ব নিরুঙ্কুশ এবং প্রশ্নাতীত। জাতীয় সংসদে তাঁর দলের একচ্ছত্র আধিপত্য। কিন্তু তারপরেও আগামী পাঁচ বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পথ চলা কুসুমাস্তীর্ন নয়। ভয়ংকর শত্রুরা এখনও তৎপর। রাজনৈতিক ভাবে তাকে মোকাবেলা করতে না পেরে, অন্যপথে খুঁজতে পারে এই শত্রুরা। এরা প্রত্যেকেই বিত্তবান, জাতীয় আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। উন্নয়ননের সংগ্রামের পাশাপাশি, এইসব শত্রুদেরও মোকাবেলা করতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। কারা এরা? আসুন দেখি-
১. তারেক জিয়া: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। রাজনীতির লড়াইয়ে শেখ হাসিনা বেগম জিয়াকে ভালো ভাবেই পরাজিত করেছেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক জিয়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতিপক্ষ নয়, শত্রু। কারণ তারেক জিয়া শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে চায় না। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা তার প্রমান। তারেক জিয়া রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়নের এক প্রতিশব্দ। ‘যেকোন মূল্যে’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উৎখাত তার প্রকাশ্য লক্ষ্য। তারেক জিয়ার সংগে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী চক্রের যোগাযোগ রয়েছে। আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দণ্ডিত তারেককে দেশে ফিরিয়ে আইনের আওতায় আনার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। আগামী পাঁচ বছর এই শক্রকে মোকাবেলা করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর।
২. যুদ্ধাপরাধীদের সন্তান: যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদের দণ্ড কার্যকর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে তিনি মুক্তিযুদ্ধের রক্তের ঋণ শোধ করেছেন। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানরা দীর্ঘদিন ফুলে ফেপে উঠেছে। এরা অনেকেই বিদেশে বসে বাংলাদেশ এবং সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এদের প্রধান টার্গেট শেখ হাসিনা। এরাও শেষ হাসিনাকে হঠাতে সব কিছুই করতে প্রস্তুত। এই শত্রুদের ব্যাপারেও শেখ হাসিনাকে সতর্ক থাকতে হবে আগামী পাঁচ বছর।
৩. ড. মুহম্মদ ইউনূস: শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বৈরথ এক যুগের। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনার প্রতিবাদ পুরো বাংলাদেশ জানালেও ড. ইউনূস ন্যূনতম সমবেদনা জানাননি। ড. ইউনূস ছিলেন ওয়ান ইলেভেনের পরিকল্পক এবং মাইনাস ফর্মুলার উদ্যোক্তা। তাঁর ব্যক্তিগত তৎপরতার কারণেই পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ হয়েছিল। এখন তিনি সুযোগ পেলে বিশ্বের নানা প্রান্তে শেখ হাসিনার সমালোচনায় মুখর হন। সামনের দিনগুলোতে ড. ইউনূসের তৎপরতা বাড়বে বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
৪. ৭৫ এর খুনীরা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার হত্যার বিচার করেছেন। এটা তাঁর বিরাট বড় কৃতিত্ব। কিন্তু বিচারের রায়ে দোষীদের সবার দণ্ড এখনও কার্যকর করতে পারেননি। খুনী রশীদ, খুনী ডালিমসহ বেশ ক’জন খুনী এখনও বিদেশে পলাতক। এদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় সাফল্য নেই। এরা শেখ হাসিনার ভয়ংকর শত্রু। এদের কাজ একটাই শেখ হাসিনাকে ছোবল মারা।
শেখ হাসিনার এই ভয়ংকর ৪ শত্রুর বাইরেও শত্রু আছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা সারাক্ষনই শেখ হাসিনার ক্ষতি চান, ২১ আগষ্টের দণ্ডিত পলাতকরা। জঙ্গী এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীতো তার চিরকালের শত্রু। দলের মধ্যেও যারা সংস্কারপন্থী ছিলেন, তারা শেখ হাসিনার মঙ্গল চান একথা কি কেউ হলফ করে বলতে পারবে। ভয়ংকর শত্রুদের সঙ্গে এরা যে কেউ যেকোন সময়েই ‘সহযোগী’ হতে পারে। বিপুল জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর লক্ষ্য অর্জন করতে হবে এই শত্রুদের মোকাবেলা করেই। এখন তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই, আছে ভয়ংকর শত্রু।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।